তুরস্ক,ইজমির থেকে: ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে সতস্ফুত কোলাকুলি, এ যেন আনন্দের এক বাঁধ ভাঙ্গা জোয়ার। যে আনন্দ নির্মল, যে আনন্দ ধরিত্রীর কোন কিছুর সাথেই তুলনা হয় না, অন্যের খুশি বা আনন্দে নিজের মনের গহীন কোণে শুভ্র শান্তির শীতল স্পর্শ অনুভূত হওয়া; এটাইতো স্বর্গীয় অনুভূতি, এটাইতো ঈদ।
ঈদ মানে আত্মার পরিশুদ্ধি, দোস্ত-দুশমন,ধনী-গরিব, ছোট-বড়,সাদা-কালো,দেশি-বিদেশি সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি প্রকাশের এক উদার উৎসব।দিনটি যেন সৃষ্টিকর্তার এক মাহান উপহার। কালের গহবরে কত দিন, কত ঈদ চলে যায়। কিন্তু এ দিন কোনো সময়েই যেন বদলায় না। ঈদ মানেই তো ঈদ, এর আর কি কুনো মানে হয়।
সবার মত বিদেশে বসবাসরত বাঙ্গালীরা ঈদ উদযাপন করেন কিন্তু কোথায় যেন একটা কমতি থেকে যায়। জন্মভূমির মায়া যেন কিছুতেই পূরণীয় নয়।জেনে নেই তুরস্কে বসবাসরত কয়েক জন বাঙ্গালী কমিউনিটির সদস্য এর কাছ থেকে কেমন কাটল তাদের প্রবাস জীবনের ঈদ।
ফারজানা আক্তার আঙ্কারা ইউনিভার্সিটিতে পিইচডিতে অধ্যয়ন করছেন।কথা হয় বার্তা২৪ এর সাথে।জানান তাঁর ঈদ অনুভূতির কথা। তিনি বলেন “ বাবা-মা, শ্বশুর-শাশুড়ি, আত্মীয়-স্বজন ছাড়া এখানে ঈদ অবশ্যই সুখকর নয়।বিকালে যখন বাঙ্গালি কমিউনিটির সবাই একত্রিত হলাম, সবাই বাংলায় কথা বললাম, এ এক ব্যতিক্রম ধর্মী অনুভূতি, মনে হল এ যেনো টার্কির বুকে এক খন্ড বাংলাদেশ। তাছাড়া এখানে মহিলারা ঈদের নামাযের জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারে সেটা একটা ভাল দিক। এখানে কুরবানি করাহয় স্লাটার হাউসে সেটা যদিও পরিবেশের জন্য ভাল কিন্তু বাংলাদেশে বাড়িতে কুরবানি করাটা এনজয় করতাম, মনে হয়ছে এটা অনেক মিস করছি”।
ডকুজ এইলুল ইউনিভার্সিটিতে পিইচডি গভেষক মাহমুদুল হাসান খাঁন বলেন “ফ্যামিলি ছাড়া আর ঈদ, ফ্যামিলিকে অনেক মিস করি, তারপর ও যেহেতু আমরা এখানে একটা কমিউনিটি আছি, সাবাই পড়া-লেখায় ব্যস্ত থাকি তবু ও ঈদ একটা গেট টু গেদার এর সুযেগ করে দেয় । আমরা পিকনিক এর মত করে উদযাপন করেছি। মোটামুটি ভালই কেটেছে”।
মারমারা ইউনিভার্সিটিতে পিইচডিতে গভেষণারত সালাহ উদ্দিন ।ঈদের নাময আদায় করেছেন ইস্তানবুল এর বিখ্যাত ব্লু মস্ককে উনার অনুভূতি হল “ঈদ মানেই ত হল; ভাই-বোন, পরিবার, পাড়া-প্রতিবেশী আত্মীয়-স্বজনের সাবাইকে নিয়ে আনন্দ উদযাপন, কুরবানি করা, গোশত ভাগা ভাগি করা, কিন্তু এখানে এটা একটা বিশাল শূন্যতা। বিকালে বাংলাদেশি কমিউনিটি এর সবার সাথে দেখা হল ভাল লাগল, সর্বপরি তুরস্কে দেশের মত ঈদের আমেজ নাই”।
ওমর ফারুক হেলালী মারমারা ইউনিভার্সিটিতে থিওলজিতে পড়েন। ঈদের নাময পড়েছেন ইস্তানবুল ব্লু মস্ককে তিনি বলেন “ দেখেন এখানে প্রায় ৫ বছর হয়ে গেল, এখানে একটা কমিউনিটি হয়েগেছে দেন বাংলাদেশে আমার সাথের সবাই বাহিরে থাকে তাই ঈদ উদযপন আমার এখানেই ভাল লাগে”।
মঈন উদ্দিন ইস্তানবুলে ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা করেন। “ তিনি বলেন সকালে ফাতিহ মসজিদে ঈদের নামায আদায় করি।আমার পরিবারের সাবাই বাংলাদেশে থাকেন, যদি ও আমি তুরস্কের নাগরিকত্ব পেয়ে গেছি, কিন্তু নাড়ির টান যে, মন তো পড়ে আছে সেখানে,পরিবার ছাড়া ঈদ খুবই আনন্দহীন,আমি যেহেতু আমার স্ত্রী ও বাচ্চা নিয়ে থাকি তাই বাঙালি কমিউনিটির সাথে ঈদ উপলক্ষে দেখা সাক্ষাৎ হল সর্বপরি একটা ভাল উদযাপন হয়েছে”।