ইউরোপের দেশ চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগের চার্লস বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে ভয়াবহ বন্দুক হামলায় অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় আহত হয় অন্তত ২৫ জন।
কয়েক দশকের মধ্যে ঘটা সবচেয়ে ভয়াবহ এই বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটায় ২৪ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিজের বাবাসহ ১৪ জনকে গুলি করে হত্যা করে সে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ওই ১৪ জনকে হত্যার পর নিজেও আত্মহত্যা করেছেন বন্দুকধারী।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) রাতে এই ঘটনা ঘটে বলে বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
পুলিশ প্রধান মার্টিন ভন্ড্রাসেক গুলি চালানো এবং হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের বলেন, ভয়ঙ্কর এই সহিংস হামলায় ১৪ জন নিহত এবং ২৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা গুরুতর। নিহতদের সবাইকে ভবনের ভেতরেই হত্যা করা হয়েছে। বন্দুকধারীর কয়েকজন সহযোগী ছাত্র ছিল বলেও জানান তিনি।
ভন্ড্রাসেক আরও বলেন, বন্দুকধারী সম্পর্কে পুলিশের কাছে আগাম কোন তথ্য ছিল না। তার কাছে ‘অস্ত্র ও গোলাবারুদের বিশাল ভান্ডার’ ছিল এবং দ্রুত পুলিশি পদক্ষেপ আরও গুরুতর হত্যাকান্ড প্রতিরোধ করে।
সরকার এই ঘটনায় ২৩ ডিসেম্বরকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করেছেন। এদিন সকল সরকারি ভবনে পতাকা অর্ধনমিত রেখে জনগণকে দুপুরে এক মিনিট নীরবতা পালন করতে বলা হয়।
নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের তালিকা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হয়েছে। গুলি থেকে নিরাপদে থাকা শিক্ষার্থীরা তাদের বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়দের অবস্থা জানানোর জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছে।
পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল প্রাগের চার্লস ইউনিভার্সিটির একটি এলাকা থেকে অস্ত্রের একটি বড় মজুত আবিষ্কার করে। পুলিশের অনুমান, সন্দেহভাজন ব্যক্তি সম্ভবত রাজধানীর বাইরে ক্লাদনো অঞ্চলের নিজ শহর থেকে প্রাগের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল আত্মহত্যা করার উদ্দেশ্য নিয়ে। যাই হোক, অস্ত্রের মজুত উদ্ধারের কিছু সময় পর বন্দুকধারীর বাবাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। দেশটির পুলিশপ্রধান মার্টিন ভন্ড্রাসেক জানান, খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ক্যাম্পাসে পৌঁছায়।
অসমর্থিত সূত্রে পুলিশ জানতে পেরেছে, চলতি বছরের শরতে রাশিয়ার একটি সন্ত্রাসী হামলায় অনুপ্রাণিত হয়ে ওই শিক্ষার্থী এই হামলা চালিয়েছেন। পুলিশপ্রধান ভন্ড্রাসেক জানিয়েছেন, বন্দুকধারী শিক্ষার্থীর কাছে বেশ কয়েকটি বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। তিনি আরও বলেন, এই হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত, যার শুরুটা হয়েছিল ক্লাদনো অঞ্চলে এবং শেষ হয়েছে প্রাগে।
চেক প্রেসিডেন্ট পেত্র পাভেল বলেছেন, তিনি সহিংসতায় ‘মর্মাহত’ এবং ‘নিহতদের পরিবার ও আত্মীয়দের প্রতি গভীর দুঃখ ও আন্তরিক সমবেদনা’ প্রকাশ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী পেত্র ফিয়ালা বলেছেন, একা বন্দুকধারী অনেক লোককে হত্যা করেছে, তাদের বেশিরভাগ তরুণ। এই জঘন্য কাজের কোনো যৌক্তিকতা নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।