বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) দিবাগত রাতে শবে বরাত। মহিমান্বিত রাত হিসেবে মুসলিম সমাজে শবে বরাতের গুরুত্ব অনেক। আল্লাহতায়ালার দরবারে কৃত পাপরাশির জন্য ক্ষমা প্রার্থনার পাশাপাশি রাতটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে পালন করেন এবং পরের দিন নফল রোজা রাখেন।
কিন্তু করোনাভাইরাসের আশু ক্ষতি থেকে বাঁচতে বর্তমানে দেশের অনেক জায়গা লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এমনকি মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জামাতে সীমিত উপস্থিতির পরামর্শ দিয়েছেন দেশের শীর্ষ আলেমরা। এমতাবস্থায় একাকী শবে বরাতের যাবতীয় আমল ঘরে করা উচিত বলে অভিমত দিয়েছেন হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক ও হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী।
বুধবার (৮ এপ্রিল) রাতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রচার সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ আনাস মাদানী কর্তৃক গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
আল্লামা শফী বলেন, শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে সহিহ ইবনে হিব্বানের হাদিসে এসেছে, ‘অর্ধ শাবানের রাতে আল্লাহতায়ালা আপন সৃষ্টির প্রতি বিশেষভাবে মনোনিবেশ করেন। অতঃপর মুশরিক ও (মুসলিম ভাইয়ের সঙ্গে) শত্রুতা পোষণকারী ছাড়া সমস্ত মাখলুককে ক্ষমা করে দেন।’
তাই এই রাতে জেগে থেকে অধিক পরিমাণে আমল করা দরকার। বিশেষ করে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাসহ সকল রোগ থেকে মুক্তির জন্য দোয়া করা।
দেশের শীর্ষ এই আলেম বলেন, শবে বরাতে একাকী ইবাদত করা হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সহিহ হাদিস ও সাহাবিদের আমল থেকে প্রমাণিত। তাই এ রাতে বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত, কৃত গোনাহ থেকে তওবা, আল্লাহতায়ালার দরবারে কায়মনোবাক্যে ক্ষমা প্রার্থনা করার পাশাপাশি জিকির-আজকার, দান-সদকা করুন সাধ্যমতো। পরিবার-পরিজনকে দ্বীনি কাজে বেশি বেশি সম্পৃক্ত করুন।
বিবৃতিতে আল্লামা আহমদ শফী আরও বলেন, শবে বরাতকে কেন্দ্র করে আমাদের দেশে বেশ কিছু কুসংস্কার চালু রয়েছে। অনেকে হালুয়া-রুটির ব্যবস্থা ও মসজিদ আলোকসজ্জা করে থাকেন। নির্দিষ্ট সূরা দিয়ে নফল নামাজ পড়াকে আবশ্যক আমল মনে করেন। এসব বিদআত। অনেকে আবার শবে বরাত বলে বিছু নেই বলে বাড়াবাড়ি করেন। আমরা মনে করি, শবে বরাত বিষয়ে বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়িতে না গিয়ে নিজ নিজ ঘরে একাকী ইবাদতের মাধ্যমে শবে বরাত পালন করা উচিত।