জনপ্রতিনিধিদের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার আহ্বান

, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-30 11:20:39

সরকারি হাসপাতালে উন্নত মানের চিকিৎসা হয় নিজের অভিজ্ঞতা থেকে এমন উপলব্ধি করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, আমি বলতে চাই সরকার যে হাসপাতালগুলো করেছে, সেই হাসপাতালগুলোতে জনপ্রতিনিধিরা যেন সেখানে যায়। জনপ্রতিনিধিরা যখন হাসপাতালে যাবেন হাসপাতালে ডাক্তার, নার্স অনেক বেশি খুশি হয়।

রোববার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে ‘ডিএনসিসি কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল’ এর সেবা কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মেয়র এ কথা বলেন। এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক উপস্থিত ছিলেন।

ডিএনসিসির মহাখালীর এই মার্কেট সম্পর্কে মেয়র বলেন, এখানে ১৮৫ বর্গফুট জায়গার মার্কেট ১০ হাজার টাকা করে ফুট বিক্রি করলেও আমাদের ১৮৫ কোটি টাকা ওঠে। আমাদের খরচ হয়েছে ১৭৫ কোটি টাকা। আমরা সেভাবে ম্যানেজ করে ফেলেছিলাম, কিন্তু আমরা মনে করি আমাদের বিভিন্ন জায়গাতে কিন্তু দোকান আছে, বিভিন্ন জায়গায় শপিংমল আছে, কিন্তু এই যে কোভিড মহামারি মোকাবিলা করার জন্য এর থেকে ভালো কোন জায়গা হতে পারে না।

তিনি বলেন, একটি বহুতল মার্কেটকে গত ২০ দিনের অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে একটি অত্যাধুনিক মানের পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালে রূপ দেওয়া, এটি সত্যিই একটি মাইলফলক।

মেয়র বলেন, এই মার্কেটের বরাদ্দপ্রাপ্ত ২৫৮ দোকানের দোকানিরা, ওরা আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। ওরা বলেছে যে আমাদের দোকান বরাদ্দ দিতে হবে, হাসপাতাল না। আজকে আমি বলতে চাই। আপনারা যদি কেউ অসুস্থ হন এই হাসপাতালটিতে আমরা সবার আগে জায়গা দেব। আমাকে অনেক বাকবিতণ্ডা করতে হয়েছে, আমাকে বলেছে আমাদেরকে অ্যালটমেন্ট দিয়েছেন আমাদের দোকান দিতেই হবে। ১১ জন আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। দোকান কিন্তু ঢাকা শহরে অনেক জায়গায় দিতে পারব, কিন্তু হাসপাতালের মত এরকম জায়গা দিতে পারবো না।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য বিভাগের অন্য কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, এই কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে পাশাপাশি আমাদের নার্সিং ট্রেনিং সেন্টার দরকার। নার্সিং কলেজ দরকার আমি অনুরোধ করব এই হাসপাতালের সাথে সাথে কিভাবে নার্সিং কলেজ করে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা যায় সে বিষয়টা ভেবে দেখবেন। এটি একটি বিশ্বমানের নার্সিং কলেজ হতে পারে।

মেয়র বলেন, আমাদের যেন আর কাউকে হারাতে না হয়। এখানে অনেক জায়গা আছে, এখানে ওটি যদি করতে পারি পর্যায়ক্রমে। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের জন্য। যারা করোনাতে আক্রান্ত তাদের কে অন্তত এখানে চিকিৎসা দেওয়া যাবে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সব সময় চান কিভাবে মানুষকে সেবা নিশ্চিত করা যায়। আমার নির্বাচনী ইশতেহারেও ছিল কিভাবে নগরবাসীকে স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারি। তারই প্রমাণ হিসেবে আজকের এই হাসপাতাল।

সরকারি হাসপাতালের সেবা সম্পর্কে বর্ণনা করতে গিয়ে মেয়র বলেন, আমি নিজে করোনা আক্রান্ত হয়ে যখন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ভর্তি হয়েছিলাম। আমি অন্য কোন হাসপাতালে যাই নাই। আমি কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হই এবং ওখানে গিয়ে আমি যে চিকিৎসা পেয়েছি, আমি কোথাও এরকম চিকিৎসা পাই নাই। তাই আমি বলতে চাই সরকার যে হাসপাতালগুলো করেছে সেই হাসপাতালগুলোতে জনপ্রতিনিধিরা যেন যায়। জনপ্রতিনিধিরা যখন হাসপাতালে যাবেন হাসপাতালে ডাক্তার নার্স অনেক বেশি খুশি হয়। আমি যখন কুর্মিটোলায় যাই তখন ওখানকার ডিজি আমাকে বললেন স্যার আপনি কি এখানে আসবেন? আমি বলেছিলাম এখানে অন্য মানুষের চিকিৎসা হলে আমি কেন আসতে পারবো না? আমরা ২১ জন গিয়েছিলাম। প্রত্যেকেই সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছি। তাই আমার বিশ্বাস সরকারি হাসপাতালে যারা আসবেন তারা সমপরিমাণ বা একই চিকিৎসা সেবা পাবেন স্বল্পমূল্যে।

প্রসঙ্গত, সশস্ত্র বাহিনীর তত্তাবধানে পরিচালিত হবে এই হাসপাতাল। ১০০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ১০০ শয্যার আইসিইউ এবং ১১২টি এইচডিইউ শয্যা থাকবে। যা এযাবৎকালে দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ আইসিইউ সার্পোট হাসপাতাল। রোববার (১৮ এপ্রিল) থেকে ৫০টি আইসিইউ বেড ও ৫০টি ইমার্জেন্সি বেড এবং বাকি ১৫০টি সাধারণ বেড নিয়ে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হলো। তবে চলতি মাসের ২৯ তারিখের মধ্যে পুরো ১ হাজার শয্যা চালু করার টার্গেট নিয়ে কাজ চলছে বলে জানান পরিচালক।

এ সম্পর্কিত আরও খবর