সুস্থতার জন্য প্রতিদিন বাদাম খেতে পারেন। বাদামের নাম শুনলে সবার আগে মনে পড়ে চীনা বাদামের কথা। রাস্তার ধারে খোলা দোকানে অহরহ কিনতে পাওয়া যায় এই বাদাম। সময় কাটাতে, ছোটখাটো ক্ষুধা মেটাতে কিংবা বন্ধুদের আড্ডায় চায়ের পরে সবচেয়ে বেশি থাকে এই খাবার। এটি সহজে পাওয়া যায় বলেই হয়তো, আলাদা করে এর উপকারিতা নিয়ে আমরা ভাবি না।
একমুঠো বাদাম খেয়ে নিলেন শুধু এই ধারণা নিয়ে যে বাদাম অনেক উপকারী খাবার। কিন্তু আপনি জানলে অবাক হবেন যে, প্রতিটি বাদামের রয়েছে কত-শত নিজস্ব গুণাবলি। চীনাবাদাম, আখরোট, পেস্তা বাদাম, কাঠ বাদাম এবং কাজু বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খাদ্যশক্তি। সঙ্গে প্রতিটি বাদামেই রয়েছে ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিনের মতো আরও অনেক পুষ্টি যা বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে।
জেনে নিন কোন বাদামে কী কী গুণাগুণ রয়েছে–
চীনাবাদাম :
একমুঠো চীনাবাদামে রয়েছে ১৭৬ ক্যালোরি। এছাড়াও চীনাবাদাম ভিটামিন এ, ডি, বি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং পুষ্টিতে সমৃদ্ধ। এতে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে, যা হৃদ্রোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট স্বাস্থ্য এবং মেজাজ দুটোই ভালো রাখে। হাঁপানির সমস্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে সাহায্য করে এই বাদাম।
কাঠবাদাম :
কাঠবাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই এবং ম্যাগনেসিয়াম। চুল, ত্বক ও নখ ভালো রাখতে এই বাদামের বিকল্প নেই। এটি বিপাকীয় প্রক্রিয়াকে সক্রিয় রাখে এবং রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, কাঠ বাদাম ডায়াবেটিস হওয়ার আগেই ইনসুলিনের মাত্রা ঠিক রাখে। এ ছাড়াও এই বাদাম হার্টের জন্য ক্ষতিকর কিছু কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। কাঠবাদামে ক্যালোরি কম থাকায় এটি ওজন কমাতেও সহায়ক।
পেস্তা বাদাম :
পেস্তা বাদামে অন্যান্য সব বাদামের চেয়ে বেশি পরিমাণে ভিটামিন, অ্যামিনো অ্যাসিড এবং খনিজ রয়েছে। এছাড়াও এতে রয়েছে কপার, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, যা দৃষ্টি সমস্যা এবং হাড়ের সমস্যা নিরাময় করে। পেস্তায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) কমাতে এবং ভালো কোলেস্টেরল (এইচডিএল) বাড়াতে সাহায্য করে। পেস্তা রক্তচাপ উন্নত করার পাশাপাশি ওজন কমাতে সাহায্য করে। এক মুঠো পেস্তা বাদামে ১৫৬ ক্যালোরি পাওয়া যায়।
আখরোট :
আখরোটে রয়েছে ভিটামিন বি, সি এবং ই । ভিটামিন ছাড়াও এতে রয়েছে আয়রন, পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস। আখরোট মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়, হজমে সাহায্য করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ভিটামিনের অভাবজনিত রোগ দূর করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, আখরোট ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং কিছু ধরণের ক্যান্সারও প্রতিরোধ করে। আখরোট ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের পাশাপাশি আলফা-লিনোলিক অ্যাসিড রয়েছে, যা খারাপ কোলেস্টেরল কমায় এবং রক্ত চলাচল ঠিক রাখে।
কাজু বাদাম :
কাজুবাদামে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন এ, আয়রন, জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম এবং পটাশিয়াম রয়েছে। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি দাঁতের এনামেলের ক্ষয় রোধ করে। নিয়মিত কাজু বাদাম খেলে হজমের নানা সমস্যা দূর হয়। এক মুঠো কাজুতে ১৫৫ ক্যালোরি খাদ্যশক্তি থাকে।