বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে অনেক জল্পনা-কল্পনার পর গত জুনে শুধুমাত্র সৌদি আরবে বসবাসকারী দেশটির নাগরিক ও বিদেশিদের হজে অংশগ্রহণের অনুমতি দিয়েছে। বর্হিবিশ্বের কেউ এবারের হজে অংশ নিতে পারবেন না। সে হিসেবে প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশি হজযাত্রীরা হজপালনের সুযোগ পাচ্ছেন না।
এমতাবস্থায় বাংলাদেশ থেকে হজপালনের জন্য প্রাক-নিবন্ধিত ও নিবন্ধিত ব্যক্তিদের জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয় আটটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। সিদ্ধান্তে জানানো হয়েছে, ২০২০ সালে হজপালনের জন্য যাদের প্রাক-নিবন্ধনের মেয়াদ বৈধ ছিল তা ২০২১ সালের জন্য বহাল থাকবে।
রোববার (১২ জুলাই) মন্ত্রণালয়ের হজ অনু-বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাগুলো হলো-
১. ২০২০ সালে হজপালনের জন্য যাদের প্রাক-নিবন্ধনের মেয়াদ বৈধ ছিল তা ২০২১ সালের জন্য বহাল থাকবে।
২. সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনায় যেসব প্রাক-নিবন্ধিত ব্যক্তি ২০২০ সালে হজে যাওয়ার জন্য চূড়ান্ত নিবন্ধন করেছিলেন তা ২০২১ সালের জন্য বৈধ থাকবে। নিবন্ধনকারী হজযাত্রীদের জমাকৃত টাকা ২০২১ সালের প্যাকেজ মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।
৩. ২০২০ সালের হজযাত্রী নিবন্ধন বাতিল বিষয়ে ই-হজ সিস্টেমের ওপর সকল ব্যাংকের প্রতিনিধি, নিবন্ধন কেন্দ্রের প্রতিনিধি এবং নিবন্ধনকারী এজেন্সির প্রতিনিধিদের ১৩ জুলাই থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। হজপালনের জন্য সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী নিবন্ধন বাতিল করতে চাইলে হজ পোর্টালে বা নির্দিষ্ট লিংকে নিজে বা নিবন্ধন কেন্দ্র থেকে আবেদন করতে পারবেন।
৪. বাতিলের আবেদন অনুমোদিত হলে হজযাত্রীর অনুকূলে নিবন্ধন বাতিল ভাউচার তৈরি হবে এবং ২০২০ সালের নিবন্ধন ও প্রাক-নিবন্ধন দুটোই বাতিল হয়ে যাবে। ভবিষ্যতে তিনি হজে যেতে চাইলে নতুনভাবে প্রাক-নিবন্ধন ও নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন বাতিলকারী ব্যক্তিকে কোনো ধরনের কর্তন ব্যতীত তার প্রাক-নিবন্ধন ও নিবন্ধনের টাকা ফেরত দেওয়া হবে।
৫. সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ নিবন্ধন বাতিলকারী ব্যক্তির ক্ষেত্রে সোনালী ব্যাংক থেকে প্রাক-নিবন্ধন ও নিবন্ধনের জন্য জমাকৃত সমুদয় অর্থ অনলাইনে সরাসরি হজযাত্রীর অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হবে। কোনো হজযাত্রীর ব্যাংক হিসাব না থাকলে তার ইচ্ছা অনুযায়ী পে-অর্ডারের মাধ্যমে পরিশোধ করা হবে। এ জন্য তাকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে নিবন্ধন বাতিল ভাউচার ও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদর্শন করতে হবে।
৬. বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের ক্ষেত্রে নিবন্ধনের জন্য জমাকৃত সমুদয় অর্থ হজযাত্রীর ইচ্ছা অনুযায়ী সরাসরি নিবন্ধনকারী ব্যাংক থেকে অনলাইনে হজযাত্রীর অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর অথবা এজেন্সির মাধ্যমে প্রদান করা হবে। একেক নিবন্ধনের জন্য জমাকৃত অর্থ পূর্বের মতো পরিচালক (হজ অফিস, ঢাকা) থেকে হজযাত্রীর ইচ্ছা অনুযায়ী সরাসরি তাকে অথবা এজেন্সির মাধ্যমে ফেরত দেওয়া হবে।
৭. নিবন্ধিত হজযাত্রীদের ক্ষেত্রে নিবন্ধনের সময় জমাকৃত অর্থ কোনো অবস্থাতেই বাংলাদেশে ব্যয় করা যাবে না এবং সৌদি আরবেও পাঠানো যাবে না। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ব্যতীত কোনো এজেন্সি ব্যাংক থেকে এই টাকা তুলতে পারবে না। ২০২০ সালে নিবন্ধনকারী হজযাত্রীদের জমাকৃত টাকা ২০২১ সালের প্যাকেজ মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।
৮. ২০২০ সালে নিবন্ধনকারী হজযাত্রীদের জমাকৃত টাকা যেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া কোনো এজেন্সি তুলতে না পারে সেজন্য হজযাত্রী নিবন্ধনকারী সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপকদের দৃষ্টি রাখার জন্য অনুরোধ করা হলো। ব্যাংক কর্মকর্তারা হজ নিবন্ধন বাতিলকারীর অর্থছাড় করার আগে যাত্রীদের পরিচয়পত্রের সঙ্গে ভাউচার নিশ্চিত করে নেবেন।