দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। দেশের অনেক এলাকায় ঘরে ঘরে করোনা উপসর্গ দেখা দিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে নারী মৃত্যুও বেড়ে গেছে। আগস্ট মাসের এই পাঁচ দিনে (০১ আগস্ট থেকে ০৫ আগস্ট) করোনা আক্রান্ত হয়ে মোট মারা গেছেন ১ হাজার ২১৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৬৮১ জন। আর নারী ৫৩৬ জন। এই পাঁচ দিনে মোট মৃতের ৫৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ পুরুষ। আর নারী ৪৪ দশমিক ০৪ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো মৃতের তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ০১ আগস্ট পুরুষ মারা গেছেন ১৩৯ জন, নারী ৯২ জন; ০২ আগস্ট পুরুষ ১৩৭ জন, নারী ১০৯ জন; ০৩ আগস্ট পুরুষ ১৪০ জন, নারী ৯৫ জন; ০৪ আগস্ট পুরুষ ১২৫ জন, নারী ১১৬ জন এবং আজ ০৫ আগস্ট পুরুষ ১৪০ জন, নারী ১২৪ জন।
আজ বৃহস্পতিবার (০৫ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে সর্বাধিক ২৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আগের দিন মারা যান ২৪১ জন। সবমিলিয়ে দেশে এ পর্যন্ত ২১ হাজার ৯০২ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনা। একদিনে আরও শনাক্ত হয়েছে ১২ হাজার ৭৪৪ জন। আগের দিন শনাক্ত হয়েছিল ১৩ হাজার ৮১৭ জন জন। এ নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ২২ হাজার ৬৫৪। সরকারি হিসাবে একদিনে সেরে উঠেছেন ১৫ হাজার ৭৮৬ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হলেন ১১ লাখ ৫৬ হাজার ৯৪৩ জন।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান- আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ড. মুশতাক হোসেন গণমাধ্যমকে বলেছেন, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমণের মাত্রা অন্য যে কোনো ধরনের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। সীমান্তবর্তী এলাকার গ্রামগঞ্জে এ ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের সব অঞ্চলের প্রায় প্রত্যেক বাড়িতে কেউ না কেউ জ্বর-কাশি ও ঠান্ডায় আক্রান্ত। গ্রামগঞ্জে নারীদের করোনা উপসর্গ দেখা দিলেও তারা পরীক্ষা করাচ্ছেন না। পরিস্থিতি যখন জটিল হয়ে পড়ে তখন তাড়াহুড়া করে হাসপাতালে যান। কিন্তু শেষ মুহূর্তে হাসপাতালমুখী হওয়ায় তাদের বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে নারী মৃত্যু বেড়ে গেছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭০৭টি পরীক্ষাগারে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ১৩৩টি, জিন এক্সপার্ট ৫৩টি, র্যাপিড অ্যান্টিজেন ৫২১টি। এসব ল্যাবে ৪৬ হাজার ৫২২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয়েছে ৪৬ হাজার ৯৯৫টি। মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৭৯ লাখ ৯৫ হাজার ৬৭৮টি। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫৮ লাখ ৯৩ হাজার ২৬৬টি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ২১ লাখ ২ হাজার ৪১২টি।