জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া সরকারি জমিসহ আশ্রয়ণ প্রকল্পে নির্মিত সরকারি বাসগৃহ পেয়ে হাসি ফুটেছে অসহায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে।
একদিকে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি আশ্রয়ণ প্রকল্পের সুষ্ঠু বাস্তবায়িত হচ্ছে। অন্যদিকে বন্দোবস্তকৃত খাঁস জমির কবুলিয়তসহ সরকারি খরচে নির্মিত সেমিপাকা বাসগৃহ পেয়ে দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় আনন্দ আত্তহারা হয়ে পড়েছে সুবিধাভোগী পরিবারগুলো।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আনোয়ার পারভেজ বলেন, সদর উপজেলার খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের ৬ একর জায়গার উপরে ২২২টি ঘরের প্রথম পর্যায়ে ১শ’ টি ঘরের জন্য বরাদ্দ ছিলো এক লাখ ৭০ হাজার টাকা, ২য় পর্যায়ে নির্মাণ করতে প্রতিটি ঘরের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে আমরা পরিদর্শন করে জায়গা বরাদ্দ থেকে শুরু করে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করা হয়েছে। এখানে রয়েছে খেলার মাঠ, পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনের ব্যবস্থা, পুকুর, ঘাট, মসজিদ, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। পানি সরবরাহ ব্যবস্থাও শুরু হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ পুরোপুরি ভাবে চালু হয়েছে। ইতিমধ্যে ভূমিহীন পরিবার ঘরে উঠে বসবাস করছে। দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় নকশা অনুযায়ী দৈর্ঘ্য সাড়ে ১৯ ফুট, প্রস্থ ২২ ফুটসহ সাড়ে ৮ ফুট উচ্চতা সম্বলিত একটি ঘরে বারান্দা, ৮ ফুট করে দু’টি কক্ষ, একটি রান্না ঘর, একটি গোসল খানা, একটি লেট্রিনের ব্যবস্থা আছে। ঘরগুলো নির্মিত হচ্ছে দেড় ফুট মাটির নিচে ১০ ইঞ্চি ইটের ওপর ৫ইঞ্চি দেয়ালের গাঁথুনি দিয়ে।
তিনি আরো জানান, গত ২০ জুন গুচ্ছগ্রামে প্রথম পর্যায়ে ১০০টি ঘর হস্তান্তর করা হয়, ২২ আগস্ট দ্বিতীয় পর্যায়ে ১২২টি ঘর ভূমিহীনদের মাঝে দলিল হস্তান্তর ও ঘর চাবি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আনোয়ার পারভেজ আরো বলেন, সোমবার সকালে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫০টি ফলের চারা রোপণ করা হয়েছে।
সোমবার (২৩ আগস্ট) সকালে সরেজমিনে গুচ্ছগ্রাম গিয়ে অসহায় ভূমিহীন ও গৃহহীন বসবাসকারীদের সাথে কথা বললে তারা জানান, ঘরের সাথে জমির কাগজপত্রের মালিকানা পেয়ে তারা এখন ভীষণ খুশি। বিনামূল্যে এসব ঘর পেয়ে আনন্দে আপ্লুত সুবিধাভোগীরা। তাদের অনেকেরই কাছে এরকম একটি ঘরের মালিক হওয়া ছিল স্বপ্নের মতো। অবশেষে তাদের এ স্বপ্ন পুরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে নিজেদের স্থায়ী ঠিকানা হওয়ায় খুশি দারিদ্রপীড়িত জনপদের ভূমিহীন ও গৃহহীনরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য প্রাণ খুলে দোয়াও করছেন অনেকে। ঘর পেয়ে এসব পরিবার অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারবে বলে মনে করেন সুবিধাভোগীরা।
আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর পাওয়া মো. শহিদুল ইসলাম, মিনু, আনোয়ার, হামিদ, খোদেজা, নুর জাহান, মনোয়ারা, জামাল উদ্দিন, বলেন, আমরা খুব খুশি যে প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য ঘরের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ঘর দিয়েছেন। এর বিনিময়ে মহান আল্লাহ তার সম্মান আরও বাড়িয়ে দিন। স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারিনি যে, আমারা জমিসহ ইটের একখানা নতুন ঘর পাবো। শেখ হাসিনার সরকার আমাকে ইটের ঘর দিবেন। এই বয়সে ইটের ঘরে থাকতে পারবো। আমি ভীষণ খুশি হয়েছি ঘর পেয়ে। দোয়া করি শেখ মুজিবের বেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য।
নতুন ঘর পাওয়া এসব ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষগুলোর চোখে মুখে এখন অনাবিল স্বপ্ন। তাদের চোখে মুখে এখন খুশির ঝিলিক।
এ বিষয়ে খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. রাশিদুল হাসান রশিদ মোল্লা জানান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকীতে তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রায় প্রতিটি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে সরকারি খরচে মাথা গোজার মতো নুন্যতম একটি করে আশ্রয়স্থল গড়ে দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি করেছিলেন, সেই প্রতিশ্রুতির সুষ্ঠু বাস্তবায়ন করে দিয়েছেন। তার এ উদ্যোগ বিশ্বে বিরল হয়ে থাকবে। উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা সততা ও নিষ্ঠার সাথে প্রকৃত ভূমিহীন পরিবার বাছাই করে তাদের ঘর বরাদ্দের ব্যবস্থা আমরা করেছি। প্রকৃত ভূমিহীন বাছাইয়ের সুবিধার্থে স্থানীয় নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিদের সহযোগীতা, পরামর্শ নিয়েছি আমরা।
এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ বলেন, খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের ২২২টি গৃহহীনদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি বাসগৃহের নির্মাণ শেষে সুষ্ঠুভাবে ঘরের দলিল হস্তান্তর ও চাবি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য চমৎকার পরিবেশে মানসম্মত টেকসই ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। এসব ঘরে আশ্রয় পাওয়াদের অধিকাংশই ভূমিহীন বা কারও আশ্রয়ে বসবাস করতেন। তারা এখন প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর উপহার পওয়ায় তাদের জীবনযাত্রার মান আরো উন্নত হবে। এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন পূরণ হবে।