অ্যাপল সাইডার ভিনেগার (এসিভি) সম্ভবত বর্তমান সময়ের সর্বাধিক প্রচলিত ও পরিচিত একটি জিনিস, এটি একইসাথে স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্যচর্চার নানা ক্ষেত্রে সমানভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। শতেক উপকারিতা সমৃদ্ধ এই জিনিসটি স্বাস্থ্য সচেতন সবার কাছেই বহুল সমাদৃত। যেহেতু এর প্রচলন বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক বেশি, সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে তার ভুল ব্যবহার। প্রবল অ্যাসিডিক ধর্ম বিশিষ্ট এসিভির ভুল ব্যবহারে উপকারিতার বদলে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। জেনে রাখুন এসিভি ব্যবহারে কোন ভুলগুলো সচারচর করা হয়ে থাকে।
অ্যাপল সাইডার ভিনেগার পান করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভুল যেটা করা হয় তা হলো পানিতে না মিশিয়ে পান করা। এক চা চামচ পরিমাণ হোক কিংবা তার চেয়ে বেশি, অবশ্যই পানিতে মিশিয়ে তবেই পান করতে হবে। এসিভির প্রবল অ্যাসিডিক ধর্ম দাঁত, খাদ্যনালী ও পাকস্থলীর ক্ষতি করতে পারে। তাই এসিভি পান করার সময় অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণ পানিতে মিশিয়ে তবেই পান করতে হবে।
অনেকেরই এই অভ্যাসটি আছে, প্রতিবেলার খাবার খাওয়ার পরপরই এসিভি পান করেন। এই অভ্যাসটি আদতে কোন উপকারিতাই বহন করে। বরং খাবার গ্রহণের কিছুক্ষণ (৩০-৫০ মিনিট) আগে এসিভি পানে পাকস্থলীস্থ গ্যাস্ট্রিক জ্যুস এসিভির সাথে মিশে খাদ্য দ্রুত ও ভালোভাবে পরিপাক করতে কার্যকর হয়ে ওঠে। এতে করে খাবার খাওয়ার পর পেট ফোলাভাব বা গ্যাসের সমস্যা দেখা দেওয়ার কোন সম্ভাবনা তৈরি হয় না।
এসিভির বোতল খোলা হলেই তার উৎকট গন্ধে ঘর ভরে যায়। তবে এসিভি কাপে ঢালার সময় চেষ্টা করতে হবে যথাসম্ভব সেটা থেকে দূরে থাকার জন্য, তার গন্ধ বা ঝাঁজ যেন নাকে ও চোখে না আসে। এসিভির প্রবল গন্ধ ও ঝাঁজ চোখে ও নাকে জ্বালাপোড়াভাব এনে দেয়।
অ্যাপল সাইডার ভিনেগারের নানাবিধ স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে এবং এ কারণেই নিয়মিত এসিভি পানের পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু তাই বলে একবারে অনেক বেশি পরিমাণে এসিভি পান অবশ্যই কোন উপকারিতা বয়ে আনবে না, বরং এতে বিভিন্ন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়া শুরু হবে। পরিমিত পরিমাণ অর্থাৎ ১-২ চা চামচ পরিমাণ এসিভি এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে দিনে একবার পান করাই যথেষ্ট। অতিরিক্ত এসিভি গ্রহণে পাকস্থলী ও পরিপাকজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ভাবছেন ঘুমাতে যাওয়ার আগে একবারে এসিভি পান করে ঘুমিয়ে পড়বেন? যা খুবই ভুল একটি নিয়ম। ঘুমাতে যাওয়ার আগে এসিভি পান করে শুয়ে পরলে এসিভি খাদ্যনালীতে উঠে আসে এবং এ থেকে বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা দেখা দেয়। ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত দুই ঘন্টা আগে এসিভি পান করতে হবে। এতে করে খাদ্যনালীতে উঠে যাওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকবে না।
সৌন্দর্যচর্চার ক্ষেত্রে, ব্রণ দূর করতে, খুশকির সমস্যা কমাতে এসিভি খুব চমৎকার কাজ করে। তবে এক্ষেত্রে যে ভুলটা অনেকেই করে ফেলেন, এসিবি সরাসরি ত্বকে ব্যবহার করেন। খেয়াল রাখতে হবে এসিভি এক ধরনের অ্যাসিড, যা পাকস্থলীর মতো ত্বকেরও ক্ষতি করতে পারে। ত্বকের ব্যবহারের জন্যেও এসিভি পানি অথবা অন্য কোন উপাদানে ভালোভাবে মিশিয়ে তার অ্যাসিডিক ধর্মকে কমিয় এরপরে ব্যবহার করতে হবে। নতুনা ত্বকে জ্বালাপোড়া, র্যাশভাব দেখা দিতে পারে।
আরও পড়ুন: এখন প্রয়োজন অ্যাপল সাইডার ভিনেগার!
আরও পড়ুন: এসিভি ও আপেল জ্যুসের বুদ্ধিদীপ্ত ব্যবহার