চলচ্চিত্র কিংবা নাটকে বিয়ের দৃশ্যের অভিনয়ে ‘কবুল’ শব্দ উচ্চারণে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং বাংলাদেশ চলচিত্র সেন্সর বোর্ডকে এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) আইনের শাসন সমুন্নত রাখতে ও জনস্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান এ নোটিশ পাঠান।
নোটিশে উল্লেখ হয়েছে, ‘বাংলাদেশে প্রচলিত ১৯৭৩ সালের মুসলিম আইনের ধারা-২ অনুযায়ী বিয়ে, তালাক, ভরণপোষণ, মোহরানা প্রভৃতি ক্ষেত্রে মুসলিমদের জন্য মুসলিম আইন (শরিয়ত) প্রযোজ্য হবে। সুতরাং মুসলিম নারী ও পুরুষ উপরোক্ত আনুষ্ঠানিকতা পূরণ করলেই তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে গণ্য হবে।’
‘অপরদিকে বাংলাদেশে প্রচলিত আরেকটি আইন মুসলিম ম্যারেজ অ্যান্ড ডিভোর্স (রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট ১৯৭৪)- এর ধারা-৩ অনুযায়ী, মুসলিম নারী-পুরুষের বিয়ে মুসলিম আইন অনুযায়ী হবে, তারপর ওই আইনের অধীনে তা নিবন্ধন করতে হবে। ওই আইনের ধারা-৫ অনুযায়ী, মুসলিম আইনে বিয়ের সর্বোচ্চ ৩০ দিনের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। তবে যদি নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) বিয়েতে উপস্থিত থাকেন, তবে বিয়ের অনুষ্ঠানের সময়ই তিনি রেজিস্ট্রেশন করবেন। এছাড়া, কেউ বিয়ের রেজিস্ট্রেশন না করলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হবে।’
‘সুতরাং, দেখা যাচ্ছে, বিয়ে ও বিয়ে রেজিস্ট্রেশন পৃথক বিষয়। মুসলিম নারী ও পুরুষের মধ্যে বিয়ে হয় মুসলিম আইন (শরিয়ত) অনুযায়ী। অপরদিকে বিয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার সর্বোচ্চ ৩০ দিনের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এক্ষেত্রে বিয়ে রেজিস্ট্রেশন না করা অপরাধ হলেও মুসলিম আইন অনুযায়ী বিয়ে বৈধ থাকবে।’
নোটিশে অভিনয়ের সময় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা প্রসঙ্গে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে বিভিন্ন সিনেমা, নাটক এবং ভিডিওর বিভিন্ন দৃশ্যে বিয়ের দৃশ্যায়নে মুসলিম অভিনেতা ও অভিনেত্রীরা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা পূরণসহ ‘কবুল’ শব্দ উচ্চারণ করে থাকেন। এর মাধ্যমে তারা মুসলিম আইন (শরিয়ত) অনুযায়ী স্বামী-স্ত্রী হিসেবে গণ্য হবেন। তাই মুসলিম আইন অনুসারে বিয়ের ক্ষেত্রে সরাসরি মুসলিম আইন (শরিয়ত) প্রয়োগ হবে। অভিনয়ের যুক্তিতে এই বিয়েকে অস্বীকার করা যাবে না। কারণ, অভিনয়ের মধ্যে কেউ মিষ্টি খেলে মিষ্টির স্বাদ অনুভব করবে, কেউ বিষ খেলে সে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হবে।’
নোটিশ পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে সিনেমা-নাটকের বিয়ের দৃশ্যায়নে ‘কবুল’ শব্দ উচ্চারণে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। তা না হলে প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।