বাঙালি নদী গিলে খাচ্ছে ঘরবাড়ি

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাইবান্ধা | 2023-08-30 10:54:06

গাইবান্ধার গোবিন্দড়ঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে বাঙালি নদী। সম্প্রতি দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। অব্যাহত ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বাপ-দাদার ঘরবাড়ি ও ভিটেমাটি। একই সঙ্গে নদী গিলে খেয়েছে একই পরিবারের দুই বীর মুক্তিযোদ্ধার কবর।

সোমবার (১৬ মে) উপজেলার বাঙালি নদীর কোলঘেষে বামনহাজরা গ্রামে দেখা যায় ভয়াবহ ভাঙনের দৃশ্য। বন্যা না আসতেই হঠাৎ এই ভাঙনে দিশেহারা গ্রামবাসী।

এ সময় গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফ হোসেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম, গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রেজাউর রহমান, মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম প্রধান ভাঙন কবলিত এলাকাটি পরিদর্শন করেন।

মহিমাগঞ্জ রেলস্টেশনের উত্তরে দেওয়ানতলা রেলসেতুর পূর্বপাশের ওই গ্রামে কখনও নদী ভাঙনের আশঙ্কা ছিল না। রেলসেতুটিই ছিল তাদের গ্রাম রক্ষাবাঁধ। কিন্তু কয়েক বছর আগে রেলসেতুর কিছুটা উজানে দেওয়ান তলা সড়ক সেতু নির্মাণ করা হয়। এই সেতুটির কারণে কয়েক বছর ধরে বামনহাজরা গ্রামে নদী ভাঙনের সূত্রপাত হয়। কিন্তু কয়েক বছর ধরে নদীর ওই এলাকায় বালুদস্যুরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। এ বছর বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই বিশালাকৃতির ড্রেজার দিয়ে নদী খননের কারণে নদীর অপর পাড়ের ডান তীরে খননের কাজ শুরু হতেই বিপর্যের শুরু হয় এখানে। গত কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণে নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে বালুর স্তুপ ও ড্রেজার এক ধরনের বাঁধে রূপ নিয়ে উল্টো দিকের এই গ্রামে তীব্র ভাঙনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান জানান, গত বছরের বর্ষা মৌসুমে এ গ্রামের একই পরিবারের ৪ মুক্তিযোদ্ধার ২ জনের কবরই তলিয়ে গেছে বাঙালি নদীর গর্ভে। প্রশাসনের কাছে অনেক আবেদন করেও গ্রামটির ভাঙন প্রতিরোধে কোন সাড়া পাওয়া যায় নি। এ বছর বর্ষা আসার আগেই বামনহাজরা গ্রামের বাসিন্দাদের ৮-১০টি বাড়ি নদীতে তলিয়ে গেছে। কিছুটা স্বচ্ছল পরিবারগুলো অন্যত্র বাড়ি সরিয়ে নিলেও অসচ্ছল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো ভিটেমাটি হারিয়ে একরকম পথে বসেছে।

তিনি আরও বলেন, ভাঙনরোধে বর্ষা মৌসুমের আগেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে গ্রামটির পাশাপাশি দেওয়ানতলা রেলসেতুটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে রেল যোগাযোগ বিঘ্ন হতে পারে।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফ হোসেন বলেন, বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রাথমিক কর্মকাণ্ড শুরু করেছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর