গাজার শিশুদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে চর্মরোগ

, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম | 2024-07-03 15:48:30

গাজায় তাঁবুতে সাত সন্তান আশ্রয় নিয়েছেন ওয়াফা এলওয়ান। তার পাঁচ বছর বয়সি ছেলে বিপজ্জনক চর্মরোগে আক্রান্ত।

উদ্বিগ্ন ওয়াফা বলেন, ‘চুলকানির কারণে আমার ছেলে সারারাত ঘুমাতে পারে না।’

ছেলেটির পায়ে এবং পায়ের পাতায় টি-শার্টের নিচে সাদা এবং লাল ফুসকুড়ি এবং স্ক্যাবিস থেকে চিকেন ফক্স, উকুন, ইমপেটিগো এবং অন্যান্য ফুসকুড়িতে ত্বকের সংক্রমণে ভুগছে। এই ছেলেটি এমন রোগে ভুগছে এমন অনেক গাজাবাসীর মধ্যে একজন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বাস্তুচ্যুত গাজাবাসীকে এমন খারাপ পরিস্থিতিতে থাকার জন্য বাধ্য করা হয়েছে। এই ভূখন্ডের দেড় লাখেরও বেশি মানুষ চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছে।

এলওয়ান বলেছেন, ‘আমরা মাটিতে, বালিতে ঘুমাই যেখানে আমাদের শরীরের নীচে কীট চলাচল করে।’

তার পরিবার মধ্য গাজার শহর দেইর আল-বালাহে সমুদ্রের কাছে একটি বালুকাময় স্থানে বসবাসকারী হাজার হাজারের মধ্যে একটি। এলওয়ান বিশ্বাস করেন তাদের এই রোগের সংক্রমণ অনিবার্য।

তিনি বলেন, ‘আমরা আগের মতো আমাদের বাচ্চাদের গোসল করাতে পারছি না। জায়গাটি ধোয়া ও পরিষ্কার করার জন্য আমাদের জন্য কোনো স্বাস্থ্যবিধি এবং স্যানিটারি পণ্য নেই, কিছুই নেই।’

অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের বলেন ক্ষত স্থান ভূমধ্যসাগরে ধুতে। কিন্তু, যুদ্ধের ফলে যে দূষণ তৈরি হয়েছে, তা এই রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘সমুদ্র পুরোটাই নর্দমা। তারা আবর্জনা এবং শিশুর ন্যাপকিনও সমুদ্রে ফেলে।’

ডব্লিউএইচও গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ৯৬,৪১৭ টি স্ক্যাবিস এবং উকুন, চিকেন ফক্সের ৯,২৭৪টি, ত্বকে ফুসকুড়ির ৬০,১৩০টি এবং ইমপেটিগোর ১০,০৩৮টি সংক্রমণের রিপোর্ট করেছে।

দেইর আল-বালাহ ক্যাম্পে একটি অস্থায়ী ক্লিনিক পরিচালনাকারী ফার্মাসিস্ট সামি হামিদের মতে, স্ক্যাবিস এবং চিকেন ফক্স উপকূলীয় ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে।

দুই ছেলে ক্লিনিকে এএফপি-কে তাদের হাতে,পায়ে, পিঠে এবং পেটে ছড়িয়ে থাকা চিকেন ফক্সজনিত ফোস্কা এবং স্ক্যাব দেখিয়েছে।

৪৩ বছর বয়সি বাস্তুচ্যুত হামিদ নিজে ওষুধের অভাবে চুলকানি প্রশমিত করার জন্য ছেলেদের ত্বকে ক্যালামাইন লোশন মাখেন। তিনি বলেন, শিশুদের ত্বক গরম আবহাওয়া এবং বিশুদ্ধ পানির অভাবে ভুগছে।

ডক্টরস উইদাউট বর্ডারসের (এমএসএফ) গাজার মেডিকেল কো-অর্ডিনেটর মোহাম্মদ আবু মুগাইসিব এএফপি-কে বলেছেন, শিশুরা ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে বসবাস করছে।

আবু মুগাইসিব বলেন, গরম আবহাওয়া ঘাম বাড়ায় এবং ময়লা জমে যা ফুসকুড়ি এবং অ্যালার্জির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ঘামাচির হলে সংক্রমণ হয়। তিনি বলেন, ‘মানুষ ঘর নেই তাই সঠিক স্বাস্থ্যবিধি নেই’।

এ সম্পর্কিত আরও খবর