রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) তার মন্ত্রনালয় থেকে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, মস্কোর সামরিক ড্রোনের উৎপাদন গত বছরের তুলনায় অনেক বেড়েছে, যদিও কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যার সমাধানে এখনও কাজ করা হচ্ছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, ইউক্রেনে প্রায় দুই বছরব্যাপী সামরিক অভিযানের সময় রাশিয়া ব্যাপকভাবে ড্রোন ব্যবহার করেছে।
তবে, এক্ষেত্রে রাশিয়াকে প্রায়শই ইরানের তৈরি সস্তা শাহেদ ড্রোনের উপর নির্ভর করতে হয়েছে।
শোইগু উদমুর্তিয়ার ভলগা নদী অঞ্চলে ড্রোন উৎপাদন কারখানা পরিদর্শনের সময় বলেন, ‘ড্রোন উৎপাদন ক্ষমতা তৈরি করা হয়েছে, যা আমাদের বেশিরভাগ কাজগুলো সম্পন্ন করতে সাহায্য করছে।’
রুশ সামররিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তাকে বলতে দেখা গেছে, ‘ড্রোন এবং ইলেকট্রনিক যুদ্ধে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার সম্পর্কিত সমস্যাগুলো এখনও সমাধান করা দরকার।’
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মস্কো ইঙ্গিত দিয়েছে যে, তার সামরিক শিল্প কমপ্লেক্স উৎপাদন বাড়িয়েছে। কারণ, রাশিয়া ইউক্রেনে কয়েক মাসের সামরিক অচলাবস্থা ভাঙতে চাইছে।
এদিকে ইউক্রেনের কমান্ডাররা বলেছেন, ‘রাশিয়ার ড্রোনগুলো যুদ্ধে শীর্ষস্থান অর্জনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে।
সামরিক বিশ্লেষকরাও বলছেন, উভয় পক্ষের দ্বারা অস্ত্রের ব্যাপক ব্যবহার সেনাদের পক্ষে স্থল অগ্রগতি কঠিন করে তুলছে।
অন্যদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বিতর্কিত ডানপন্থী সাংবাদিক টুকার কার্লসনের সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, ‘পশ্চিমা বিশ্বের বোঝা উচিত ইউক্রেনে রাশিয়াকে পরাজিত করা অসম্ভব।’
পুতিনের এই সাক্ষাতকারটি বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত হয় বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
ফক্স নিউজের সাবেক মালিক টুকার কার্লসনের সঙ্গে দুই ঘণ্টার এক সাক্ষাতকারে পুতিন আরও বলেন, ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের কারাবন্দি রিপোর্টার ইভান গারশকোভিচের বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছানো যেতে পারে।’
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের দুই বছর পূর্তির প্রাক্কালে তিনি এই সাক্ষাতকার দেন।
তিনি বলেন, ‘নির্দিষ্ট কিছু শর্তাবলীর আওতায় বিশেষ সার্ভিস চ্যানেলের মাধ্যমে আলোচনা করা হচ্ছে।’
সাক্ষাতকারের সময় তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ইভান গারশকোভিচ হচ্ছেন একজন গুপ্তচর।’
এই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে পুতিনের এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এবং মার্কিন সরকার।
২০১৯ সালের পর পশ্চিমা গণমাধ্যমের কোনও সাংবাদিককে দেওয়া এটি ছিল পুতিনের প্রথম সাক্ষাতকার।
আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে হোয়াইট হাউসের প্রার্থী এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ কার্লসন কিছু কঠিন প্রশ্ন জানতে চাইলে তিনি বেশিরভাগই মনোযোগ দিয়ে শোনেন।
এই সময় ক্রেমলিনের নেতা তাকে রাশিয়ার ইতিহাস সম্পর্কে তার দৃষ্টিভঙ্গির উপর বক্তব্য দেন। পুতিন বক্তৃতায় বলেন, ‘রাশিয়া বার বার পশ্চিমা বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হয়েছে।’
পুতিন তার বক্তব্যে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা চালানোর ক্ষেত্রে তার সিদ্ধান্তের পক্ষে নানা যুক্তি তুলে ধরে বলেন, ‘এখন পশ্চিমারা বুঝতে পেরেছে যে, ইউক্রেনে মার্কিন, ইউরোপীয় এবং ন্যাটোর সহায়তা সত্ত্বেও সেখানে রাশিয়া পরাজিত হবে না।’