সকল ফ্যাটই শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়। বরং ডায়েটারি ও উপকারী ফ্যাট সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। তবে সেক্ষেত্রে কোন ধরনের ফ্যাট গ্রহণ করা হচ্ছে ও ফ্যাটের পরিমানের দিকে নজর দিতে হবে।
ফ্যাট হলো এক প্রকার ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট, যা মানবশরীরে ক্যালোরি ও শক্তি প্রদান করে। ফ্যাটের প্রাথমিক কার্যকারিতা হলো, আমাদের শরীরে ফ্যাট শক্তি হিসেবে সঞ্চিত থাকে। শরীরচর্চা বা ভারি কাজ করা হলো প্রথমে শরীরে সঞ্চিত কার্বোহাইড্রেট ও পরবর্তিতে ফ্যাট ব্যবহৃত হয়।
প্রাকৃতিক পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার থেকেই উপকারী ও স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় ফ্যাট পাওয়া যাবে। এর মাঝে মাখন, ঘি, অলিভ অয়েল হলো প্রধান উৎস। অন্যান্য উৎসগুলো হলো পনির, ডিম, তৈলাক্ত মাছ, চিয়া সিডস, আনপ্রসেসড বাদাম ও বীজ যেমন- কাঠবাদাম, কাজুবাদাম, আখরোট প্রভৃতি। এছাড়া অ্যাভোকাডো ও নারিকেল তেল থেকেও পাওয়া যাবে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট।
বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণে নিয়মিত স্বাস্থ্যকর ফ্যাট গ্রহণ জরুরি। খাদ্যাভ্যাস থেকে ফ্যাটকে বাদ রাখলে কমতি থেকে যাবে সুস্বাস্থ্যের বেশ কয়েকটি দিকে। ফ্যাট শুধুই শারীরিক শক্তির অন্যতম বড় উৎসই নয়, ফ্যাট শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতেও কাজ করে। এছাড়া প্রয়োজনের সময়ে শরীরে জমে থাকা ফ্যাট থেকেই পাওয়া যায় প্রয়োজনীয় শক্তি। জেনে রাখুন ফ্যাটে আরও কিছু প্রয়োজনীয়তা।
১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির সাথে সাথে শরীরের প্রদাহ থেকে রক্ষা করে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট।
২. হরমোন সঠিক মাত্রায় ও সঠিকভাবে কাজ করার জন্য প্রয়োজন হয় ফ্যাটের। এছাড়া ইনস্যুলিনের মাত্রা ঠিক রেখে রক্তে চিনির মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করে ফ্যাট।
৩. ফ্যাটে থাকা ক্যাপ্রিলিক অ্যাসিড (Caprylic Acid) অনেকটাই অ্যান্টিভাইরাল উপাদানের মতো কাজ করে এবং এতে থাকা লরিক অ্যাসিডে (Lauric Acid) অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রভাব রয়েছে।
৪. ফ্যাটে থাকা বাট্রিক অ্যাসিড (Butyric acid) কিছু ক্ষেত্রে ক্যানসার প্রতিরোধেও কাজ করে।
৫. ঘি অথবা ক্যাস্টর অয়েল কোলনের অন্দরের লুব্রিকেন্ট হিসেবে কাজ করে। এতে করে খাদ্য পরিপাক হওয়া মল নির্গত হওয়ার প্রক্রিয়া সহজতর হয়ে ওঠে।
৬. গর্ভবতী নারীদের জন্য স্বাস্থ্যকর ফ্যাট বিশেষ জরুরি পুষ্টি উপাদান। কারণ গর্ভস্থ সন্তানের মস্তিষ্কের পূর্ণ ও সুস্থ বিকাশে ফ্যাট খুবই জরুরি।
৭. ভালো ফ্যাট মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি, স্মৃতিশক্তি প্রখর করতে ও আনন্দ অনুভব তৈরিতে কাজ করে। ফলে ফ্যাট শুধু শারীরিক সুস্থতায় নয়, মানসিক সুস্থতার ক্ষেত্রেও অবদান রাখে।
আরও পড়ুন: নিরামিষাশী ও ভেগানদের মাঝে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি!
আরও পড়ুন: অদ্ভুত যে কাজগুলো বাড়াবে বুদ্ধিমত্তা