সকল মুসলিমের জন্য আল আকসা মসজিদ খুলে দিলে মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে ইসরাইলের উত্তেজনা কমবে বলে মনে করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা ও জ্যৈষ্ঠ উপদেষ্টা জারেড কুশনার।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন বিষয়ে ইসরাইলের চুক্তির পর সংযুক্ত আরব আমিরাতের সংবাদ সংস্থা ওয়ামকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।
কুশনার বলেন, ইসরাইলিরা খুবই খুশি। কারণ তারা দুবাই হয়ে ভ্রমণের জন্য কম খরচে ফ্লাইট পাবে। আমি জানি অনেক মুসলিমও খুশি। কারণ তারা এখন দুবাই হয়ে তেলআবিব যেতে পারবে এবং আল আকসা পরিদর্শন করতে পারবে। সেখানে মুসলিমরা স্বাধীনভাবে, শান্তিতে নামাজ পড়তে পারবে। এ চুক্তির কারণে জেরুজালেম এখন আগের তুলনায় অনেক নিরাপদ।
জারেড কুশনার আরও বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসে এই চুক্তি অন্যতম বড় ঘটনা। ৭০ বছরের ইতিহাসে এটি তৃতীয় চুক্তি। আর গত ২৬ বছরে প্রথম কোনো আরব রাষ্ট্র ইসরাইলের সঙ্গে চুক্তি করতে সম্মত হলো।
যদিও মুসলিম বিশ্বজুড়ে এ চুক্তির ফলে তুমুল সমালোচনা চলছে। আরব আমিরাত ও ইসরাইলের এই চুক্তির সুদূরপ্রসারী প্রভাব উপলব্ধি করতে পারছে না সমালোচনাকারীরা। এর মাধ্যমেই মধ্যপ্রাচ্যের সব সমস্যার সমাধান হবে বলেও উল্লেখ করেন কুশনার।
উল্লেখ্য, আরব আমিরাত ও ইসরাইলের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার বিষয়ে এ চুক্তি বাস্তবায়িত হলে ইসরাইল-আমিরাত রুটে সরাসরি ফ্লাইট চলাচল শুরু হবে। এদিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু আমিরাত- ইসরাইলের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চলাচলের ঘোষণা দিয়েছেন। ইতোমধ্যে টেলিফোন যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে দুই দেশের মধ্যে।
১৩ আগস্ট এই চুক্তি সইয়ের পর ইহুদিবাদী ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান ইয়োসি কোহেন আবু ধাবি সফরে গেছেন। এটি হচ্ছে ইসরাইলের পক্ষ থেকে উচ্চ পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তার প্রথম আমিরাত সফর।
তবে আল আকসা খুলে দেওয়া হলেও, এর তত্ত্বাবধানে জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহই থাকবেন বলে জানিয়েছে ইসরাইল।
আল আকসা বা বায়তুল মোকাদ্দাস। মুসলমানদের প্রথম কেবলা। ইসরাইল দখলকৃত জেরুজালেম শহরে অবস্থিত এটি। ফিলিস্তিনে জবর-দখলের প্রেক্ষিত্রে ইসরাইলের সঙ্গে মুসলিম বিশ্বের বিরোধ। এছাড়া বায়তুল মোকাদ্দাসে ইবাদত-বন্দেগি ও নামাজ পড়তে বাঁধা দেওয়া অন্যতম কারণ।
এমতাবস্থায় আল আকসা খুলে দেওয়ার বিষয়ে কুশনারের এমন মনোভাব বেশ ইতিবাচক। কারণ কুশনারের ভূমিকা ও তার শশুর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উদ্যোগে আলোচিত চুক্তিটি সম্পন্ন হয়েছে। আরও কয়েকটি পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের আরব দেশের সঙ্গে ইসরাইল সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে। এক্ষেত্রেও কুশনারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
ফলে আল আকসা খুলে দেওয়ার বিষয়ে কুশনারের মনোভাব প্রকাশের পর অপেক্ষার পালা শুরু। দেখা যাক, কবে নাগাদ উন্মুক্ত হয় মুসলিম বিশ্বের জন্য মসজিদে আকসার দরজা।
-আরব নিউজ অবলম্বনে