আশ্রয়ণ প্রকল্পের জরাজীর্ণ ঘর, চলে গেছেন অর্ধেক বাসিন্দা 

, জাতীয়

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মংলা (বাগেরহাট) | 2023-09-01 19:24:42

বাগেরহাটের রামপালে সংস্কারের অভাবে একটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের অর্ধেক বাসিন্দা সেখান থেকে চলে গেছেন। আগামী বর্ষা মৌসুমের আগে সংস্কার না করলে যারা এখন সেখানে বসবাস করছেন তাদেরও অন্যত্র চলে যেতে হতে পারে বলে জানিয়েছেন ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পের বর্তমান বাসিন্দারা।

আশ্রয়ণ প্রকল্প ঘুরে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার বাঁশতলী ইউনিয়নের কালিগঞ্জ বাজারের পশ্চিম পাশে সরকারি খাস জমিতে ভূমিহীনদের পুনর্বাসনের জন্য ২০০২ সালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এই আশ্রয়ণ প্রকল্পটি নির্মাণ করেন। এ প্রকল্পে ১০ কক্ষ বিশিষ্ট ৮টি ঘর নির্মাণ করে ৮০টি ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়।

আশ্রয়ণের বাসিন্দারা জানান, নির্মাণের পর এ পর্যন্ত ব্যারাকগুলোতে কোন সংস্কার কাজ করা হয়নি। তারা আরও জানান, ঘরের কক্ষ বুঝিয়ে দেওয়ার সময় মেঝেতে কোন মাটি ছিল না। ছিল না কোন রান্নার ঘর। কক্ষ পাওয়ার পর তারা নিজেদের উদ্যোগে মেঝের মাটি ভরাটের পাশাপাশি রান্না ঘর নির্মাণ করেন।
আশ্রয়ণের ৮টি ব্যারাকের সব কয়টি এখন বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় বসবাস করতে না পেরে ৩৯টি পরিবার আশ্রয়ণ প্রকল্প ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন।

এদের মধ্যে ৭/৮টি পরিবার কুমারখালি নদীর চরে সরকারি খাস জমিতে বসবাস করছেন। আশ্রয়ণের সব কয়টি ব্যারাকের বেশির ভাগ টিনের চাল ফুটো হয়ে গেছে। উপরের দিকে তাকালে আকাশ দেখা যায়। মরিচায় খেয়ে টিনের বেড়া ভেঙে গেছে। দরজা জানালা জোড়া তালি দিয়ে কোন মতে রাত কাটাচ্ছেন তারা। বৃষ্টি হলেই পানিতে সয়লাভ হয়ে যায়। রাতে বৃষ্টি তাদের নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়। বৃষ্টির পানি ঠেকাতে প্রায় সব ঘরের বাসিন্দারাদের টিনের চালে পলিথিন দিয়ে রাখতে হচ্ছে। পায়খানা প্রসাবখানা নোংরা অস্বাস্থ্যকর।

ব্যারাকের অবকাঠামোগত অবস্থা নড়বড়ে হওয়ায় আকাশে মেঘ দেখলে বাসিন্দারা আতঙ্কে থাকেন। ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত পেলে তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যাবার কোন ব্যবস্থা নেই। বেশ কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, সামান্য বাতাস হলেই বেশির ভাগ ঘরের টিন উড়ে যেতে পারে। ঝড়ের খবর পেলে আমরা ভয়ের মধ্যে থাকি।

রামপাল উপজেলার বাশতলী ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল এ আশ্রয়ণের দুরাবস্থার কথা উপজেলা পরিষদের গত মাসিক সমন্বয় সভায় তুলে ধরে আগামী বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে সংস্কারের দাবি জানান।

রামপাল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান বলেন, এই আশ্রয়ণ প্রকল্পটি সংস্কারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই দ্রুত সংস্কারের কাজ শুরু করা হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর