একটি অপরিচিত সবজি হিসেবে অনেকেই বিট খেতে পছন্দ করেন না। কিন্তু পুষ্টিবিদরা বিটের উপকারিতাকে বিবেচনায় নিয়ে এটি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। অনেকের কাছেই বিট একটি অপরিচিত সবজির নাম। বর্তমানে ধীরে ধীরে এটি সুপার ফুড হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিটের বৈজ্ঞানিক নাম ‘বেটা ভালগারিস’।
যদিও এটিও একটি শীতকালীন সবজি তারপরও সারাবছরই এর দেখা পাওয়া যায়। একে দেখতে কিছুটা কালচে লাল রঙ বিশিষ্ট কন্দযুক্ত পেয়াজের মতো মনে হয়। পদ্ধতিভেদে একে অনেকে নানাভাবে গ্রহণ করে থাকে। সামান্য অদ্ভুত দেখতে হলেও এর উপকারি দিকসমূহকে অগ্রাহ্য করা সম্ভব নয়।
বিটের স্বাস্থ্য উপকারিতা
১.ক্যান্সার প্রতিরোধে
ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করতে বিটের জুস অত্যন্ত উপকারী। এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান যা ক্যান্সার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। এটি গাঢ় লাল হওয়ার জন্য ব্যটালাইনস নামক পদার্থ দায়ী যা ক্যাসার সৃষ্টিকারী ক্ষতিগ্রস্ত কোষের হাত থেকে সুস্থ কোষগুলোকে রক্ষা করে।
২.মাসিকের সমস্যা দূর করে
অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা সমাধানে বিট খুবই উপকারে আসে। এতে থাকা আয়রণ নতুন লোহিত কণিকা তৈরিতে সক্ষম। এর ফলে মাসিকের সময় হওয়া সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৩. হাড় মজবুত করে
এটি শরীরে ক্যালসিয়াম ধরে রাখতে পারে বলে হাড়ের সমস্যা সমাধানে এটি বহুল প্রচলিত। এর হাড়কে মজবুত রাখার সক্ষমতা রয়েছে ফলে বেশি বয়সে হাড়ের সমস্যায় ভুগতে হয় না।
৪. মানসিক সমস্যায়
মন ভালো রাখতে বিটের সরবত খেয়ে দেখতে পারেন। এতে থাকা বিটেইন ও ট্রিপটোফোন নামক উপাদানে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার সক্ষমতা রয়েছে। ফলে মানসিক অবসাদ বা ডিপ্রেশনের ঝুঁকি হ্রাস পায়।
৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
বিটের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট থাকে। একটি গবেষণা অনুযায়ী নিয়মিত বিটের জুস পান করলে অক্সিজেন গ্রহণের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। বিটে থাকা হাই অক্সিডেন্টের ফলে শরীর থেকে টক্সিন উপাদান বের হয়ে যায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
৬. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে তাদের প্রতিদিন অন্ততত দুই গ্লাস করে বিটের জুস পান করা উচিত। বিটে রয়েছে নাইট্রেট নামক উপাদান যা শরীরের রক্ত সঞ্চালন ব্যবস্থা স্বাভাবিক রেখে উচ্চ রক্তচাপ তথা স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
৭. ত্বকের উন্নতি
প্রতিদিন এক গ্লাস বিটের জুস উজ্জ্বল ত্বক লাভে সাহায্য করে। এতে রয়েছে অ্যান্টি এজিং উপাদান যা ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে সহায়তা করে।
৮.পরিপাকতন্ত্রের উপকার
বিট আমাদের পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এতে বেটাইন নামে এক উপাদান আছে যা লিভার ফাংশনকে ভালো রাখে। এছাড়াও এটি বদহজম, ডায়রিয়া, জন্ডিসসহ অন্যান্য পেটের সমস্যায় অত্যন্ত উপকারী।
এছাড়া শরীর সুস্থ ও সতেজ রাখতে রোজ শরীর চর্চার পাশাপাশি চিকিৎসকরা বিটের রস পান করার পরামর্শ দেন।