আমরা অনেকেই প্রতিদিন ভাত খাওয়া এড়িয়ে যায়। কারণ ভাত ওজন বাড়িয়ে দেয়। সাদা চালের ভাত উপমহাদেশের সর্বাধিক প্রচলিত। সাদা এবং চকচকে করার জন্য এটি প্রক্রিয়াজাত এবং পোলিশিংও করা হয়ে থাকে। তবে বাদামি, লাল এবং কালো চাল সাদা চালের চেয়ে তুলনামূলকভাবে স্বাস্থ্যকর। এগুলোর বহুবিধ স্বাস্থ্য উপকারিতাও রয়েছে।
চালের প্রকারভেদ অনুযায়ী স্বাস্থ্য উপকারিতা-
ধান থেকে খোসা ছাড়িয়েই যে চাল পাওয়া যায় সেগুলোই মূলত ব্রাউন রাইস বা বাদামী চাল। বাদামী চালের ভাত সাদা চালের ভাতের চেয়ে বেশি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। সাম্প্রতি বাংলাদেশসহ ভারতীয় উপমহাদেশের দেশগুলোতে মানুষ সাদা চালের তুলনায় বাদামী চাল বেশি খাচ্ছে। ফলে বাদামী চাল বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। ব্রাউন রাইস সহজেই ভেঙে যায়। ফলে এটি সাবধানে রান্না করতে হয়। গবেষণা অনুসারে, প্রতিদিন এক কাপ বাদামী চালের ভাত খেলে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি ৬০% পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে।
লাল চালের রঙ অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং অ্যান্টোসায়ানিন নামক যৌগ থেকে আসে। যা লাল এবং বেগুনি রঙের শাকগুলোতে পাওয়া যায়। লাল চালের ভাতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং আয়রন থাকে। ফলে এটি প্রদাহ কমায়, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে এবং উচ্চ রক্তচাপ হ্রাস করতেও সহায়তা করে। লাল চালের ভাত হজম করতে বেশি সময় লাগে বলে ক্ষুধা যন্ত্রণা নিয়ন্ত্রণ করে। যা ওজন হ্রাসেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই চাল দেখতে লালচে বাদামী বর্ণের তবে রান্না হওয়ার পরে গোলাপী রঙ ধারণ করে।
কালো চাল 'নিষিদ্ধ' ধান হিসাবে পরিচিত। এটি বহু শতাব্দী ধরে চীনা খাবারের অংশ। এবং এই চাল কেবল রাজপরিবারের জন্য সংরক্ষিত ছিল। কালো চাল ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস, ফাইটোনিট্রিয়েন্টস, ফাইটোকেমিক্যালস, ভিটামিন-ই, প্রোটিন, আয়রন সমৃদ্ধ। ফলে এটি ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমায়। এই চাল দেখতে জেট কালো রঙের তবে রান্না করার পরে বেগুনি রঙের হয়। কালো চালের ভাতে প্রায় ১৬০ রকমের ক্যালরি থাকে। যা অন্যান্য চালের তূলনায় অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর।
উপমহাদেশে সর্বাধিক প্রচলিত ও বহুল ব্যবহৃত হয় সাদা চালের ভাত। সাদা চাল উচ্চস্তরের পরিশোধনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়। ফলে থায়ামিন, ভিটামিন-বি এর মতো অন্যান্য কিছু প্রয়োজনীয় পুষ্টি হারাতে হয়। সাদা চালের ভাতে পুষ্টি কম। তবে এটি শক্তির ভাণ্ডার। এতে স্টার্চের ঘনত্বের কারণে যে কোনও চালের চেয়ে দেহে বেশি শক্তি দেয়।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া