ভারতের পেট্রাপোল স্থলবন্দরের ‘জীবন-জীবিকা বাঁচাও’ কমিটির পাঁচ দফা দাবির মধ্যে দুই দফা দাবি মেনে নেওয়ায় অবশেষে ৪৮ ঘণ্টা পর কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (০২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য। সোমবার (০১ ফেব্রুয়ারি) রাতে সংশিষ্টদের মধ্যে একটি বৈঠকে পরস্পরের মধ্যে সমঝোতা হলে কর্মবিরতি তুলে নেয় ‘জীবন-জীবিকা বাঁচাও’ সংগঠন।
বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, বাণিজ্যিক কাজে ভারতের সীমান্তরক্ষী বিএসএফের হয়রানি বন্ধসহ ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দেয় সংগঠনটি। ফলে এদিন সকাল থেকে বন্ধ হয়ে যায় দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য। প্রবেশের অপেক্ষায় দুই পারের বন্দরে আটকা পড়ে সহস্রাধিক পণ্য বোঝায় ট্রাক। এতে নানানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলেন দুই দেশের ব্যবসায়ীরা। দুর্ভোগে পড়ে পণ্যবহনকারী ট্রাক চালকেরা। কর্মবিরতি ডাক দেওয়া সংগঠনটির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন বন্দর শ্রমিক, ট্রাক চালক ও সাধারণ ব্যবসায়ীরা। তাদের আন্দোলনের সাথে একাত্বতা ঘোষণা করেছিলেন বন্দর ব্যবহারকারী সকল বাণিজ্যিক সংগঠনগুলো। বর্তমানে সমঝোতা আলোচনায় মেনে নেওয়া দাবি ২টি হলো ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে পেট্রাপোল চেকপোস্টে হ্যান্ড কুলিরা কাজ করতে পারবে ও পণ্যবাহী ট্রাক বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরে রেখে ট্রাক চালকরা পায়ে হেঁটে এপার-ওপার যাতায়াত করতে পারবেন বলে জানান তিনি।
বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল বলেন, কর্মবিরতি প্রত্যাহারে আজ সকাল থেকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য শুরু হয়েছে। ব্যবসায়ীরা যাতে দ্রুত পণ্য খালাস করতে পারেন তার জন্য সংশিষ্ট সকলকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, দেশের স্থল পথে যে পরিমাণ পণ্য আমদানি-রফতানি হয় যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় তার প্রায় ৭০ শতাংশ শুধু বেনাপোল বন্দর দিয়ে হয়ে থাকে। প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রায় ৪ শ ট্রাক বিভিন্ন ধরনের পণ্য ভারত থেকে আমদানি ও প্রায় ২শ ট্রাক বিভিন্ন ধরনের পণ্য ভারতে রফতানি হয়ে থাকে। আমদানি পণ্যের মধ্যে অধিকাংশ শিল্পকলকারখানার কাঁচামাল ,গার্মেন্টস ও খাদ্যদ্রব। রফতানি পণ্যের মধ্যে বেশির ভাগ পাট ও পাটজাত দ্রব রয়েছে। আমদানি পণ্য থেকে প্রতি বছর সরকারের প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আসে। একদিন বাণিজ্য বন্ধ থাকলে তার নানান বিরূপ প্রভাব পড়ে।