ইদানিং হুট করেই আশেপাশের সবাই খুব অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
ঠাণ্ডা, জ্বর, গলাব্যথা সহ নানান উপসর্গ দেখা দিচ্ছে এই অসুস্থতায়। মূলত আবহাওয়া বদলের সময় এমন অসুস্থতার প্রকোপ বেশি দেখা দেয়। সাধারণত এর জন্য আমরা দোষারোপ করি ‘ভাইরাল ফ্লু’ কে। তবে সবটুকু দোষ ফ্লুয়ের কাঁধে দিয়ে দিলেই হবে না, এর পেছনে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও অনেকাংশে দায়ী।
ভালোভাবে খেয়াল করলে দেখা যাবে, কিছু কিছু মানুষ আবহাওয়ার বদলে কখনোই অসুস্থ হন না। তাদের কাছে নিশ্চয় কোন জাদু বা মন্ত্র নেই। আসলে তাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্য একশ জনের চাইতে অনেকগুণ বেশি কার্যকর।
বোঝাই যাচ্ছে, এমন বিরক্তিকর অসুস্থতার হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে চাইলে বাড়াতে হবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। জেনে নিন আয়ুর্বেদিকের সুপারিশ মতে খুব সহজ কিছু উপায়, যা একইসাথে শরীরকে ফিট রাখতে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
আরো পড়ুন: অস্বাস্থ্যকর এই ‘অভ্যাস’গুলো অসুস্থ করে তুলছে আপনাকে!
১. আয়ুর্বেদিকের নিয়মানুসারে একদম প্রথম যে নিয়মটি অবশ্যই মেনে চলতে হবে সেটা হলো- কঠোরভাবে স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ। এক্ষেত্রে সপ্তাহে কোন চিট মিল নেই। তবে চেষ্টা করতে হবে কম কার্বোহাইড্রেট ও বেশি প্রোটিনযুক্ত খাবার গ্রহণের। আরো একটি জরুর বিষয় হলো, প্রতিবেলার খাবার খেতে হবে একদম গরম, ঠাণ্ডা খাবার একেবারেই খাওয়া যাবে না।
২. ঠাণ্ডা যেকোন খাবার পানীয় শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। কারণ এই ধরণের খাবার পরিপাক ক্রিয়ার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই ঠাণ্ডা সকল খাবার পরিহার করা বাধ্যতামূলক।
৩. তেলযুক্ত খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৪. পেশী ও ত্বকের যত্নের জন্য প্রতিদিন স্বল্প পরিমাণে সিসিমি, সানফ্লাওয়ার অথবা অলিভ অয়েল ম্যাসাজ করতে হবে। এতে মরা কোষ ভালোমতো দূর হয়ে যায় ও নতুন কোষ সুস্থভাবে গড়ে উঠতে পারে।
আরো পড়ুন: সুস্থ চোখের স্বরলিপি
৫. গোসলের সময় এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। গোসলের পানিতে ল্যাভেন্ডার, রোসম্যারি কিংবা জুনিপার অয়েল মিশিয়ে নিতে হবে। পানি কুসুম গরম হলে ভালো, না হলেও সমস্যা নেই। এসেনশিয়াল অয়েলের সাহায্যে গোসল করলে মন তাৎক্ষণিকভাবে ভালো হয়ে যায়।
৬. অতিরিক্ত মশলা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর হলেও রান্নায় পরিমিত পরিমাণে কিছু মশলার ব্যবহার স্বাস্থ্যের জন্যে উপকারি। বিশেষ করে কাঁচা হলুদ গুঁড়া, দারুচিনি গুঁড়া, ধনিয়া গুঁড়া, জিরা গুঁড়া খাদ্যের পুষ্টিগুণ বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে।
৭. উপরোক্ত নিয়মগুলো কোন কাজেই আসবে না যদি প্রতিদিন ৬-৮ ঘন্টার ঘুম না হয়। কম ঘুম ও বেশি ঘুম উভয় বদঅভ্যাসই বাদ দিতে হবে।
৮. প্রতিদিন নিয়ম মাফিক কিছু শরীরচর্চা করতে হবে। হোক সেটা মেডিটেশন, ইয়োগা, ফ্রি-হ্যান্ড এক্সারসাইজ, দৌড়ানো কিংবা দড়িলাফ। এর ফলে রক্ত চলাচল ত্বরান্বিত হয় এবং শরীরের অঙ্গ-প্রত্যাঙ্গ সুস্থ থাকে।
সকল নিয়মনীতিই কিন্তু খাদ্য ও শরীর বিষয়ক ছিল। মনে রাখতে হবে, মানসিক সুস্থতাও এখানে অনেকখানি ভূমিকা রাখে। যেকোন ধরণের নেতিবাচক চিন্তা ও দুশ্চিন্তা থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকার চেষ্টা করতে হবে।