নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারি ফলাফলে জয়ী আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, ‘আমি অবশ্যই আমার কাকা তৈমূর আলম খন্দকারকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করব।’
আইভী বলেন, ‘কাকা অনেক ভোট পেয়েছেন, তাকে অভিনন্দন জানাতে চাচ্ছি। আপনার মেয়ে জিতেছে। মেয়ে তো জিতবেই, বাবারা সব সময় মেয়েদের জিতিয়ে দেয়। তিনি যেহেতু আমার চাচা, তিনিও খুশি হয়েছে যে, চুনকার মেয়ে জিতেছে, উনারই মেয়ে জিতেছে।’
তিনি বলেন, ‘কাকা আগেও আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন। আবার অনেক সময় অনেক সমালোচনা করেছেন, অনেক কথা বলেছেন। তবে আমি উনাকে সব সময় সম্মান করি, শ্রদ্ধা করি।’
রোববার (১৬ জানুয়ারি) রাতে বেসরকারি ফলাফলে জয় নিশ্চিতের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন সেলিনা হায়াৎ আইভী। এসময় তিনি এসব কথা বলেন।
নির্বাচনী প্রচারে তৈমূর আলম খন্দকার যেসব পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন, সেগুলো বিবেচনায় নেওয়ার কথা উল্লেখ করে আইভী বলেন, ‘আমি উনার সঙ্গে কথা বলব, আগেও কথা হতো। তার উন্নয়ন পরিকল্পনার অনেক কিছুই আমার পরিকল্পনার মধ্যেও রয়েছে।’
সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ‘আমি এ শহরেই থাকতে চাই। জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত মানুষের পাশে থাকতে চাই। জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। নারায়ণগঞ্জ মানুষের জন্য, নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য। তারা যেমন আমার বিপদে পাশে দাঁড়িয়েছেন, আমিও তাদের পাশে থাকতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘কোনো ভয় ও শঙ্কা কাজ করেনি। আমার কনফিডেন্স দেখে অনেকে মনে করেছিলেন, আমি ওভার কনফিডেন্স। কনফিডেন্সে না থাকলে নেতাকর্মীরা মন মরা হয়ে যায়। আমি ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি। আব্বাও এ শহরে কাজ করেছেন। আমি জানতাম, তারা আমাকে বিমুখ করবে না। ভোট স্লো হয়েছে, হয়তো আরও ভোট পড়লে ব্যবধানটা আরও বড় হতো।’
তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ দিতে চাই। তারা এত বেশি সক্রিয় ছিলেন, যার ফলে কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আমি আপনাদের কাছে ঋণী। আমার জন্য দোয়া করবেন। যে প্রত্যাশা নিয়ে মানুষ ভোট দিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নৌকা দিয়েছে সেটা যেন পূরণ করতে পারি।’
সিটি করপোরেশনের উন্নয়নে এমপি শামীম ওসমানকে সঙ্গে রাখবেন কি না, এমন প্রশ্নে আইভী বলেন, ‘যে কেউ আমার সাথে উন্নয়নে অংশ নিতে পারেন। সবার কথাই আমি গ্রহণ করব। প্রত্যাশা অনেক বেশি। মানুষ যেই প্রত্যাশা রাখে, সেগুলো পূরণ করব। আর চ্যালেঞ্জ থাকবেই, আগেও মোকাবিলা করেছি, আগামীতেও করব।’
বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী (নৌকা) পেয়েছে ১ লাখ ৬১ হাজার ২৭৩ ভোট। তার নিকট প্রতিদ্বন্দ্বি বিএনপির অব্যাহতিপ্রাপ্ত নেতা তৈমূর আলম খন্দকার (হাতি) পেয়েছেন ৯২ হাজার ১৭১ ভোট।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ভোট পড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। সকাল থেকেই ভোটের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রার্থীরা। কোথাও সহিংসতার কোনো ঘটনা ঘটেনি।