পাকিস্তানের করাচিতে সন্ত্রাসী হামলায় শহিদ হওয়া জামিয়া ফারুকিয়ার মুহতামিম মাওলানা ড. মুহাম্মদ আদিল খান ও তার চালক মকসুদের জানাজার নামাজ ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
রোববার (১১ অক্টোবর) সকালে জামিয়া ফারুকিয়ায় অনুষ্ঠিত জানাজায় শায়খুল ইসলাম মুফতি তাকি উসমানী, দারুল উলুম করাচির মুহতামিম মাওলানা রফি উসমানী, পাকিস্তান বেফাক বোর্ডের চেয়ারম্যান মাওলানা মুহাম্মদ হানিফ জলন্ধরী, মাওলানা আবদুল গাফুর হায়দারী ও মাওলানা রশিদ মাহমুদসহ পাকিস্তানের বেশ কয়েকজন সিনেট সদস্য, আলেম-উলামা, মাদরাসার শিক্ষার্থী ও বহু ধর্মপ্রাণ মানুষ অংশ নেন।
জানাজার নামাজে ইমামতি করেন মাওলানা আদিল খানের ভাই মাওলানা ওবায়দুল্লাহ খালিদ।
মাওলানা আদিল খানকে তার বাবা মাওলানা সালিম উল্লাহ খানের পাশে কবর দেওয়া হয়।
জানাজার আগে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তার লাশ জামিয়া ফারুকিয়া নেওয়া হয়।
পাকিস্তানের বিশিষ্ট ইসলামি ব্যক্তিত্ব ও করাচির জামিয়া ফারুকিয়া মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা ড. আদিল খান শনিবার (১০ অক্টোবর) রাতে আততায়ীর গুলিতে শাহাদাত বরণ করেন। হামলায় তার গাড়ীর চালকও গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
মাওলানা আদিল পাকিস্তানের দেওবন্দ ঘরণার বিশিষ্ট আলেম, জামিয়া ফারুকিয়া প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা সালিম উল্লাহ খানের ছেলে। অনলবর্ষী বক্তা হিসেবে মাওলানা আদিল খানের বেশ সুনাম ছিল।
তার হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়, মাওলানা আদিলকে বহনকারী ভিগো গাড়িটি শাহ ফয়সাল কলোনির একটি শপিং সেন্টারের কাছে মিষ্টি কেনার জন্য থামলে সন্ত্রাসীরা মোটরসাইকেলে করে এসে তার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
মাওলানা ড. আদিল খানের হত্যাকে ‘নিন্দনীয়’ উল্লেখ করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘গত কয়েক মাস ধরেই তার সরকার ভারতীয় ‘টার্গেট কিলিং’ নিয়ে উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায়ের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টির লক্ষে ভারত চেষ্টা করে আসছে।’
ইমরান খান টুইট বার্তায় আরও বলেন, ‘আমি বারবার বলেছি, ভারত গত তিন মাস ধরে শিয়া ও সুন্নি আলেমদের হত্যা করে দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করছে। গত কয়েক মাসে আমরা এ জাতীয় বহু প্রচেষ্টা ব্যর্থ করেছি। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মাওলানার খুনিদের গ্রেফতার করবে।’
পাকিস্তানকে অস্থিতিশীল করতে ভারতের এই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করতে সব সম্প্রদায়ের আলেমদের আহ্বান জানিয়েছেন ইমরান খান।
পাকিস্তানের কাউন্টার টেররিজম বিভাগের উপ-মহাপরিদর্শক ওমর শহিদ হামিদ বলেছেন, মাওলানা আদিল হত্যার ঘটনার পুলিশ দু’টি সম্ভাব্য কারণ নিয়ে কাজ করছে।
মাওলানা আদিল খানের হত্যার ঘটনায় বাংলাদেশের আলেমরাও নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে আলেমরা বলেন, একজন শীর্ষ আলেমকে এভাবে শহিদ করার দ্বারা প্রমাণিত হয়, পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেশ দুর্বল। কিছুদিন পর পরই পাকিস্তানের শীর্ষ আলেমদের ওপর এমন হামলার ঘটনা ঘটে, যা বড়ই দুঃখজনক। শীর্ষ আলেমদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পাকিস্তান সরকারকে আরও কার্যকরী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান বাংলাদেশি আলেমরা।