চুল সহজে লম্বা হতেই চায় না- এমন অভিযোগ অহরহ পাওয়া যাবে। বিশেষত যারা চুল লম্বা রাখতে ভালোবাসেন তাদের জন্য চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধিটাও স্লথ হয়ে যায়। তবে আক্ষরিক অর্থেই অনেকের চুল বাড়ে খুব ধীর গতিতে এবং দীর্ঘদিনেও চুল বাড়তে চায় না। এমনটা হওয়ার পেছনে থাকে খুব পরিচিত কিছু কারণ। সেগুলো সম্পর্কে অবগত হয়ে কিছু নিয়ম মানতে পারলে সহজেই চুল বৃদ্ধি পাবে ভালোভাবে।
চুলের সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রথমেই খাদ্যাভ্যাসের দিকে নজর দিতে হবে। শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে যেমন ভালো ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা দরকার, ঠিক তেমনভাবে চুলের সুস্বাস্থ্যের জন্যেও ভালো খাবারের প্রয়োজন। নিজের জন্য পুষ্টি বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে সঠিক ডায়েট নির্ধারণ করে নিতে হবে। যে সকল খাবার থেকে চুল সঠিক পুষ্টি পাবে এবং সঠিক বৃদ্ধি পাবে তার উপরে জোর দিতে হবে। এছাড়া সবুজ শাকসবজি, মৌসুমী ফল, বাদাম নিজের রোজকার ডায়েটে রাখার দিকে নজর দিতে হবে।
নিয়মিত সঠিকভাবে চুল আঁচড়ালে এবং ম্যাসেজ করলে চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। এতে করে চুল পড়ার হার কমার সঙ্গে চুলের বৃদ্ধিও ত্বরান্বিত হয়। সপ্তাহে এক বা দুদিন ভালো নারিকেল তেল এবং বাদাম তেল দিয়ে নিজের হাতে চুলের গোঁড়ায় ম্যাসেজ করলেও অনেক উপকার পাওয়া যাবে। একই সাথে চুল আঁচড়ানোর ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে, যে চিরুনি দিয়ে আঁচড়ান হচ্ছে তা যেন পরিষ্কার এবং মোটা দাঁতের হয়। কেননা সরু দাঁতের চিরুনি ব্যবহারে চুলের গোড়া ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
চুল লম্বা কিংবা খাটো যেভাবেই রাখতে ইচ্ছা করুক না কেন, নিয়মিত চুল ট্রিম করা তথা চুলের আগা ছাটার দিকে অবশ্যই নজর দিতে হবে। চুলের আগা ফেটে যাওয়ার সমস্যা থেকে চুল রুক্ষ হয়ে যায় এবং এর ফলে চুলের বৃদ্ধি কমে যায়। এ কারণে নিয়মিত নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে চুল ট্রিম করতে হবে। এতে করে চুলের দৈর্ঘ্যের খুব একটা পরিবর্তন হবে না, তবে চুল খুব স্বাস্থ্যবান থাকবে।
অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা যেমন আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, একইভাবে চুলের জন্যেও। বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা মতে, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তায় রক্ত সঞ্চালনের ব্যাঘাত ঘটে। যার প্রভাব চুলের গোড়ার ফলিকলেও এসে পড়ে। ফলে ফলিকল শুকিয়ে যায় তার জন্য প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত রক্তের অভাবে। এতে করে চুল পড়া শুরু হয় এবং চুলের বৃদ্ধিতে ব্যাঘাত ঘটে। তাই চেষ্টা করতে হবে যথাসম্ভব নিজেকে নিশ্চিন্ত রাখার জন্য।
চুলের সার্বিক যত্নে ঘরে প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি হেয়ার প্যাক সবচেয়ে ভালো কাজ করে। চুলে অতিরিক্ত খুশকির সমস্যায় ব্যবহার করতে হবে দই ও লেবুর প্যাক। রুক্ষ চুলে ব্যবহার করতে হবে কলা ও মধুর হেয়ার প্যাক। এছাড়া চা পাতার নির্যাস চুলের জন্যে খুব ভালো। চাইলে লিকার চায়ের নির্যাস দিয়ে প্যাক বানিয়ে মাথায় ব্যবহার করলেও উপকার পাওয়া যাবে। হেয়ার প্যাক ব্যবহারে চুল সুস্থ থাকলে নিজ থেকেই খুব ভালভাবে বৃদ্ধি পাবে।