তলপেটে ব্যথা, পেট ফোলাভাব, হাত-পায়ে ব্যথাভাব, শারীরিক দুর্বলতা, খাবারে অরুচিভাব দেখা দেওয়া সহ দেখা দেয় মুড সুইং এর মতো সমস্যা। একসাথে কয়েক ধরনের শারীরিক ও মানসিক উপসর্গ দেখা দেওয়ার ফলে, এ সময় শুয়ে-বসে থাকতেই বেশি আরামবোধ হয়।
সুস্বাস্থ্যের জন্য ও ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য যারা নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করেন তারাও এ সময়টিতে আলস্যবোধ করেন। জড়তা এসে ভর করে শরীর ও মনে। ফলে পিরিওড চলাকালীন ৫-৭ দিন অনেকেই হাঁটাহাঁটি করা বাদ দিয়ে দেন। এছাড়া অনেকের মাঝেই ভ্রান্ত ধারণা কাজ করে যে, এ সময়ে খুব বেশি হাঁটাহাঁটি অথবা কোন ধরনের শরীরচর্চাই করা যাবে না। অথচ এ সময়ে শারীরিক সমস্যাগুলো কমাতে ও পিরিওডকে সহজ করতে সাহায্য করে রুটিন হাঁটাহাঁটির অভ্যাস।
শুধু হাঁটাহাঁটি নয়, হালকা দৌড়, রাইডিং ও সাঁতরানোর মতো হালকা ঘরানার শরীরচর্চামূলক কার্যক্রম পিরিওডকালীন সময়ে শারীরিক সমস্যাগুলোকে প্রশমিত করতে সাহায্য করে।
যদিও এ সময়ে একেবারেই শরীরচর্চা করতে ইচ্ছা করে না, তবে মনের বিরুদ্ধে গিয়ে হলেও যদি কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করা বা সাইকেল চালানো যায় তবে উপকার পাওয়া যাবে। কয়েক মিনিটের ওয়ার্ম আপেই শরীর ঝরঝরে বোধ হবে এবং তলপেটের ব্যথাভাব কমে যাবে।
এমনকি স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ও গবেষকেরাও পিরিওডকালীন সময়ে নারীদেরকে একদম বসে না থেকে হালকা ঘরানার শারীরিক কার্যক্রম করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে ভারি ঘরানার যেকোন ধরনের শরীরচর্চা এড়িয়ে যেতে পিরিওডকালীন সময়ে।
তবে এক্ষেত্রে একটি বিষয় জানিয়ে রাখা প্রয়োজন। বেশ কিছু গবেষণার তথ্য থেকে দেখা গেছে, মানুষ ভেদে পিরিওডকালীন সময়ে শারীরিক কার্যক্রমের প্রভাবে ভিন্নতা দেখা দেয়। অর্থাৎ একজনের জন্য বিশ মিনিটের হাঁটা যতটুকু ইতিবাচক প্রভাব তৈরি করবে, আরেকজনের জন্যেও যে ততটুকু প্রভাব দেখা দেবে সেটা নিশ্চিত নয়।
স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্য সময়ে শরীরচর্চা করার চাইতে পিরিওডকালীন সময়ে শরীরচর্চার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হয় কিছু বাড়তি বিষয়ে। সেক্ষেত্রে প্রথমেই আসবে পোশাকের বিষয়। শরীরচর্চা বা বাইরে হাঁটাহাঁটির ক্ষেত্রে লাল, বাদামী কিংবা কালোর মতো গাড় রঙগুলো বেছে নেওয়া সবচেয়ে ভালো। এতে করে অনাকাঙ্ক্ষিত অনেক পরিস্থিতি এড়ানো যাবে।
এছাড়া পরিধেয় পোশাক এমন হতে হবে যেন অস্বস্তিবোধ না হয়। আরামদায়ক পোশাকে গুরুত্ব দিতে হবে এবং তেমন তন্তুর পোশাক নির্বাচন করতে হবে।
এছাড়া লিকেজের ভয় থাকলে এমন স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করতে হবে, যা ভারি রক্তপাতে সমস্যা করবে না। হাঁটাহাঁটি বা সাইকেল চালানোর ক্ষেত্রে টেম্পন ব্যবহার না করাই উত্তম।
মোদ্দাকথা, পিরিওড চলাকালীন সময়ে হাঁটাহাঁটি বা হালকা ঘরানার শরীরচর্চাতে কোন না নেই। বরং এতে উপকার রয়েছে।
আরও পড়ুন: কেন দেখা দিচ্ছে ক্লান্তিভাব?