‘গভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের অংশ হিসেবে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যু নিয়ে হত্যা মামলা হয়েছে’ বলে দাবি করেছেন সংগঠনটির যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক। এ ঘটনার নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে পাল্টা আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৭) রাতে মামলার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বার্তা২৪.কমকে তিনি বলেন, ‘হত্যা মামলার বিষয়টি জেনে আমি বিস্মিত হয়েছি। বিভিন্ন খবরে দেখলাম, একটি হত্যা মামলার আবেদন করা হয়েছে। সেখানে ৩৬ জনের সঙ্গে আমার নামও উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ আল্লামা আহমদ শফীর মৃত্যুর আগেকার কোনো ঘটনা কিংবা পরিস্থিতিতে আমি তার কাছাকাছি ছিলাম না। তার পরও তারা কেন আমার নাম জড়ালো, তা বোধগম্য নয়। মামলায় আমার নাম অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে তাদের উদ্দেশ্য এখন অনেকটাই স্পষ্ট। আসলে তারা আমাদের ঘায়েল করতে চায়। আল্লামা শফীর মৃত্যুর পরে তাকে কেন্দ্র করে, পুঁজি করে তাদের স্বার্থের এই খেলা দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ বরদাশত করবে না।’
‘আল্লামা শফীর বড় সন্তান তার মৃত্যুকে স্বাভাবিক বলে আখ্যায়িত করেছেন। এমনকি হাটহাজারী মাদরাসা কর্তৃপক্ষ জাতির সামনে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। অথচ একটি চিহ্নিত স্বার্থান্বেষী মহল মৃত্যুর এত দিন পর দেশ ও জাতিকে বিভ্রান্ত করার লক্ষ্যে হত্যা মামলা দায়ের করেছে’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘মামলায় আমার নাম জড়ানোর মাধ্যমে তারা আমার মানহানি ঘটিয়েছে। এ বিষয়ে আমি আইনজীবী, অন্যান্য দায়িত্বশীল এবং উলামায়ে কেরামদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’
আরও পড়ুন:
আল্লামা শফীকে হত্যার অভিযোগে ৩৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
মাওলানা মামুনুল হক আরও বলেন, ‘শাইখুল ইসলাম আল্লামা আহমদ শফী (রহ.) ইন্তেকাল করেছেন গত সেপ্টেম্বর মাসের ১৮ তারিখ। আমি আল্লামা শফী (রহ.)-এর ভক্ত ও মুরিদ। তিনি আমাকে আধ্যাত্মিকতার লাইনে মেহনত করার অনুমতি দিয়েছেন, খেলাফত দিয়েছেন। আমি হজরতের মৃত্যুতে অনেক বেশি আহত ও শোকাহত।’
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকালে আল্লামা আহমদ শফীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগে মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হকসহ ৩৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। আল্লামা শাহ আহমদ শফীর শ্যালক মাওলানা মাইনুদ্দীন বাদী হয়ে দায়ের করা এই মামলা পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলায় এক নম্বর আসামি করা হয়েছে মাওলানা নাছির উদ্দিন মুনিরকে। দুই নম্বর আসামী মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক। অন্যরা হলেন- মাওলানা মীর ইদ্রিস, হাবিব উল্লাহ, আহসান উল্লাহ, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়েজী, মুফতি নুরুজ্জামান নোমানী, আব্দুল মতিন মো. শহীদুল্লাহ, মো. রিজুয়ান আরমান, মো. নজরুল ইসলাম, হাসানুজ্জামান, মো. এনামুল হাসান ফারুকী, মীর সাজেদ, মাওলানা জাফর আহমেদ, মীর জিয়াউদ্দিন, আহমদ, জুবাইর মাহমুদ, এইচ এম জুনায়েদ, আনোয়ার শাহ, মো. আহমদ কামাল, মো. নাছির উদ্দিন, কামরুল ইসলাম কাসেমী, মো. হাসান, ওবায়দুল্লাহ ওবাইদ, জুবাইর, মুহাম্মদ, আমিনুল হক, রফিক সোহেল, মবিনুল হক, নাঈম, হাফেজ সায়েম উল্লাহ ও মাওলানা হাসান জামিল।
গত ১৮ অক্টোবর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা আহমদ শফী।