ইসলামে মানুষের স্বাধীনতাকে তার ধারণ ক্ষমতার আলোকে যুক্ত করা হয়েছে, যেমনটি আল্লাহতায়ালা সৃষ্টি করেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহতায়ালা কাউকে তার সাধ্যাতীত কোনো কাজের ভার দেন না।’ –সুরা আল বাকারা : ২৮৬
দয়াময় আল্লাহতায়ালা মানুষকে যুক্তি ও চিন্তার শক্তি দিয়ে আলাদা বৈশিষ্টমন্ডিত করেছেন এবং মানুষের ইচ্ছা-অনিচ্ছা, পছন্দ-অপছন্দগুলো তার আচরণের ওপর নির্ভর করে। যে কারণে নিজের জীবনের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো বেছে নিতে সক্ষম। আল্লাহতায়ালা মানুষকে এই পৃথিবীতে মুক্ত এবং পরকালে দায়ী করেছেন। যেমনভাবে ফেরেশতাদের হকের ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যেখানে রয়েছে নির্মম ও কঠোর ফেরেশতাকূল, আল্লাহ তাদেরকে যে নির্দেশ দিয়েছেন, তারা সে ব্যাপারে তার অবাধ্য হয় না। আর তারা তা-ই করে যা তাদেরকে আদেশ করা হয়।’ –সুরা আত তাহরিম : ৬
তবে আল্লাহতায়ালা মানুষকে কাজ ও পছন্দের ক্ষেত্রে স্বাধীন হওয়ার জন্য দায়িত্বশীল বানিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আপনি বলে দিন, সত্য তোমাদের রবের পক্ষ থেকে। সুতরাং যে ইচ্ছা করে সে যেন ঈমান আনে এবং যে ইচ্ছা করে সে যেন কুফরি করে।’ –সুরা আল কাহাফ : ২৯
পবিত্র কোরআনে আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মিশ্র শুক্রবিন্দু থেকে, আমি তাকে পরীক্ষা করব, ফলে আমি তাকে বানিয়েছি শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন। অবশ্যই আমি তাকে পথপ্রদর্শন করেছি, হয় সে কৃতজ্ঞ কিংবা অকৃতজ্ঞ। আমি কাফেরদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছি শেকল, বেড়ি ও প্রজ্বলিত অগ্নি।’ –সুরা আদ দাহর : ২-৪
মহান আল্লাহ মানুষকে দ্বীনের কল্যাণ দান করেছেন। ইরশাত হয়েছে, ‘তোমাদের কর্ম ও কর্মফল তোমাদের জন্যে এবং আমার কর্ম ও কর্মফল আমার জন্যে।’ –সুরা কাফিরুন : ৬
আর আল্লাহতায়ালার কাছে একমাত্র গ্রহণযোগ্য ধর্ম হলো- ইসলাম। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয় আল্লাহর নিকট দ্বীন হচ্ছে- ইসলাম। আর যাদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছে, তাদের নিকট জ্ঞান আসার পর তারা মতানৈক্য করেছে, পরস্পর বিদ্বেষবশত। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর আয়াতসমূহের সঙ্গে কুফরি করে, নিশ্চয় আল্লাহ হিসাব গ্রহণে দ্রুত।’ –সুরা আলে ইমরান : ১৯
নিশ্চয় পরকালে আল্লাহর কাছে ইসলাম ছাড়া অন্যকোনো ধর্ম ও ইবাদত-বন্দেগি গ্রহণযোগ্য নয়। অন্য আয়াতে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘আর যে ইসলাম ছাড়া অন্যকোনো দ্বীন চায়, তবে তার কাছ থেকে তা কখনও গ্রহণ করা হবে না এবং সে আখেরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’ –সুরা আলে ইমরান : ৮৫
নিশ্চয় আল্লাহতায়ালা দ্বীনের ব্যাপারে কোনো জবরদস্তি করতে নিষেধ করেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিঃসন্দেহে দ্বীনের ব্যাপারে কোনো জবরদস্তি নেই। নিঃসন্দেহে হেদায়েত গোমরাহি থেকে পৃথক হয়ে গেছে। এখন যারা গোমরাহকারী তাগুতদের মানবে না এবং আল্লাহতে বিশ্বাস স্থাপন করবে, সে ধারণ করে নিয়েছে সুদৃঢ় হাতল যা ভাঙার নয়। আর আল্লাহ সবই শুনেন এবং জানেন।’ –সুরা আলে ইমরান : ২৫৬
আল্লাহতায়ালা মুসলমানদেরকে মুশরিক ও তাদের উপাস্যদের অপমান করা থেকেও নিষেধ করেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তোমরা তাদেরকে গালমন্দ করো না, আল্লাহ ছাড়া যাদেরকে তারা ডাকে, ফলে তারা গালমন্দ করবে আল্লাহকে, শত্রুতাপোষণ করে অজ্ঞতাবশত। এভাবেই আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য তাদের কর্ম শোভিত করে দিয়েছি। তারপর তাদের রবের কাছে তাদের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর তিনি জানিয়ে দেবেন তাদেরকে, যা তারা করত।’ –সুরা আনআম : ১০৮