করোনার থাবায় থমথমে পৃথিবী আবার আচ্ছন্ন হচ্ছে নৈঃশব্দ্যে। দেশে দেশে দেখা যাচ্ছে জনমানবরহিত শূন্যতার ছবি। ২০২০ সালের শীতার্ত ঋতুটি করোনার আবহে ঢেকে যাচ্ছে অতলান্ত তুষার-শীতল অনুভূতির গভীরতম অন্তস্থলে।
শীর্ষ আক্রান্ত দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোথাও কোথাও কারফিউ জারি হয়েছে। কানাডায় শুরু হয়েছে ২৮ দিনের লকডাউন। ইউরোপের দেশে দেশে পালিত হচ্ছে কঠোর স্বাস্থ্য বিধি। আতঙ্ক ছড়াচ্ছে এশিয়াতেও।
উৎপত্তিস্থল চীনের উহানে ডিসেম্বর ২০১৯ সালে করোনার শুরু হলেও বাংলাদেশে ২০২০ সালের ৮ই মার্চ প্রথম তিনজন নোভেল করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হন। তারপর মাঝে কিছুটা কমে বৈশ্বিক মহামারি করোনা আবার ফুঁসছে। বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ছয় কোটি আর মৃত্যের সংখ্যা চৌদ্দ লক্ষ স্পর্শ করতে চলেছে।
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার লক্ষ আর মৃত্যের সংখ্যা সাড়ে ছয় হাজারের কাছাকাছি। বিশ্বে করোনা আক্রান্ত শীর্ষ দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হলেও দ্বিতীয় শীর্ষ আক্রান্ত দেশ বাংলাদেশের পাশের ভারত, যেখানে সারা পৃথিবীর মতোই বাড়ছে করোনার প্রকোপ।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এর উপদেষ্টা ও করোনার জাতীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য ডা. মুশতাক হোসেনের মতে, মানুষের মধ্যে একটু উদ্বেগ বেড়েছে। সংক্রমণের হার এবং মৃত্যুর সংখ্যাটাও বেশি চলতি সপ্তাহে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার প্রথম ঢেউ শেষ না হলে দ্বিতীয় ঢেউ যে হবে না, বিষয়টি তা নয়। দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হতে গেলে সর্বনিম্ন যে হার ছিল তার চেয়ে দেড়গুণ বেশি হতে হবে দুই সপ্তাহ শেষে। ইতিমধ্যে প্রথম সপ্তাহ চলে গেছে। দ্বিতীয় সপ্তাহেও যদি বাড়তে থাকে এবং তৃতীয় সপ্তাহে দেড়গুণের জায়গায় পৌঁছায় এবং সেটা যদি চার সপ্তাহ টানা থাকে তাহলে সেকেন্ড ওয়েভ শুরু হয়ে গেছে।
সেই বিবেচনায় কোথাও দ্বিতীয় ঢেউ, আবার কোথাও তৃতীয় ঢেউ চলছে। আগেই সতর্কতামূলক বার্তায় বলা হয়েছিল, এবারের শীতকালে করোনার প্রকোপ তীব্রতর হবে। পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধের অপেক্ষাকৃত শীতপ্রধান দেশগুলোতে তীব্র প্রকোপের লক্ষণীয় মাত্রাও দেখা যাচ্ছে, যা শীতের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।