দেশে বর্তমানে বেসরকারিভাবে হজ ব্যবস্থাপনা পরিচালনার জন্য লাইসেন্সপ্রাপ্ত এজেন্সির সংখ্যা ১ হাজার ৩৬৯টি এবং উমরা পরিচালনার জন্য লাইসেন্সপ্রাপ্ত এজেন্সির সংখ্যা ৪শ’। হজ ও উমরা ব্যবস্থাপনা বিষয়ে কোনো সংবিধিবদ্ধ আইন নেই। নির্বাহী নীতিমালা, আদেশ, পরিপত্র ইত্যাদি দ্বারা হজ ও উমরার যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এ বিষয়ে সংবিধিবদ্ধ আইন ও বিধি-বিধানের প্রয়োজন দীর্ঘদিন যাবৎ অনুভূত হচ্ছে।
এ লক্ষে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগ হজ ও উমরা ব্যবস্থাপনা আইন- ২০২০ প্রণয়র করেছে। আইনের খসড়াটি ইতোমধ্যে মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ও দৈহিকভাবে সক্ষম মুসলমানের জন্য পবিত্র হজ পালন করা ফরজ ইবাদত। প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক ধর্মপ্রাণ মুসলমান পবিত্র হজ ও উমরা পালনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরব গমন করে থাকেন। সার্বিক হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সরকারের প্রত্যক্ষ ও নিবিড় সম্পৃক্ততা রয়েছে। ব্যবস্থাপনা একটি ব্যাপকভিত্তিক, সময়াবদ্ধ ও স্পর্শকাতর বিষয়। উমরা ব্যবস্থাপনা মূলত বেসরকারিভাবে পরিচালিত হয়ে থাকলেও সরকার থেকে প্রাপ্ত লাইসেন্সের ভিত্তিতে এজেন্সিসমূহ উমরা কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।
হজ ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত বেসরকারি হজ এজেন্সিসমূহকে লাইসেন্স প্রদান এবং লাইসেন্সের শর্ত অনুযায়ী তাদের কার্যক্রম পরিচালনা, পরিবীক্ষণ, মূল্যায়ন ও সর্বোপরি দায়িত্ব পালন নিশ্চিতকরণের জন্য আইনের সুস্পষ্ট বিধান আবশ্যক। আইনি সমর্থন ছাড়া লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন, বাতিল, স্থগিতকরণ, লাইসেন্সধারী এজেন্সির বিরুদ্ধে প্রশাসনিক কার্যক্রম গ্রহণ, দণ্ড আরোপ কিংবা আবশ্যক ক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যক্রম গ্রহণ করা অনেক ক্ষেত্রে সম্ভবপর হয় না। এছাড়া, হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সম্পৃক্ত মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অন্যান্য সরকারি সংস্থাসমূহের দায়-দায়িত্ব আইনি বিধি-বিধান দ্বারা সুস্পষ্ট করা হলে তা হজ ব্যবস্থাপনাকে আরও দক্ষ ও গতিশীল করতে সহায়ক হবে।
হজ বিষয়ক সংবিধিবদ্ধ আইন প্রণয়ন করে হজ ব্যবস্থাপনার একটি আইনগত ভিত্তির সূচনা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে হজ ও উমরা ব্যবস্থাপনা আইন- ২০২০ এর খসড়া মন্ত্রিসভায় সদয় নীতিগত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত আইনে ২৪টি ধারা রয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, রাজকীয় সৌদি সরকারের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন, সৌদি আরবে অফিস স্থাপন ও কার্যক্রম পরিচালনা, হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি, হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নির্বাহী কমিটি, হজ ও উমরা এজেন্সির নিবন্ধন, নিবন্ধন আবেদনের যোগ্যতা ও শর্তাদি, প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা, আপিল আবেদন, ফৌজদারী ব্যবস্থা গ্রহণ এবং আইনের অতিরাষ্ট্রিক প্রয়োগ।
প্রস্তাবিত আইনটি প্রণয়ন করা হলে তা হজ ও উমরা ব্যবস্থাপনায় সরকারের ভূমিকা আরও সুদৃঢ় করবে এবং এর ফলে সংশ্লিষ্ট সকলের দায়-দায়িত্ব স্পষ্ট হবে। এ আইন হজ ও উমরা যাত্রীদের স্বার্থ সংরক্ষণে বিশেষভাবে সহায়ক হবে। হজ ও উমরা ব্যবস্থাপনায় অধিকতর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।