খুব স্বাভাবিকভাবেই সেই পানি ফেলেও দেয়া হয়। অথচ ঝড়িয়ে ফেলা এই পানিটুকুই রেখে দেওয়া প্রয়োজন খাবারের স্বাদ বর্ধনের স্বার্থেই।
নিতান্ত অবহেলায় ফেলে দেওয়া এই পানিই রন্ধনশিল্পে দারুণ সমাদৃত। ক্ষেত্র বিশেষে এই জিনিসকে রান্নায় ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ মূলধনও বলা হয়ে থাকে। বড় ও নামী রন্ধনশিল্পীদের কাছে এই পানি ‘লিকুইড গোল্ড’ নামে পরিচিত।
পাস্তা তৈরি করা হয় খুব ভালো মানের ময়দা থেকে। তাইতো রান্নার জন্য গরম পানিতে সিদ্ধ করা হলে সেটা থেকে শর্করা নিঃসৃত হয়। যে কারণে পাস্তা ভালোভাবে সিদ্ধ হবার পর বাড়তি পানি ঘোলাটে বর্ণ ধারণ করে।
অনেকেই এই ঘোলাটে পানিকে পাস্তার ময়লা হিসেবে ভেবে থাকেন। যা কিনা একেবারেই ভুল ধারণা। পানির সাথে শর্করা ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান মিশ্রিত হয়েই এমন ঘোলাটে বর্ণ ধারণ করে। যাকে বলা হয়ে থাকে লিকুইড গোল্ড।
আরো পড়ুন: ইটালিয়ান স্বাদে শ্রিম্প আলফ্রেডো পাস্তা
পাস্তা তৈরিতে প্রধান ও মূল উপাদান হলো পাস্তার সস। সস যত বেশী স্বাদু ও পারফেক্ট হবে, পাস্তা তত বেশি মুখরোচক হবে। পাস্তার সস তৈরিতে সাধারণত পানি ও দুধ ব্যবহার করা হয়। সাথে মাখন ও রান্নার তেলও থাকে।
পাস্তার সস তৈরিতে সাধারণ পানির বদলে পাস্তা সিদ্ধর পানি যদি ব্যবহার করা হয় তবে অন্যান্য সকল উপাদানের সাথে খুব সহজেই মিশ্রিত হয়ে যায়। পাশাপাশি স্বাদও বেড়ে যায় বহুগুণ। প্রতিটি ভিন্ন ভিন্ন পাস্তার ভিন্ন ফ্লেভার থাকে। পাস্তা সিদ্ধর পানি ব্যবহার করে সস তৈরি করলে পাস্তার প্রকৃত ফ্লেভার পাওয়া যায়।
একইসাথে পাস্তার খাদ্য গুণাবলীও পাস্তা সিদ্ধর পানিতে মিশ্রিত হয়ে যায়। যা পুনরায় ব্যবহারে ফিরে পাওয়া সম্ভব হয়।
আরো পড়ুন: কেন চিপসের প্যাকেট অর্ধেক খালি থাকে?
বিখ্যাত একজন রন্ধনশিল্পী পাস্তা সিদ্ধর পানি পাস্তার সস তৈরিতে ব্যবহারের ক্ষেত্রে সন্দিহান ছিলেন। তার বিশ্বাস ছিল সাধারণ পানি ও সিদ্ধ পানি ব্যবহারের মাঝে কোন তফাৎ নেই। পরীক্ষামূলক ভাবে তিনি দুইটি আলাদা পাত্রে সাধারণ পানি ও পাস্তা সিদ্ধর পানি দিয়ে পাস্তার সস তৈরি করে পাস্তা রান্না করেন। আন্দাজ করুন তো ফলাফল কী হয়েছিল! পাস্তা সিদ্ধর পানিতে তৈরি পাস্তার সস স্বাদের দিক থেকে অনেক বেশি মুখরোচক সেটা মানতে বাধ্য হন তিনি।
তাইতো এরপর থেকে যখনই পাস্তা তৈরির প্রস্তুতি নিবেন, অবশ্যই খেয়াল রাখবেন পাস্তা সিদ্ধর পানি যেন ফেলে না দেওয়া হয়।