আর মাত্র দু’দিনের অপেক্ষা। তারপরই মুমিনদের আনন্দের ধারায় বয়ে আসবে মুসলিমদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। এবছরের দ্বিতীয় তথা শেষ ঈদের আমেজে মশগুল চারদিক। কসাই বুকিংয়ে যেমন লম্বা লাইন, তেমন গরুর হাটে উপচে পড়া ভীড়। সাধ্যের মধ্যে ছোট বা বড় গরু, মহিষ, ছাগল, ভ্যাঁড়া কিনে বাড়ি ফিরছে সকলে। তবে বাড়ি নিয়ে ঈদের বাকি যে ক’দিন আছে, এই কিছুদিন কুরবানি দেওয়ার উদ্দেশ্যে কেনা পশু কিভাবে রাখবেন!
শুনলে আশ্চর্যজনক মনে হলেও আসলে অনেকে কুরবানি দেওয়া গরুর যত্ন নেওয়ার ব্যাপারটি সঠিকভাবে জানেন না। অথবা অনেকে জেনেও পশুদের যত্ন নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেন না। আমরা সেই কুরবানির ঈদের সূত্রপাতের গল্পই ভুলে যাই। হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এবং তাঁর পুত্র ইসমাঈল (আঃ) আল্লাহর জন্য ত্যাগ করতে ইচ্ছুক ছিলেন। নিজ সন্তানের পরিবর্তে পশু কুরবানি করার নিয়ম হয়েছে। তাই পশুদের প্রতি সন্তানস্নেহ থাকা প্রয়োজন। জেনে নিই, কুরবানির আগে পশুদের যত্নে ব্যাপারে যেসব জিনিস মনে রাখবেন-
১. কুরবানির ঈদের সময় ঘনিয়ে আসলে প্রাণীদের দুর্ভোগ বেড়ে যেতে দেখা যায়। এর প্রধান কারণ হলো বিশ্বব্যাপী মাংসের অতিরিক্ত চাহিদা। যতটা প্রয়োজন ততটুকু পশু কুরবানি করাই শ্রেয়। সামর্থ্য আছে বলে অতিরিক্ত খরচ করা নিরর্থক। এই ব্যাপারে ধর্মীয় নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। ইসলামের মৌলিক নীতি অনুসরণ করে চললে পশুদের দুর্ভোগ হ্রাস পাবে, আবার মানুষের শারীরিক সমস্যার ঝুঁকিও কমবে।
২. অনেক মুসলমান জবাই করার একটি সাধারণ নিয়ম জানেন না। কখনোই একটি পশুর সামনে অন্য একটি পশুর প্রাণ নেওয়া উচিত নয়। ইসলামে একটি পশুকে অন্য পশুর সামনে জবাই করার অনুমতি নেই, যা ঈদুল আজহার সময়েও প্রযোজ্য। তবে দুঃখজনকভাবে সামান্য সংখ্যক মুসলমানই এই নীতির ক্ষেত্রে সচেতনতা প্রকাশ করেন।
৩. মহানবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন, এক নারী তার কাছে রাখা একটি বিড়ালের প্রতি আচরণের কারণে জাহান্নামে গিয়েছিলেন। বিড়ালটিকে যখন তিনি আটকে রেখেছিলেন, তখন ঠিকমতো খাবার খাওয়াননি। বিড়ালটিকে মুক্ত করে দিলেও সে নিজে শিকার করে খেয়ে বেঁচে থাকতে পারতো। তবে তা হয়নি, কারণ নারীটি বিড়ালটিকে আটকে রেখেছিল। এই গল্পটির পাঠ হলো আপনার কাছে থাকা পোষা প্রাণীর পর্যাপ্ত যত্ন নিন। তা একান্ত সম্ভব না হলে, তাদের মুক্ত করে দিন।
৪. ধর্মীয় মতে নির্দেশনা আছে, পশুর জবাই করার সময় তার কষ্ট যেন কম হয় তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। মজা বা দুষ্টুমি করেও কোনো প্রাণীর প্রতি কঠোর ব্যবহার করা নিষিদ্ধ।
তথ্যসূত্র: হিডেন পার্লস