দুই মুসলিম নারীর দায়ের করা মামলা নিষ্পত্তির জন্য এক কোটি ৭৫ লাখ বা পৌনে দুই কেটি ডলার দিতে সম্মত হয়েছে নিউইয়র্ক পুলিশ। মামলায় ওই নারীরা অভিযোগ করেছিল, পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে তাদের হিজাব অপসারণে বাধ্য করেছিল, যার মাধ্যমে তাদের অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।
২০১৮ সালে জামিলা ক্লার্ক এবং আরওয়া আজিজ নামে ওই দুই নারীকে গ্রেফতার করে নিউইয়র্ক পুলিশ। এরপর ছবি তোলার জন্য তাদের হিজাব অপসারণ করতে বাধ্য করা হয়। এক্ষেত্রে তাদের গোপনীয়তার অধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। মার্কিন আইনজীবীরা বলছেন, আইনি ফি এবং অন্যান্য খরচ বাদ দেওয়ার পরও ক্ষতিপূরণের এক কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার অবশিষ্ট থাকবে। যারা একই ধরনের নিপীড়নের শিকার হয়েছেন এমন প্রায় তিন হাজার ৬০০ জন নারী-পুরুষের মধ্যে এ অর্থ ভাগ করে দেওয়া হবে।
ক্লার্ক এবং আজিজের আইনজীবী অ্যালবার্ট ফক্স কান বলেন, এই ঘটনা একটি শক্তিশালী বার্তা দেয় যে, নিউইয়র্ক পুলিশ নিউইয়র্কবাসীর অধিকার লঙ্ঘন করতে পারে না। যদিও পুলিশের দাবি ছিলো, সুরক্ষা আদেশ লঙ্ঘনের দায়ে ওই দুই নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছিলো। কিন্তু ওই দুই নারী জানান, হেনস্থার উদ্দেশ্যেই তাদের গ্রেফতার করেছিলো পুলিশ।
মামলার রায় দেওয়ার পর জামিলা ক্লার্ক এক বিবৃতিতে বলেন, যখন তারা আমাকে আমার হিজাব খুলে ফেলতে বাধ্য করেছিল, তখন আমার মনে হয়েছিল, যেন আমি নগ্ন। আমি নিশ্চিত নই, এই শব্দগুলো বিষয়টি বুঝাতে সক্ষম হচ্ছে কিনা যে, আমি নিজেকে কতটা উন্মুক্ত মনে করেছি। আজ এ কারণেই আমি খুব গর্বিত যে হাজার হাজার নিউইয়র্কবাসীর জন্য ন্যায়বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করতে পেরেছি।
নিউইয়র্ক আইন বিভাগের মুখপাত্র নিকোলাস পাওলুচি বলেন, এর ফলে এনওয়াইপিডির একটি ইতিবাচক সংস্কার হয়েছে। মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি পুলিশের সম্মান দেখাতে হবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন ইহুদিদের পরচুলা বা ইয়ারমুলক এবং শিখদের পাগড়িসহ অন্যান্য ধর্মীয় পোশাক পরার ক্ষেত্রে আরও বেশি স্বাধীনতা পাওয়া যাবে।
মার্কিন আইন বলছে, পুলিশ অস্ত্র বা নিষিদ্ধ জিনিসের সন্ধানের জন্য অস্থায়ীভাবে কারো মাথার আবরণ সরিয়ে ফেলতে পারে, তবে সেক্ষেত্রে একই লিঙ্গের কর্মকর্তাদের দ্বারা তা করতে হবে। মার্কিন ইসলামিক রিলেশন কাউন্সিলের নিউইয়র্কের নির্বাহী পরিচালক আফাফ নাশের বলেন, আমরা সেই মুসলিম নারীদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা জানাই যারা সাহসিকতার সঙ্গে এই মামলায় অটল থেকেছেন।