বন্ধুত্বের ছদ্মাবরণে বাংলাদেশ নানামুখী ভারতীয় আগ্রাসনের শিকার। নতজানু পররাষ্ট্রনীতি এবং অতিমাত্রায় ভারতপ্রীতির কারণে স্বাধীনতার অর্ধশত বছর পরেও দেশবাসী স্বাধীনতা সংকটে ভুগছে। রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি সর্বক্ষেত্রে ভারতের আধিপত্য দিনদিন বেড়ে চলেছে, যা আমাদের স্বাধীন অস্তিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। সরকার ভারতকে ট্রানজিট, ট্রান্সশিপমেন্ট, বন্দর ব্যবহারসহ অনেক কিছু দিলেও তারা বাংলাদেশকে কিছুই দেয়নি। এমনকি বহুল আলোচিত ফারাক্কা ও তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যাও দেয়নি। সীমান্ত হত্যাও বন্ধ হয়নি। দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে দেশকে এই স্বাধীনতা সংকট থেকে উত্তরণে প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ।
শুক্রবার (২৮ আগস্ট) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘ভারতীয় আগ্রাসনের স্বরূপ: আমাদের স্বাধীনতা সংকট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশের সর্বক্ষেত্রে ভারতের আধিপত্য চলছে। শিক্ষা, প্রশাসন, স্বাস্থ্য সব সেক্টরেই ভারতের থাবা। অর্থনৈতিকভাবে শোষণ করে দেশকে পঙ্গু করে দিচ্ছে ভারত।
সংগঠনের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজী, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, মুসলিম লীগের স্থায়ী কমিটির সদস্য আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের প্রফেসর ড. আব্দুল লতিফ মাসুম, ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুরু, নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মুফতি আব্দুল কাইঊম, খেলাফত মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, দৈনিক ইনকিলাবের সহকারি সম্পাদক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ, অধ্যক্ষ শেখ ফজলে বারী মাসউদ, যুবনেতা কেএম আতিকুর রহমান, ছাত্রনেতা এম হাছিবুল ইসলাম প্রমুখ।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, আহমদ আবদুল কাইয়ূম, লোকমান হোসাইন জাফরী, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, আলহাজ্ব আব্দুর রহমান, মাওলানা নেছার উদ্দিন, আলহাজ্ব জান্নাতুল ইসলাম, গাজী রুহুল আমীনসহ কেন্দ্রীয়, সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমাদ বলেন, দেশ, ইসলাম ও মানবতা আজ চরম হুমকির মুখে। ভারতীয় আধিপত্যের জয়জয়কার। এমতাবস্থায় দৃষ্টিভঙ্গি ও চিন্তার ঐক্য গড়ে তোলার মাধ্যমে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
আতিকুল ইসলাম বলেন, ভারতের বর্ণবাদী হিন্দুদের আগ্রাসনের শিকার হয়ে মুসলমানরা জীবন দিচ্ছে। কাশ্মীরের মুসলমানদের অধিকার হরণ করা হয়েছে।
মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, দেশ অত্যন্ত কঠিন সময় পার করছে। ভারত আমাদেরকে সবদিক থেকে গ্রাস করে ফেলেছে। স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্নের পথে। এ মুহূর্তে দেশ, ইসলাম ও মানবতা রক্ষায় জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন। এ জন্য ইসলামী আন্দোলনকে উদ্যোগ নেওয়ার আহবান জানান তিনি।
ড. আব্দুল লতিফ মাসুম বলেন, একটি রাষ্ট্রকে টিকে থাকতে হলে নাগরিক অধিকার, বাক স্বাধীনতা প্রয়োজন। কিন্তু আজ তা নেই।
ভিপি নুরুল হক নুরু বলেন, ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলার অনেকে সাহসও পায় না। বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে আলোচনা করা গেলেও ভারতের বিরুদ্ধে আলোচনা করা অনেক কঠিন। ভারতের বিভিন্ন জুলুমের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস সরকারের নেই। সরকার গঠনে ভারতের প্রভাবসহ সর্বক্ষেত্রে ভারতের আধিপত্য ও হিংস্র থাবা বিস্তার চলছে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে সকল দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।