মক্কার মসজিদে হারাম ও মদিনার মসজিদে নববিতে জুমার খুতবা সংক্ষিপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে ও তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে চলতি গ্রীষ্মের শেষ পর্যন্ত এই নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হয়েছে।
নতুন নির্দেশনায় শুক্রবারের জুমার নামাজের প্রথম ও দ্বিতীয় আযানের মধ্যবর্তী সময়ও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। শনিবার (২২ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মসজিদে হারাম ও নববিতে জুমার নামাজের আগে নির্ধারিত খুতবা চলমান গ্রীষ্ম মৌসুমের শেষ পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত করে কয়েক মিনিটের মধ্যে শেষ করতে হবে। মূলত মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে দেশ-বিদেশের আগত মুসল্লিদের সুরক্ষার কথা চিন্তা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রাজকীয় নির্দেশে জুমার খুতবা এবং নামাজের সময়কাল ১৫ মিনিটে নামিয়ে আনা হবে বলে সৌদি আরবের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন। এই নির্দেশনা পালন গত শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে এবং গ্রীষ্মের শেষ অবধি এটি অব্যাহত থাকবে। আগে জুমার খুতবা সাধারণত ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট স্থায়ী হতো।
দুই পবিত্র মসজিদের ধর্মীয় বিষয়ক প্রেসিডেন্সির প্রধান আবদুর রহমান আস-সুদাইস বলেছেন, এই পদক্ষেপটি মুসল্লিদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা রক্ষায় সৌদি নেতাদের আগ্রহকেই তুলে ধরছে।
এ ছাড়া নির্দেশনাটি জুমার নামাজের জন্য প্রথম আজানকেও বিলম্বিত করবে। শুক্রবার জুমার নামাজে প্রথম আজান এবং দ্বিতীয় আজানের মধ্যে সময়কাল ১০ মিনিটে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন
কাবা দেখার আনন্দ বর্ণনাতীত: মুহাম্মদ ফারাহ
হজের আগেও মক্কা-মদিনার ইমাম-খতিবদের প্রচণ্ড গরমে হজযাত্রীদের পরিস্থিতি বিবেচনায় হজের মৌসুমে জুমার খুতবা ও নামাজ সংক্ষিপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। মূলত লাখ লাখ হজযাত্রীর বিভিন্ন পবিত্র স্থান পরিদর্শন এবং মক্কা ও মদীনায় তীব্র গরমের কারণে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সৌদি কর্তৃপক্ষ।
সৌদি ন্যাশনাল সেন্টার ফর মেটিওরোলজি (এনসিএম) শনিবার থেকে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত দেশটির বেশিরভাগ অংশে তাপমাত্রা বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে। বলা হচ্ছে, এ সময় তাপমাত্রা ৪৮-৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে।
মক্কা, মদিনা, পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ এবং রিয়াদে এই সপ্তাহে অত্যন্ত বেশি গরম আবহাওয়া অব্যাহত থাকবে বলেও জানানো হয়েছে।
ঐতিহ্যগতভাবে, মক্কা এবং এর আশপাশে হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার পরে অনেক হজযাত্রী ইসলামের দ্বিতীয় পবিত্রতম মসজিদ মসজিদে নববিতে নামাজ আদায় করতে পবিত্র শহর মদিনায় ছুটে যান। এই মসজিদে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর রওজা শরিফ রয়েছে, যেখানে নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) শায়িত আছেন।
এমন অবস্থায় সৌদি কর্তৃপক্ষ বারবার হজযাত্রীদের হাইড্রেটেড থাকার এবং হিট স্ট্রোক এড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে। এছাড়া মুসল্লিদের পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল পান করার, সূর্যের সরাসরি তাপ এড়িয়ে চলার, ছাতা ব্যবহার এবং ছায়াযুক্ত স্থানে নামাজ পড়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।