কারাগারে বন্দি রাশিয়ার বিরোধী নেতা আলেক্সি নাভালনির মৃত্যুতে রাশিয়াসহ বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠেছে।
নাভালনির মৃত্যুতে তার ডেপুটি ইভান ঝদানভ এক্স-এ বলেছেন, নাভালনির আত্মীয়দের ২৪ ঘন্টার মধ্যে তার মৃত্যুর বিষয়ে অবহিত করা উচিত ছিল, কিন্তু সেই সিয়ম মেনে কোনও বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি।
রাশিয়ান সংবাদপত্র সম্পাদক এবং নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী দিমিত্রি মুরাতোভ রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলার সময় নাভালনির মৃত্যুকে ‘হত্যা’ বলে অভিহিত করে বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে, কারাগারের পরিস্থিতি নাভালনির মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে।
বর্তমানে মিউনিখে অবস্থানরত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, ‘প্রথমে আমাদের হৃদয় তার স্ত্রী এবং তার পরিবারের প্রতি ব্যথিত। রাশিয়ার কারাগারে নাভালনির মৃত্যু রাশিয়ার শাসন ব্যবস্থার পচনকে নির্দেশ করে। পুতিন যে ব্যবস্থা গড়ে তুলেছেন, তার জন্য সামগ্রিকভাবে দায়ী মস্কো। আমরা আলেক্সি নাভালনি সম্পর্কে উদ্বিগ্ন অন্যান্য দেশের সাথে কথা বলব।’
হোয়াইট হাউস ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার জ্যাক সুলিভান এনপিআরে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘যদি নাভালনির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়, তবে এটি একটি ভয়ানক ট্র্যাজেডি।।’
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানালেনা বারবক বলেছেন, ‘আলেক্সি নাভালনি ছিলেন একটি মুক্ত ও গণতান্ত্রিক রাশিয়ার প্রতীক। ঠিক এই কারণেই তাকে মৃত্যুবরণ করতে হলো। নাভালনি একটি গণতান্ত্রিক রাশিয়ার জন্য লড়াই করেছিলেন। এর জন্য পুতিন তাকে নির্যাতন করে হত্যা করেছেন।’
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, ‘এটি একটি ভয়ঙ্কর খবর। রাশিয়ার গণতন্ত্রের প্রহরী হিসাবে নাভালনি তার সারাজীবন অবিশ্বাস্য সাহস প্রদর্শন করেছেন।’
ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টেফেন সেজর্ন বলেছেন, ‘অ্যালেক্সি নাভালনি একটি নিপীড়নের ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের মূল্য তার জীবন দিয়ে প্রদান করেছেন। শাস্তিমূলক উপনিবেশে তার মৃত্যু আমাদের ভ্লাদিমির পুতিনের শাসনের বাস্তবতার কথা মনে করিয়ে দেয়। তার পরিবার, তার প্রিয়জন এবং রাশিয়ার জনগণের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছে ফ্রান্স।’
সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন বলেছেন, ‘আলেক্সি নাভালনির মৃত্যুর খবর ভয়ঙ্কর। নাভালনির বেঁচে থাকার জন্য রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ এবং প্রেসিডেন্ট পুতিন ব্যক্তিগতভাবে দায়ী।’
ইইউ কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল বলেন, ‘আলেক্সি নাভালনি স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের মূল্যবোধের জন্য লড়াই করেছেন। তার আদর্শের জন্য তিনি চূড়ান্ত ত্যাগ স্বীকার করেছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই মর্মান্তিক মৃত্যুর জন্য একমাত্র রাশিয়া সরকারকে দায়ী করছে।’
ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেয়েন তার শোকবার্তায় বলেছেন, ‘অ্যালেক্সি নাভালনির মৃত্যুর খবরে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ও ব্যথিত। পুতিন তার নিজের জনগণের থেকে ভিন্নমত ছাড়া অন্য কিছুকে ভয় পান না। পুতিন এবং তার শাসনামল কী তা নিয়ে একটি ভয়াবহ অনুস্মারক। আসুন স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা রক্ষার জন্য আমাদের লড়াইয়ে ঐক্যবদ্ধ হই।’
ন্যাটো সেক্রেটারি-জেনারেল জেন্স স্টলটেনবার্গ বলেছেন, ‘ভালনির মৃত্যুর খবরে আমি গভীরভাবে দুঃখিত ও বিচলিত। রাশিয়াকে তার মৃত্যু সম্পর্কে সমস্ত গুরুতর প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।’