আলেম-উলামাদের দাবির প্রেক্ষিতে ৬টি শর্তে কওমি মাদরাসার কিতাব বিভাগ খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে এ সংক্রান্ত নোটিশ দিয়েছে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ। এর আগে সোমবার (২৪ আগস্ট) কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসসহ অন্যান্য পরীক্ষা গ্রহণের অনুমতি দেয় সরকার। এ ছাড়া ১২ জুলাই থেকে দেশের হিফজ বিভাগ খোলার অনুমতি দেওয়া হয়।
বেশ কিছুদিন ধরে বক্তব্য ও বিবৃতির মাধ্যমে কওমি মাদরাসাগুলো খুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছিলেন আলেমরা। কওমি মাদরাসার সবোর্চ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা হাইয়াতুল উলইয়া ও জাতীয় দ্বীনি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড পৃথক পৃথকভাবে কওমি মাদরাসা খুলে দেওয়ার আবেদন করেন।
এদিকে সোমবার মন্ত্রিসভার মিটিং শেষে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, মাদরাসাগুলোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে কওমি মাদরাসার ডিগ্রি ও মাস্টার্স পর্যায়ের পরীক্ষাগুলো নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে। তবে মাদরাসার শিক্ষাকার্যক্রম চালুর সিদ্ধান্ত হয়নি।
এরই মাঝে সোমবার বিকেলের দিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সহকারী সচিব সৈয়দ আসগর আলী (মাদরাসা শাখা-২) স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এটা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে মাদরাসা খোলার ঘোষণা দেওয়া হয়নি।
ফলে কওমি মাদরাসা খোলা নিয়ে এক ধরনের ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়। অবশেষে মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে শিক্ষাবোর্ডের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সহকারী সচিব সৈয়দ আসগর আলী স্বাক্ষরিত নোটিশে স্পষ্টভাবে মাদরাসাগুলো খোলার কথা জানানো হলো।
নোটিশে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করে কওমি মাদরাসার কিতাব বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু ও পরীক্ষা গ্রহণের অনুমতি দেওয়া হলো। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে স্বাস্থ্য বিভাগ মনিটরিং করতে পারবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়। এ সময় ৬টি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
শর্তগুলো হলো- ১. প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে মাস্ক, হ্যান্ডগ্লাভস, মাথায় নিরাপত্তা টুপি পরা আবশ্যক। ২. মাদরাসায় প্রবেশের আগে গেটে স্যানিটাইজিং করতে হবে। ৩. শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ কক্ষে অবস্থান করবে, বিক্ষিপ্তভাবে চলাফেরা করবে না। ৪. একজন শিক্ষার্থী অন্য শিক্ষার্থী থেকে কমপক্ষে ৩ ফুট দূরত্বে অবস্থান করবে। ৫. করোনার কারণে কোলাকুলি ও হাত মেলানো যাবে না এবং ৬. শিক্ষক ও কর্মচারীরাও একইভাবে সরকারের স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে ক্লাস করাবেন।
উল্লেখ্য, দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের পর থেকে অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সঙ্গে কওমি মাদরাসাগুলোর শিক্ষাকার্যক্রমও বন্ধ হয়ে যায়।