পবিত্র রমজানের মধ্যেই হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে মুক্তি দেয়ার দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে সংগঠনটি।
বুধবার (১৩ মার্চ) গণমাধ্যমে দলটি একটি বিবৃতি পাঠান।
বিবৃতিতে কারামুক্ত ওলামায়ে কেরাম ও নেতৃবৃন্দ বলেছেন, মাওলানা মামুনুল হক একজন নায়েবে রাসুল ও দেশের শীর্ষ আলেম। একজন হাফেজে কুরআন ও শায়খূল হাদীস। মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় আজ তিন বছর যাবৎ কারাগারে বন্দি। তাকে সকল সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তার প্রতি রাষ্ট্রযন্ত্র চরম অবিচার করছে। নাগরিক হিসেবে তার আইনী ও মানবাধিকার হরণ করা হচ্ছে।
তারা বলেন, দেশে শীর্ষ দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, হত্যা ও নারী ধর্ষণ মামলা সহ অনেক গুরুতর মামলার আসামিরা সহজে জামিন পায় , অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দও এ ধরণের মামলায় দ্রুত বের হয়ে যায়। অথচ মাওলানা মামুনুল হক মুক্তি পায় না। তিনি প্রতিনিয়ত ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কোন কারণে মাওলানা মামুনুল হকের জামিন হচ্ছে না দেশবাসী তা জানতে চায়।
নেতৃবৃন্দ বলেন, দীর্ঘ তিন বছর যাবত মিথ্যা মামলায় কারাগারে বন্দী আছেন শায়খূল হাদীস মাওলানা মামুনুল হক। অতি সাধারণ মামলায় তাঁকে এত দীর্ঘ সময় কারাগারে রাখা মারাত্মক অন্যায়। তিনি দীর্ঘ সময় কারাভোগ করে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন। তার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাঁর সন্তানেরা পিতৃ স্নেহ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাঁর ছোট ছোট সন্তানগুলো বাবার অপেক্ষায় থাকতে থাকতে আজ দিশেহারা। তাঁর ছাত্ররাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে হাদীসের দরস থেকে। এসব পরিস্থিতিতে দেশের ওলামায়ে কেরাম, ছাত্রজনতা, ভক্ত অনুরক্তদের মধ্যে চরম ক্ষোভ তৈরি করেছে। যে কোনো সময় তার বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। একজন মুহাদ্দিসের এহেন মানবেতর জীবন দেখে তৌহিদী ছাত্র জনতার মাঝেও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে।
বিবৃতিতে কারামুক্ত নেতৃবৃন্দ আর ও বলেন, মাওলানা মামুনুল হকসহ কারাবন্দি আলেমেদের মুক্তির দাবিতে ইতিপূর্বে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেশের শীর্ষ উলামায়ে কেরাম সাক্ষাৎ করেছিলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাদের দ্রুত মুক্তি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। অথচ আজ এক বছরের অধিক সময় অতিবাহিত হলেও আমরা এর কোনো কার্যকারিতা দেখছিনা। সর্বশেষ গত১১ মার্চ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে আলেমদের একটি শীর্ষস্থানীয় প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করেছেন। তারা আসন্ন ঈদের পূর্বেই মাওলানা মামুনুল হকের মুক্তি দাবি জানিয়েছেন। আমরা রমজানের মধ্যেই মাওলানা মামুনুল হকের মুক্তি চাই। অন্যথায় যে কোনো কঠিন পরিস্থিতির জন্য সরকারকেই দায়ী হতে হবে।
কারামুক্ত উলামায়ে কেরাম ও নেতৃবৃন্দের মধ্যে বিবৃতি দাতারা হলেন- মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, ড. আহমদ আব্দুল কাদের, মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী, মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, মাওলানা মনির হোসাইন কাসেমী, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মুফতি হারুন ইজহার, মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, মাওলানা নাসির উদ্দীন মুনীর, মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, মাওলানা মুফতি বশির উল্লাহ, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, মাওলানা নূর হোসাইন নূরানী, মাওলানা হাবিবুল্লাহ মাহমুদ কাসেমী, মাওলানা কোরবান আলী কাসেমী, মুফতী শরাফত হোসাইন, মুফতি ফখরুল ইসলাম, মুফতি আজহারুল ইসলাম, মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়জি, মুফতি আমির হামজা, মাওলানা গাজী ইয়াকুব ওসমানী, মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী, মুফতি শরীফ উল্লাহ, মাওলানা এহসানুল হক, মাওলানা হাফেজ এহতেশামুল হক সাখী, মাওলানা শরিফ হুসাইন, মাওলানা আহমদুল্লাহ, মাওলানা হাফেজ সানাউল্লাহ, মাওলানা আসাদুল্লাহ, মাওলানা ইন'আমুল হাসান ফারুকী, মাওলানা মঞ্জুরুল হাসান নাদিম প্রমুখ।