ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট প্রসঙ্গে একটি জরিপের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, সাধারণ ছুটিতে দেশের ৯৫% মানুষ উপার্জনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৫১% মানুষের পরিবারে কোনো আয় হয়নি। দৈনিক মজুরির ওপর নির্ভরশীল ও স্বল্পআয়ের ৬২% মানুষ চাকরি বা উপার্জনের সুযোগ হারিয়েছে। মানুষের জীবিকার এই চরম সঙ্কটের মুহূর্তে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনিতে ১১ লাখ ৫ হাজার মানুষকে অন্তর্ভু‚ক্ত করা হবে বলে বাজেটে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৫ লাখ বয়স্ক ভাতা, সাড়ে তিন লাখ বিধবা ভাতা ও ২ লাখ ৫৫ হাজার প্রতিবন্ধী ভাতা। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ৯৫ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যা বাজেটের ১৬.৮৩ ও জিডিপির ৩.১১%। চলতি অর্থবছরে যা ছিলো ৮১ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া ৫০লাখ মানুষকে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করা হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
সোমবার (১৫ জুন) এক অডিও বার্তায় মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির এই প্রস্তাবনায় করোনা সৃষ্ট পরিবেশকে আমলে নেওয়া হয়নি। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনিতে যে ১১ লাখ ৫ হাজার জনকে অন্তর্ভু‚ক্ত করা হয়েছে- এই বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধীরা এতদিন রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার আওতায় ছিলো না। করোনার এই সময়ে আগে থেকেই অভাবীদের অন্তর্ভুক্তকে করোনার প্রভাব থেকে মানুষকে রক্ষার পদক্ষেপ হিসেবে উপস্থাপন করে মানুষকে বোকা বানানো হচ্ছে। বাজেটে ঘোষিত সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনিতে করোনায় নতুন করে দরিদ্র সীমায় নেমে যাওয়া মানুষের জন্য কোনো কিছু বলা হয়নি।
তিনি বলেন, ৫০ লাখ মানুষকে নগদ অর্থ দেওয়ার ঘোষণা স্রেফ রাজনৈতিক আশ্বাস। করোনার কারণে যেখানে কোটি কোটি মানুষ দরিদ্র সীমার নিচে চলে গেছে, যেখানে এই নগদ অর্থ দিয়ে কিছু সংখ্যক মানুষের হয়তো ১০ দিনের বাজার হবে, এটাতো দান-দক্ষিণার মতো। রাষ্ট্রের কাছে মানুষ দান-দক্ষিণা চায় না। তারা ঘুরে দাঁড়ানোর যথার্থ কৌশল ও সহায়তা চায়। সেক্ষেত্রে বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা প্রস্তাব সম্পর্কে কিছুই বলা হয়নি।
ফয়জুল করীম আরও বলেন, করোনার এই সময়ে মানুষের প্রধান উৎকন্ঠা যেখানে জীবন ও জীবিকা সেখানে বাজেটে মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষার কোনো সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা নাই। বরং কল্পনাপ্রসূত ঋণনির্ভর একটি অসম ঘাটতি বাজেট প্রস্তাব করে মানুষের জীবন-জীবিকার বিষয়টি প্রকারান্তরে উপেক্ষা করা হয়েছে।