অন্যান্য বছরের মতো এবারও বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ৫০০ মুসলিম ব্যক্তির তালিকা প্রকাশ করেছে জর্ডানভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘দ্য রয়েল ইসলামিক স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ সেন্টার।’
‘দ্য মুসলিম ৫০০: ৫০০ ইনফ্লুয়েনশিয়াল মুসলিমস ২০২৪’শীর্ষক ওই তালিকায় ‘ম্যান অব দ্য ইয়ার’বা বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হিসেবে উঠে এসেছেন মালয়েশীয় মুসলিম দার্শনিক সাইয়েদ মোহাম্মদ নাকীব আল আত্তাস ও ‘ওম্যান অব দ্য ইয়ার’তথা বর্ষসেরা নারী নির্বাচিত হয়েছেন সোমালিয়ার অষ্টম পররাষ্ট্রমন্ত্রী এডনা আদান ইসমাইল। তিনি একজন নার্স মিডওয়াইফ, অ্যাক্টিভিস্ট, ২০০৩ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সোমালিল্যান্ডের প্রথম নারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন।
তালিকায় প্রভাবশালী মুসলিম ব্যক্তিত্বদের শীর্ষে রয়েছেন ইয়েমেনি সুন্নি আলেম শায়খ হাবিব উমর বিন মোহাম্মদ বিন সালিম বিন হাফিজ। তিনি একজন শিক্ষক, দার আল-মুস্তাফা শিক্ষালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও ডিন।
এরপরই রয়েছেন সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আালি খামেনি। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামিদ আল-থানি। জর্ডানের রাজা বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ ইবনে আল হুসেইন। সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ান। তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রজব তাইয়েব এরদোগান।
পাকিস্তানের শরিয়া আদালতের সাবেক প্রধান বিচারপতি মুফতি মোহাম্মদ তাকি উসমানি। ইরাকের শিয়া নেতা আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলী হুসেইন আল-সিস্তানি। মরক্কোর ষষ্ঠ রাজা মোহাম্মদ। মধ্যপ্রাচ্যের ইসলামি ব্যক্তিত্ব শেখ সালমান আল-আওদা। সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান বিন আবদুল আজিজ আলে সৌদ। ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি জোকো উইদোদো। আল আজহার মসজিদের গ্র্যান্ড ইমাম শায়খ ডক্টর আহমদ মুহাম্মাদ আল-তাইয়েব।
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরো প্রধান ইসমাইল হানিয়া। ভারতের দাতব্য সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সভাপতি মাওলানা মাহমুদ মাদানি। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।
এর পর তালিকায় রয়েছেন- আমিরুল মুমিনিন শায়খ আস-সুলতান মোহাম্মদ সাদু আবুবকর- তৃতীয় সোকোটোর সুলতান। শায়খ আবদুল্লাহ বিন বায়াহ, মুসলিম সমাজে শান্তি প্রচার ফোরামের সভাপতি। ইয়াহইয়া সলিল স্তাকুফ, ইন্দোনেশিয়ার নদওয়াতুল উলামার চেয়ারম্যান। মিসরের রাষ্ট্রপতি আবদেল ফাত্তাহ সাইদ আল-সিসি।
মিসরের সাবেক গ্র্যান্ড মুফতি শায়খ আলী গোমা। শায়খ হাবিব আলি জাইন আল আবিদিন আল-জিফরি, দীন প্রচারক ও তাবাহের মহাপরিচালক। ড. ইব্রাহিম কালিন, তুর্কি জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক। শায়খ হামজা ইউসুফ হ্যানসন, জয়তুনা কলেজের শিক্ষক ও সহ-প্রতিষ্ঠাতা। শায়খ আহমদ তিজানি বিন আলী সিসি, তিজানিয়ার নেতা।
শায়খ মোস্তফা হুসনি, বিশিষ্ট দাঈ। সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ, হিজবুল্লাহর মহাসচিব। শায়খ আবদুল-আজিজ ইবনে আবদুল্লাহ আলে শায়খ, সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি। শেখ উসামা আল-সায়্যিদ আল-আজহারি, ইসলামিক স্কলার। আজারবাইজানের রাষ্ট্রপতি ইলহাম আলিয়েভ। শাহ করিম আল-হুসাইনি, আগা খান চতুর্থ, ইসমাইলি মুসলমানদের ৪৯তম ইমাম। আল-হাবিব লুৎফি বিন ইয়াহিয়া, ইসলাম প্রচারক। মাওলানা তারিক জামিল, পাকিস্তানের ইসলাম প্রচারক।
শায়খ মোহাম্মদ আল-ইয়াকুবি, স্কলার। অধ্যাপক সাইয়্যেদ হোসেন নাসর দার্শনিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। রাষ্ট্রপতি সামিয়া সুলুহু হাসান, তানজানিয়া। শায়খ উসমান তাহা, ক্যালিওগ্রাফার। শায়খ আব্দুল মালিক আল-হুথি, হুথি নেতা। শেখ রাচেদ ঘন্নুচি, তিউনিসিয়ান রাজনীতিবিদ। মোহাম্মদ সালাহ ফুটবলার। শায়খ মুক্তাদা আল সদর, ইরাকের রাজনীতিবিদ। মাওলানা নাজুরুর রহমান, তাবলিগ জামাতের আমির, পাকিস্তান।
ড. টিমোথি উইন্টার (শায়খ আবদাল হাকিম মুরাদ) স্কলার। শায়খ ইব্রাহিম সালচ, স্কলার। তালেবান নেতা মোল্লা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা। দাওয়াতে ইসলামি আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা শায়খ মুহাম্মদ ইলিয়াস আত্তার কাদিরি। ড. সৈয়দ মোহাম্মদ নকীব আল-আত্তাস। ডা. আমর খালেদ, ইসলাম প্রচারক। অধ্যাপক মোস্তফা আবু জর, শিক্ষাবিদ।
তালিকায় সর্বমোট ৫০০ জনের নাম ওঠে এসেছে। তার মধ্যে প্রথম সারির ৫০ নাম এখানে উল্লেখ করা হলো।
তালিকায় ‘ম্যান অব দ্য ইয়ার’বা বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব সাইয়্যেদ মুহাম্মদ নাকিব আল আত্তাস ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৩১ জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন মালয়েশীয় মুসলিম দার্শনিক।
আর‘ওম্যান অব দ্য ইয়ার’তথা বর্ষসেরা নারী নির্বাচিত হয়েছেন- সোমালিয়ার অষ্টম পররাষ্ট্রমন্ত্রী এডনা আদান ইসমাইল। তিনি হারগেইসার এডনা আদান ম্যাটারনিটি হাসপাতালের পরিচালক এবং প্রতিষ্ঠাতা। ফিস্টুলা ফাউন্ডেশনের সিইও কেট গ্রান্ট তাকে ‘মুসলিম মাদার তেরেসা’বলে অভিহিত করেছেন। ২০১৮ সালে, তাকে লন্ডন সাউথ ব্যাংক ইউনিভার্সিটি থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট প্রদান করা হয়। ২০২৩ সালে তিনি টেম্পলটন পুরস্কারে ভূষিত হন।
বর্তমান বিশ্বে প্রভাবশালী ধর্মগুলোর অন্যতম হলো- ইসলাম। বিশ্বজুড়ে এ ধর্মের অনুসারী তথা মুসলিমের সংখ্যা আড়াইশ কোটিরও বেশি, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক চতুর্থাংশ। দেশ, জাতি ও গোষ্ঠী পৃথক পৃথক হলেও তারা সবাই এক উম্মাহ তথা বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের অংশ।
বিশ্বে মোট ৫৬টি মুসলিমপ্রধান দেশ রয়েছে। বর্তমানে বিশ্বে মোট জনসংখ্যার প্রায় ২০ শতাংশ এশিয়ায় বসবাস করে।