ভোলায় বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে নিহত ১, আহত শতাধিক

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ভোলা | 2023-09-01 01:02:43

ভোলায় বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মারা গেছেন। পুলিশসহ আহত হয়েছে অন্তত শতাধিক নেতাকর্মী। বিদ্যুতের লোডশেডিং ও দ্রব্যমূল্যে উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে রবিবার দুপুরে ভোলা জেলা বিএনপি বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করলে পুলিশ বাঁধা দেয়। এক পর্যায়ে বিএনপি পুলিশ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় পুলিশ ১১জনকে আটক করেছে।

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ভোলা জেলা বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা রবিবার সকাল থেকে বিএনপি কার্যালয়ে এসে ঝড় হয়। বিক্ষোভ সমাবেশ করে বিএনপি যখন বিক্ষোভ মিছিল বের করতে উদ্যত হয় তখন পুলিশ বাধা দেয়। বাধা উপেক্ষা করে বিএনপি মিছিল বের করতে গেলে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। বিএনপি নেতাকর্মীদের দাবি, পুলিশ বিনা কারণে বিএনপির মিছিলে হামলা করে। এতে স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী আবদুর রহীম মারা যায়। আহত হয় বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী। 

এই ঘটনায় ভোলা জেলা বিএনপি তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলন ডাকে। দুপুর ২টায় জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম নবী আলমগীর সংবাদ সম্মেলনে ঘটনা তুলে ধরেন এবং ভোলার আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মধ্যকার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অশান্ত করার জন্য পুলিশকে দায়ী করেন। গোলাম নবী আলমগীর বলেন, তেল গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি ও লোডশেডিং এর প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে আমরা রবিবার সকালে ভোলা জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করি। শান্তিপূর্ণ সমাবেশ শেষে নেতাকর্মীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করতে গেলে বিএনপি অফিসের সামনেই রাস্তার উপর পুলিশ বাঁধা সৃষ্টি করে। পুলিশ বিনা কারণে ভোলা বিএনপির নেতাকর্মীদের হামলা করেছে।

হামলায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম সম্পাদক, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক, জেলা ছাত্রদলের সভাপতিসহ শতাধিক নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়েছে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে উন্নত চিকিতসার জন্য বরিশাল ও ঢাকায় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নিশ্চয়ই এ ধরণের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি চায় না। পুলিশ নিজেরাই পরিস্থিতি ঘোলা করছে। তিনি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন এবং দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি চান।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, ভোলা জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আমিনুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ ট্রুম্যান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির সোপান, সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোঃ হেলাল উদ্দিন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আল আমিনসহ জেলা নেতৃবৃন্দ।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরহাদ সরদার বলেন, সমাবেশ শান্তিপূর্ণই ছিলো। কিন্তু সমাবেশ শেষে মিছিল করতে গিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা বেপরোয়া হয়ে পড়ে। পুলিশের উপর হামলা করে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে বাধ্য হয়ে লাঠিচার্জ, টিয়ারসেল নিক্ষেপ শেষে গুলি চালায়। এতে ১০জন পুলিশ এবং বিএনপির কিছু নেতাকর্মী আহত হয়। একজন মারাও যায়। পরবর্তীতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

বর্তমানে ভোলার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। বিএনপি সভাপতির বাড়ীসহ মহাজনপট্টি ও কালিনাথ বাজার এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

ভোলা সদর হাসপাতালের ইমারজেন্সির ডাক্তার নাফিজা তাসলিম ঐশি বলেন, আমাদের এখানে যেসব রোগী ভর্তি হয়েছে, তাদের অধিকাংশ রোগীই গুলিবিদ্ধ। এদের মধ্যে একজন মারা গেছেন। আরও কয়েকজনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাদেরকে বরিশালে রেফার করা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর