কৃষি কাজের পাশাপাশি নৌকা দিয়ে নদী পারাপারের কাজ করতেন হাতিবান্ধা ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নের তিস্তার বাম তীর নির্বাসি ইয়াকুব আলি।
তিস্তার বাম তীরে বাঁধ না থাকায় প্রতিবার বর্ষায় পানিতে ভেসে যায় ইয়াকুব আলীর বাড়ি ঘর। এবার সেই ভয় থেকে তিস্তার ডান তীরে বাঁধের ওপারে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নে বাঁধ সড়কের পাশে ১০ শতক জমি কিনে স্বপ্নের বাড়ি বানিয়েছিলেন ইয়াকুব আলি। যেন এবার তিস্তার গ্রাস থেকে রক্ষা পান তিনি।
কিন্তু গত ২০ অক্টোবর হঠাৎ তিস্তার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলে তিস্তার প্রবল স্রোতে ভেঙে যায় জলঢাকা উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের তিস্তার সেই বাঁধ এবং চোখের সামনে ভেঙে যায় ইয়াকুব আলির সেই স্বপ্নের বাড়ি।
ইয়াকুব আলি জানান, বুধবার হঠাৎ তিস্তার বাম তীরের বাড়িতে পানি উঠে। কিছু বোঝার আগে হাঁটু পানি হলে স্ত্রী, তিন ছেলে, দুই মেয়ে এবং গরুগুলো নিয়ে চলে আসি নদী পাড় হয়ে বামের এই তীরে। সারাদিন শেষে বিকেলে ভেঙে যায় এপারের বাঁধ। প্রবল স্রোতে চোখের সামনে বাড়িটা ভেঙে গেল। কিছু করতে পারিনি। বন্যা থেকে বাঁচতে এখানে বাড়ি বানিয়েছিলাম কিন্তু এখানেও আঘাত হানলো। আমার সব কেড়ে নিল। বার্তা২৪.কমকে এসব বলার সময় অঝোরে কাঁদছিলেন ইয়াকুব আলি।
তিস্তার প্রবল স্রোতে দুই তীরের ঘর বাড়ি হারিয়ে এখন নিঃস্ব ইয়াকুব আলি।
শৌলমারী বাঁধ ভেঙে এমনি হাজারো পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। নষ্ট হয়েছে হাজারো পরিবারের বেঁচে থাকার উৎস বোরোধান ক্ষেত।
উল্লেখ্য, গত ২০ অক্টোবর সকাল ৬টা থেকে তিস্তা নদীর ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে। সকাল ১০টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
২১ অক্টোবর সকাল ৮টায় পানি প্রবাহ কমে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বর্তমানে ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে স্বাভাবিক পরিমাপ ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার।