করোনার টিকা দেওয়ার কার্যক্রম আরও জোরদার করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই কার্যক্রম যেন উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়েও শুরু করা যায় সে বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে বয়স্ক লোকদের টিকার দেওয়ার ব্যবস্থা করতে বলেছেন তিনি। পাশাপাশি টেস্টের বিষয়ে জোর দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন।
সোমবার (২৬ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এসব কথা জানান। তিনি জানান, এখন ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়েও এই কার্যক্রম শুরু করা হবে।
কারণ বয়স্কদের মধ্যে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেশি বলে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, গ্রামের প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে টিকা নেওয়ার প্রবণতা কম। হাসপাতালে বর্তি করোনা রোগীর মধ্যে ৭৫ শতাংশ গ্রামের বয়স্করা। তাদের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। গ্রামের বয়স্ক লোকেরা টেস্ট করাতে চান না কারণ তারা মনে করে টেস্ট করে যদি সংক্রামিত প্রমাণিত হয় তাহলে তাদেরকে নাকি কিছুটা হলেও গ্রামের লোক এক ঘরে করে রাখে। এ কারণে তারা অনেক সময় লুকিয়ে যায় তাদের তথ্যটা। তথ্য লুকিয়ে যাওয়ার ফলে আরো বেশি সংক্রমিত হয়।
করোনার সম্মুখসারির যোদ্ধাদের পরিবারের ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের করোনা টিকা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, আশা করছি এই কাজটা অতি দ্রুত শুরু করে দেব।
তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী চলমান কঠোর বিধিনিষেধ মানার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেছেন। লকডাউনের বিষয়ে অনেকের অনীহা আছে। কিন্তু অনীহা হলে চলবে না আগে জীবন বাচবে তারপর অর্থনীতি। আপনি বেঁচে থাকে না তার আপনার অর্থনীতি দিয়ে কি করবেন কাজেই অর্থনীতিকে বাঁচাতে হলে জীবন বাঁচাতে হবে। জীবন বাঁচাতে হলে আপনাদের লকডাউন মানতে হবে এবং টিকা নিতে হবে সামাজিক গুরুত্ব মেনে চলতে হবে, মাস্ক সকলকে করতে পরতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আবারও জানান, বিভিন্নভাবে মোট ২১ কোটি করোনার টিকা আসবে। ৩ কোটি অ্যাস্ট্রজেনাকার কাছ থেকে পাব এরইমধ্যে ৭০ লাখ পেয়েগেছি। বাকিটা হয়তো এরমধ্যে পেয়ে যাব। চীনের সিনোর্ফামের সাথে ৩ কোটি সাথে চুক্তি করেছি তার একটা অংশ এরইমধ্যে চলে আসছে। বাকিটা আসছে। ১ কোটি রাশিয়ার সাথে কোভ্যাক্স ফ্যাসালিটি থেকে ভ্যাকসিন পাচ্ছি এরইমধ্যে যেমন মর্ডানা, ফাইজার এগুলো কোভ্যাক্স থেকে সেখান থেকে আসবে ৬ কোটি ৮০ লাখ। ৭ কোটিই ধরেন। আর চুক্তি করেছি জনসন এন্ড জনসন এর সাথে ৭ কোটি যেটা আগামী বছরেরর দ্বিতীয় কোয়ার্টারে পাব মোট ২১ কোটি ভ্যাকসিন। এই ২১ কোটু ভ্যাকসিন দ্বারা ১৪ কোটি লোককে ভ্যাকসিন দিতে পারব। অর্থাৎ ৮০ শতাংশ লোককে ভ্যাকসিন দিতে পারব।
দেশে ৭ ফেব্রুয়ারি গণটিকাদান শুরু হওয়ার পর থেকে ১৩৫ দিন টিকা দেওয়া হয়েছে। চার ধরনের টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ মিলে এ পর্যন্ত মোট ১ কোটি ১৮ লাখের বেশি ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ মানুষ দৈনিক গড়ে ৮৭ হাজার ডোজ টিকা পেয়েছেন। গতকাল সারা দেশে দুই লাখের বেশি মানুষকে প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ৩ হাজার ১৯৪ জনকে।
দেশে এ পর্যন্ত টিকা এসেছে ২ কোটি ১২ লাখ ৪৫ হাজার। এর মধ্যে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ১ কোটি ৫ লাখ ৪৫ হাজার, ফাইজারের ১ লাখ, সিনোফার্মের ৫১ লাখ এবং মডার্নার ৫৫ লাখ।
তারপর তো আর ভবনও নাই যেকানে আমরা যেয়ে একটা হাসপাতাল স্থাপন করব।ডাক্তার নার্সরাও ক্লান্ত হয়ে গেছে তারা আর কত কাজ করবে দেড় বছর যাবৎ করছে তারাও ক্লান্ত হয়ে গেছে আমরা নতুন ৪ হাজার ডাক্তার আবার নিচ্ছি। নার্সও ৪ হাজার নেয়া হচ্ছে এবং খুবই দ্রুত সময়ের মধ্যে নেওয়া হচ্ছে তাদের ইন্টারভিউও বাদ দিয়েছি।
অনুরোধ করেছি ইন্টারভিউ দরকার নাই, পুলিশ ভেরিফিকেশনও হবে না। তারাতারি তাদের কাজে যোগদানের সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে। সেই ব্যবস্থাটাও করেছি।
জনগণকে একটু সচেতন করান বয়স্করা যেন ভ্যাকসিন নেন টেস্ট করান। একং তারা যেন যেখানে সংক্রামিত হচ্ছে সেখানে না যায়। সংক্রামণ না কমলে রোগী কমবে না, রোগী না কমলে মৃত্যু কমবে না এবং হাসপাতালে জায়গা সঙ্কুলান হবে না এটিই বাস্তবতা।