লভ্যাংশের কাছে নিরাপত্তা গৌণ!

, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-28 00:06:03

নিরাপত্তার হুমকির কারণে সংসদ চত্বরের ভেতরের ফিলিং স্টেশন বন্ধ করা হয় ২০১০ সালে। কিন্তু দীর্ঘ দশ বছর বন্ধ থাকার পর আগের জায়গাতে একইভাবে সেই ফিলিং স্টেশনটি চালু করা হয়েছে। যেন লভ্যাংশের কাছে নিরাপত্তা গৌণ!

মাসিক ১০ লাখ টাকা ভাড়ায় ফিলিং স্টেশন চালু করার অনুমতি পেয়েছে তালুকদার নামে এক ব্যক্তি। গত ১৬ সেপ্টেম্বর ফিলিং স্টেশনটি চালু করা হয়। আসাদ গেটের বিপরীতে সংসদের ১ নম্বর গেইটের পাশে ফিলিং স্টেশনটি স্থাপন করা হয়।

ফিলিং স্টেশন থেকে প্রফিট শেয়ারিং করা হবে। যে টাকা আসবে দুই ভাগে বিভক্ত করে এক অংশ যাবে ‘পার্লামেন্ট মেম্বারস ক্লাবে’ আরেক অংশ পাবে ‘পিডব্লিউডি স্পোর্টস ক্লাব’।

রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার (কেপিআইভুক্ত) নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে নবম জাতীয় সংসদের ‘সংসদ কমিটি’ আসাদগেট এলাকার তালুকদার ফিলিং স্টেশন বন্ধ করে দেয়ার সুপারিশ করেছিল। তখন ওই কমিটির সভাপতি ছিলেন তৎকালীন প্রধান হুইপ আব্দুস শহীদ। এরই প্রেক্ষিতে নিরাপত্তার হুমকিস্বরূপ ফিলিং স্টেশনকে বন্ধ করার ব্যবস্থা নিতে সংসদ সচিবালয় থেকে গণপূর্ত অধিদপ্তরকে চিঠি দেয়া হয়।

২০০৯ সালের ৪ অগাস্ট এক মাসের মধ্যে সরিয়ে নিতে নোটিশ দেয় গণপূর্ত অধিদপ্তর। ওই বছরের ১৭ অগাস্ট ফিলিং স্টেশনের মালিক আমেনা বেগম নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। ২০১০ সালের ২২ জুলাই হাইকোর্ট ডিভিশনের একটি দ্বৈত বেঞ্চ ফিলিং স্টেশন বন্ধে সরকারের নোটিশ বৈধ বলে রায় দেয়।

একই সঙ্গে আদালত আমেনা বেগমের রিট খারিজ করে দেয়। এর দুদিন পর ২৪ জুলাই ফিলিং স্টেশনটি বন্ধ করে দেয় গণপূর্ত অধিদপ্তর। তখন থেকে এটি বন্ধ অবস্থায় ছিল।

এরপর একাদশ জাতীয় সংসদের পার্লামেন্ট মেম্বারস ক্লাব এ ফিলিং স্টেশনটি ‘প্রফিট শেয়ারিং’ এর মাধ্যমে নতুন করে চালুর চিন্তা করে। পরে সংসদ কমিটি গত বছরের ৪ অক্টোবর এ ফিলিং স্টেশন চালুর সুপারিশ করে। তালুকদার ফিলিং স্টেশন যখন চালু ছিল, তখন জমির মালিক গণপূর্ত বিভাগ এবং পার্লামেন্ট মেম্বারস ক্লাবের ভাড়ার একটি অংশ পেত।

এ বিষয়ে সংসদের গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোয়াজ্জেম হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘তখন সংসদের নির্দেশে ফিলিং স্টেশনটি বন্ধ করা হয়েছিল, আবার এখন সংসদের নির্দেশেই তা চালু করা হয়েছে। কী কারণে বন্ধ হয়েছিল, আর কী কারণে চালু হলো এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’

বন্ধ করার সময়ে সংসদের প্রধান হুইপ ছিলেন আব্দুস শহীদ। তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমরা তো সিদ্ধান্ত দেবার মালিক না। তখন নিরাপত্তাজনিত কারণে সংসদ কমিটির সিদ্ধান্ত স্পিকারকে অবহিত করা হয়েছিল। বন্ধ করা না করা স্পিকার সিদ্ধান্ত দেবেন। আর দশ বছর আগে কী কারণে সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছিল সেটি তো এখন বলতে পারব না। এখন কী কারণে খোলা হয়েছে সেটা বর্তমান প্রধান হুইপ সাহেব বলতে পারবেন।’

এ বিষয়ে প্রধান হুইপ নূর ই আলম চৌধুরী ও বর্তমান সংসদ কমিটির সদস্য সাবেক প্রধান হুইপ আ স ম ফিরোজ এবং বর্তমান হুইপ ইকবালুর রহিমের সঙ্গে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর