কাল বাদে পরশু থেকেই শুরু হতে যাচ্ছে পবিত্র রমজান। এবারের রমজানের সময়টি শুধু আবহাওয়াগত কারণেই কঠিন হবে না, সেই সাথে থাকছে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিও। রোজার প্রথম দিন থেকে নিজেকে সুস্থ ও কাজ করার মত সবল রাখতে চাইলে সেহরির খাবারে সঠিক খাদ্য নির্বাচনে জোর দিতে হবে সবার আগে। সারাদিনের পুষ্টি, শক্তি ও আর্দ্রতার মূল যোগান যেহেতু সেহরির খাবার থেকেই পাওয়া হয়, তাই এ সময়ে কোন খাবারগুলো গ্রহণ জরুরি সেটাই জানানো হয়েছে আজকের ফিচারে।
প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্য উপাদান হল ডিম। প্রোটিন ছাড়াও এতে রয়েছে ভিটামিন ও অন্যান্য পুষ্টিগুণ, যা সারাদিনের শারীরিক শক্তির যোগান তৈরি করে। এ কারণে প্রতিদিন সকালের নাশতায় ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। রমজানে সকালের নাশতার পরিবর্তে সেহরির সময়ে ডিম খেয়ে নিলে রোজা রাখার ফলে দুর্বলতা দেখা দেবে না।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের সবচেয়ে বড় উপকারিতাটি হল, তা শরীরকে সবল রাখতে ও দিনভর শক্তির যোগান দিতে কাজ করে। সেদিক থেকে ওটস খুব ভালো একটি খাবার। এটা থেকে একইসাথে স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিন পাওয়া যাবে। দুধ ও কলার সাথে ওটসের স্মুদি তৈরি করে খাওয়া যায় কিংবা দুধ, কলা ও অন্যান্য ফল এবং বাদামের সাথে মিশিয়েও খাওয়া যায়।
তৈলাক্ত মাছকে বলা হয় জীবনীশক্তি প্রদানকারী খাবার। তবে তেলে ভাজা মাছ থেকে খুব একটা পুষ্টি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না বিধায় পরামর্শ দেওয়া হয় মাছ রান্নার আগে তেলে না ভাজার জন্য। এছাড়া তেলে ভাজা যেকোন খাবার পিপাসা বৃদ্ধি করে। অন্যদিকে স্বাস্থ্যকর প্রোটিনের জন্য মুরগির মাংস তুলনাহীন। পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিনসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণের জন্য সেহরিতে অল্প পরিমাণে মুরগির মাংস খেতে পারলে খুবই ভালো হয়। বিশেষত সবজির সাথে মুরগির মাংসের মিশেলে তৈরি তরকারি তৈরি করতে পারলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যাবে।
প্রাকৃতিক এই দুই ঘরানার খাদ্য উপকরণে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ও প্রয়োজনীয় পুষ্টির পাশাপাশি থাকে জলীয় অংশ। যা অনেকাংশের শরীরের পানির চাহিদা পূরণ করে। কমলালেবু, আঙ্গুর, আনারসহ আম, জাম, তরমুজসহ অন্যান্য মৌসুমি ফল থেকে প্রচুর পরিমাণ পানি পাওয়া যাবে। অন্যদিকে শাক, শসা, টমেটো, লেটুসসহ সহজলভ্য সকল সবজিতেই রয়েছে জলীয় অংশ। যা শরীরকে শুষ্ক হয়ে যাওয়া থেকে নিরাপদ রাখতে কাজ করবে। ফলে দিনভর কাজ করার শক্তি পাওয়া যাবে।
অল্প পরিমাণে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি ও শক্তি পেতে চাইলে বাদামের বিকল্প নেই। বিশেষত বাদামের সাথে দুধের মিশ্রণে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া সম্ভব হবে, যদি দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্য গ্রহণে সমস্যা না থাকে। বিভিন্ন ধরনের মিশ্র বাদাম থেকে পাওয়া যাবে ফ্যাট, প্রোটিন, কার্বহাইড্রেট, আঁশ, ভিটামিন-ই ও ম্যাগনেসিয়াম।