গাজা উপত্যকায় শিশুদের জন্য দ্বিতীয় পর্যায়ের পোলিও ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জাতিসংঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্থা বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সোমবার থেকে এ কার্যক্রম শুরু করে বলে জানা গেছে।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যের বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সোমবার মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে (সাবেক টুইটার) একটি ট্যাব খুলে জানিয়েছে যে, সোমবার থেকে মধ্য গাজায় শিশুদের দ্বিতীয় পর্যায়ের পোলিও ভ্যাকসিন খাওয়ানো শুরু করেছে।
এর আগে ১ সেপ্টেম্বর প্রথম পর্যায়ে গাজা উপত্যকায় প্রথম পোলিও ভ্যাকসিনেশন শুরু করা হয়। দুটি ধাপে প্রথম পর্যায়ের পোলিও ভ্যাকসিনেশন শেষ করা হয়।
দ্বিতীয় পর্যায়ে মোট কতজন শিশুকে এবং কয়টি ধাপে পোলিও ভ্যাকসিন কার্যক্রম চালানো হবে, সে বিষয়ে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
এর আগে গাজায় চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ দিনের মানবিক যুদ্ধবিরতিতে ৬ লাখ ৪০ হাজার শিশুকে ১৩ লাখ পোলিও ডোজ খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
৩ দিন ১০ বছর বয়সের নিচে ৬ লাখ ৪০ হাজার শিশুকে পোলিও ডোজ খাওয়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেন ২ হাজার স্বেচ্ছাসেবী।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানায়, ২৫ বছর পর গাজায় চলতি বছরের আগস্ট মাসে প্রথম ১০ বছর বয়সের এক শিশুকে পাওয়া যায়, যে পোলিও রোগে আক্রান্ত। সে এখন পায়ের প্যারালাইসিসে ভুগছে।
সংস্থাটি জানিয়েছিল, ধারণা করা হয়, গাজায় উপসর্গবিহীন শতাধিক পোলিও আক্রান্ত রোগী রয়েছেন। বেশির মানুষেরই পোলিও রোগের উপসর্গ সম্পর্কে ধারণা নেই। অনেকেই হয়ত সপ্তাহখানেকের মধ্যে সুস্থ হয়ে যান। পোলিও রোগে আক্রান্ত হলে শেষমেষ রোগী পঙ্গুত্ববরণ করে। এ রোগ শ্বাসপ্রণালীর মাংসপেশিকে আক্রান্ত করে।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানায়, সংস্থাটি গাজার শিশুদের পোলিও ভ্যাকসিন খাওয়ানোর জন্য ইসরায়েলের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছেছে। তবে এ মানবিক যুদ্ধবিরতিতে তাদের অনেক সমস্যায় পড়তে হবে। কারণ গাজার ৯০ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়েছেন।
এরপর ৫ সেপ্টেম্বর হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ চলমান থাকার মধ্যেই দ্বিতীয় ধাপের ভ্যাকসিনেশন শুরু করা হয়।
আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থার (গ্লোবাল রিলিফ এজেন্সি- জিআরএ) প্রধান ফিলিপ্পি লাজরানি মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে পোলিও ভ্যাকসিনেশনের প্র্রথমধাপের সাফল্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘দারুণ অগ্রগতি! মধ্য গাজার অনেক শিশু পোলিও রোগের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন পেয়েছে’!
এ সময় তিনি আরো বলেন, ‘পোলিও ভ্যাকসিনেশনের অবসরে গাজার মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পেরেছেন। তবে এবার জরুরিভাবে গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি বিনিময় হওয়া দরকার’।
এছাড়া মানবিক ত্রাণ সহায়তার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা এবং ওষুধও সরবরাহের স্বাভাবিক গতি আসা দরকার বলে জানান তিনি।