চেষ্টা এবং অদম্য ইচ্ছার অপর নাম সফলতা। এ জন্য বয়স কোনো বাঁধা নয়। পরিশ্রম করলে স্বপ্ন একদিন বাস্তবে রূপ নেবেই। স্বপ্ন-বোনা মানুষ সবসময় নতুন স্বপ্নের ছক আঁকেন। সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে মিসরের এক ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ ও এক দম্পতি মোটর সাইকেলে সৌদি আরবের মক্কা-মদিনায় গিয়ে ওমরা পালন করলেন এবং মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা মোবারক জিয়ারত করেছেন।
চলতি মাসের ১১ নভেম্বর মিসর থেকে বাইক চালিয়ে ওমরা পালন করে চমকে দেন ৬৪ বছর বয়সী হাজি ইসমাইল আবদুল লতিফ। এই মিসরীয় মোটর সাইকেলে ওমরা পালনের জন্য ৩ হাজার কিলোমিটার পথ ভ্রমণ করেছেন। অনেকেই তার এই যাত্রাকে দুঃসাহসী যাত্রা বলে অভিহিত করেছেন।
হাজি ইসমাইল এর আগে পবিত্র হজ পালন করেছিলেন। তার পরও তার ইচ্ছা ছিলো মোটর সাইকেল চালিয়ে ওমরা পালনের। সেই ইচ্ছাপূরণের জন্য প্রায় দুই বছর অপেক্ষা করতে হয়। করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ার পর সৌদি আরব আসেন তিনি।
মদিনা নিউজ জানিয়েছে, তিনি কায়রো থেকে সফর শুরু করে প্রথমে পবিত্র মক্কা পৌঁছেন। মক্কায় ওমরার আনুষ্ঠানিকতা শেষে মদিনা মোনাওয়ারা আসেন। তিনি সৌদি আরবে মোট ছয়দিন ছিলেন।
হাজি ইসমাইল তার ফেসবুকে মক্কা-মদিনায় আসার পথে বিভিন্ন স্থানের ছবি শেয়ার করেছেন। এ কাজের জন্য তার পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবরা ব্যাপক উৎসাহ দিয়েছেন।
হাজি ইসমাইলের খবরের রেশ কাটকে না কাটতেই মিসরের তানতা এলাকা থেকে মোটরসাইকেল চালিয়ে ওমরা পালন করতে আসেন এক দম্পতি। এ জন্য তারাও প্রায় ১২ শ’ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছেন। মোটরসাইকেলের পেছনে আরেকজনকে নিয়ে এতটা পথ চলা অবশ্যই কঠিন। তার পরও ওই দম্পতি কাজটি করেছেন। পবিত্র কাবা জিয়ারত ও তাওয়াফসহ ওমরার আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ভুলেছেন ভ্রমণক্লান্তি।
মোট ৪৮ ঘণ্টা মোটরসাইকেল চালিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে সৌদি আরব পৌঁছেন মিসরের তানতার অধিবাসী ওমর আবু দাউদ। পরে সেখান থেকে পবিত্র ওমরা পালনের জন্য রওনা করেন মক্কা অভিমুখে।
স্থানীয় গণমাধ্যমকে ওমর আবু দাউদ জানান, শৈশব থেকেই মোটরসাইকেল ভালোবাসতাম। ইউটিউবে বাইকারদের দেখে মনে হতো বাইকে চড়ে দূরে কোথাও যাই। পরে ভাবলাম, মক্কার চেয়ে ভালো গন্তব্য আর কী হতে পারে? তাই ভালো দেখে একটা বাইক কিনে স্ত্রীকে নিয়েই চলে এলাম বায়তুল্লায়।
তবে তারা টানা সফর করেননি। সৌদি আরব ও মিসরের মধ্যকার সমুদ্রপথ তারা জাহাজে পাড়ি দিয়েছেন।