লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ইউনিয়নের হাজীপাড়া গ্রামে অবস্থিত মসজিদটি ৫০০ বছরের পুরোনো; এর নির্মাণশৈলী তা প্রমাণ করে বলে এলাকাবাসীর ধারণা।
স্থানীয়দের তথ্য মতে, মোঘল আমলে ওই এলাকায় মুসলমানদের সংখ্যা কম থাকায় তিন গম্বুজবিশিষ্ট এক কাতারের মসজিদটি তৈরি করা হয়। সে কারণে এই মসজিদ ‘এক কাতার’ মসজিদ নামেই এলাকায় বেশি পরিচিত।
মসজিদের ভেতরে নামাজের জন্য একটিমাত্র কাতার হওয়ায় ১০ থেকে ১২ জনের বেশি একসঙ্গে জামাতে নামাজ আদায় করতে পারেন না। জায়গা সংকুলানের জন্য বেশি সমস্যা হয় জুমার দিন। তবে কেন এত ছোট মসজিদ বানানো হয়েছিল, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা দিতে পারেননি স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, মাছের কাঁটা আর ঝিনুকের খোসা দিয়ে প্রাচীন এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। এখনো দেওয়ালে ইট কিংবা সিমেন্টের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। দেয়ালে হাঁতুড়ি দিয়ে আঘাত করলে আগুনের ফুলকির মতো বের হয়। মসজিদের বাম পাশে একটি প্রাচীন কবর রয়েছে। অনুমান করা হয়, কবরটি মসজিদের নির্মাতার। আর ডানপাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে শিয়া সম্প্রদায়ের দাহা, যার দেওয়ালের প্রতিটি অংশে দেখা যায় প্রাচীন কারুকাজ। এছাড়া মসজিদের সামনে রয়েছে আরো দুটি কবর। মসজিদটি প্রাচীন স্মৃতি বহন করলেও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কেউ আজও যায়নি সেখানে। তবে মসজিদটি দেখতে বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষজন আসেন রোজ।
কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজু জানান, হাজীপাড়া গ্রামের 'এক কাতার' মসজিদটি প্রাচীনতম একটি মসজিদ। মসজিদটি একনজর দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা ছুটে আসেন। সরকার এই তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটির সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিলে পরবর্তী প্রজন্ম এই প্রাচীন স্মৃতি সম্পর্কে জানতে পারবে৷ তার দাবি, লালমনিরহাটে অবস্থিত ইসলাম প্রচারের প্রাচীনতম নিদর্শনগুলো সংরক্ষণ এবং পরিকল্পিতভাবে সংস্কারের ব্যবস্থা গ্রহণে প্রত্নত্তত্ব অধিদফতরের সুদৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।