রান্নাঘরের কাজে ছেঁকা লাগা বা মাছ ভাজার তেল ছিটকে এসে হাতে, গলায় বা মুখে ফোস্কা পড়া খুব স্বাভাবিক একটা ঘটনা। প্রায়শই আমাদের এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। পুড়ে যাওয়া কিংবা ছেকা লাগার পর অনেকেই হয়তো একটু বরফ ঘষে বা কোনও অ্যান্টিসেপটিক মলম লাগিয়েই নিশ্চিন্ত হন। কিন্তু এটুকুই যথেষ্ট নয়। সামান্য পোড়া থেকেই পরে ইনফেকশন হতে পারে।
পোড়ার ধরণ বুঝে চিকিৎসা
আগে বুঝতে হবে মাইল্ড, মডারেট না সিভিয়র বার্ন। সেই অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করতে হবে। চিকিৎসকরা বলেন যেকোন বার্নকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। ১. ড্রাই বার্ন- এক্ষেত্রে গরম পাত্র অর্থাৎ গরম কড়াই ধরতে গিয়ে ছেঁকা লেগে যায়। ২.স্কাল্ড- এক্ষেত্রে গরম পানি বা রান্না করা খাবার হয়তো শরীরে কোথাও পড়ে গিয়ে পুড়ে গেল। সেক্ষেত্রেও ফোস্কা পড়ে যায়। চামড়ার কতখানি অংশ পুড়েছে সেটা আগে দেখতে হবে। অনেক সময়ে শুধু উপরের চামড়া পুড়ে যায়। কিন্তু স্টোভ বা গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে গিয়ে কেউ পুড়ে গেলে সেই বার্ন মারত্মক। তখন চামড়ার নিচের মাংসল অংশও পুড়ে যায়। তাই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া অত্যাবশ্যক।
কী কী করবেন?
শরীরের কোনো অংশ পুড়ে গেলে তার জ্বালাপোড়া সহ্য করা অনেক কষ্টের। তাই তাৎক্ষণিক জ্বালাপোড়া কমানোর জন্য শিখে নিন কিছু ঘরোয়া উপায়।
ঠাণ্ডা পানি
শরীরের কোনো অংশ পুড়ে গেলে সেখানে খুব ভালো করে ঠাণ্ডা পানি ঢালুন। মনে রাখবেন কখনই বরফ ঘষা যাবে না।
অ্যালোভেরা
পুড়ে যাওয়া স্থানে অ্যালোভেরার জেল লাগান। জ্বালাপোড়া কমে যাবে এবং ঠাণ্ডা অনুভব হবে। অ্যালোভেরার রস ক্ষত শুকাতে অসাধারণ কাজ করে।
দই
ক্ষতের জ্বালাপোড়া কমাতে দই বা কাঁচাদুধ বিশেষভাবে কাজ করে। পুড়ে যাওয়া অংশে ৩০-৪০ মিনিট দই দিয়ে রাখুন। এতে জ্বালাপোড়া কমবে সাথে ফোসকাও পড়বে না।
মধু
জ্বালাপোড়া কমাতে মধু অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। পুড়ে যাওয়া অংশে মধু লাগালে পোড়া দাগ হওয়ার সম্ভাবনাও কমে যাবে।
টুথপেস্ট
টুথপেস্ট শুধু দাঁত মাজার ক্ষেত্রেই ব্যবহার হয় না। পুড়ে যাওয়া স্থানে টুথপেস্ট লাগালে বেশ উপকার পাওয়া যায়।
কলার খোসা
কলার খোসা জ্বালাপোড়া কমাতে খুবই উপকারী। পুড়ে যাওয়া স্থানে কলার খোসা অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে।
এছাড়া পোড়া জায়গায় ঘন-ঘন পানি লাগাবেন না। পানির কাজ করলে ক্ষতের জায়গা ঢেকে নিন। শিশুদের হাতে বা শরীরের কোনও অংশে পুড়ে গেলে আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। পোড়া জায়গায় যাতে ঘষা না লাগে, সে দিকেও খেয়াল রাখুন।
তথ্যসূত্র- আনন্দ বাজার