অতিরিক্ত লবণ খেলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনেক আগেই বলে দিয়েছে সুস্থ থাকার জন্য প্রত্যেক দিন পাঁচ গ্রামের বেশি লবণ খাওয়া উচিত নয়। অনেক সময় রান্নায় কম লবণ দিলেও সেই মাত্রা পেরিয়ে যায়। সারাদিনে আমরা এমন অনেক খাবার খাই যাতে এমনিই বাড়তি লবণ দেয়া থাকে। বিশেষ করে যারা চিপস, ভাজাপোড়া বা অন্য জাঙ্ক ফুড খান তাদের শরীরে লবণ বেশি পরিমাণে যায়।
লবণ স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। অতিরিক্ত লবণ যেমন খাবারকে বিস্বাদ করে তোলে তেমনই ক্ষতি করে শরীরেরও। উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের সমস্যা, কিডনির সমস্যাসহ নানা অসুখ লবণের হাত ধরেই বাসা বাঁধে শরীরে।
প্রত্যেক দিনের খাবারে লবণের মাত্রা প্রয়োজনের চেয়ে একটু বেশি হলে সেটাও স্বাস্থ্যের পক্ষে যথেষ্ট ক্ষতিকর। ‘ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস’ এর গবেষণা বলছে, যাদের খাবারে লবণের পরিমাণ বেশি থাকে তাদের অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ২৮ শতাংশ বেড়ে যায়।
বেশি পরিমাণে সোডিয়াম এবং তুলনায় কম পরিমাণে পটাশিয়াম খেলে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা দেয়। প্রত্যেক দিনের সোডিয়ামের পরিমাণে ৫ গ্রাম বেঁধে দিলে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে হৃদ্রোগ, স্ট্রোক এবং কিডনির সমস্যা কমে যেতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতিদিনের খাবারে লবণের পরিমাণ কমালে প্রত্যেক বছর প্রায় ২৫ লক্ষ জীবন বাঁচানো সম্ভব। উচ্চ রক্তচাপ ও হৃ্দরোগের ঝুঁকিবিষয়ক এক কর্মশালায় বিশেষজ্ঞরা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকির অন্যতম কারণ হিসেবে অতিরিক্ত লবণ খাওয়াকে দায়ী করছেন।
তারা বলেন, অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার কারণে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। প্রতিদিন একজন মানুষের ৫ গ্রাম অর্থাৎ এক চা চামচ লবণ খাওয়া দরকার। তবে দেখা যায় লবণ গ্রহণের মাত্রা কয়েকগুণ বেশি। শুধু ভাত-তরকারিতে নয়, না জেনে বাইরের খাবার থেকেও শরীরে ঢুকছে মাত্রাতিরিক্ত লবণ। যে কারণে বাড়ছে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে বিশ্বজুড়ে মানুষের লবণ খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে গিয়েছে। বিশেষ করে প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার ঝোঁক বেড়েছে। লবণের বিশেষ বৈশিষ্ট্য শরীরে পানি ধরে রাখা। লবণের পরিমাণ বেড়ে গেলে শরীরে অতিরিক্ত পানি জমে যায়, এতে ব্রেন স্ট্রোকের ভয় থেকে যায়।
আমাদের মূত্রের মাধ্যমে বাড়তি লবণ শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। তবে কিডনির কোনো সমস্যা থাকলে সেই বাড়তি লবণ শরীর থেকে বেরোতে না পেরে মারাত্মক বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অতিরিক্ত লবণে ক্ষয়ে যেতে থাকে হাড়ের ক্যালসিয়াম। অস্থিসন্ধি ও হাড়ের নানাবিধ অসুখে প্রত্যক্ষভাবে লবণের ভূমিকা আছে।