মাঠ জুড়ে শুধু কচুরিপানা, বিপাকে হাজার হাজার কৃষক

, জাতীয়

সোহেল মিয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজবাড়ী | 2023-08-29 16:33:54

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির জামালপুর ও বহরপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠ জুড়ে দখল করে আছে কচুরিপানা। এ সকল কচুরিপানার কারণে চরম বিপাকে পড়েছে হাজার হাজার কৃষক। মাঠের মধ্যে কচুরিপানা থাকায় পরবর্তী ফসলের জন্য মাঠে চাষ করতে পারছে না তারা। অবৈধ ও অপরিকল্পিত ভাবে যেখানে সেখানে বাঁধ দেওয়ার কারণে এসকল কচুরিপানা সরছে না মাঠ থেকে। ফলে চলতি মৌসুমে পেঁয়াজ ও রসুন চাষে চরম হুমকি রয়েছে বলে জানান একাধিক কৃষক।

কৃষি প্রধান জেলা হিসাবে রাজবাড়ীর বেশ সুনাম রয়েছে। রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির বিভিন্ন মাঠে এবারের বন্যায় ভেসে আসা কচুরিপানায় থমকে গেছে কৃষকের স্বপ্ন। কচুরিপানা পরিস্কার করতে হিমশিম খাচ্ছেন কৃষকরা। আসন্ন পেঁয়াজ ও রবিশস্য চাষ নিয়ে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

জানা গেছে, রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির জামালপুর ও বহরপুর ইউনিয়নের প্রায় ১০ গ্রামের মাঠে এবার দীর্ঘদিনের বৃষ্টিতে মাঠে জলাবন্ধতা সৃষ্টি হয়। বর্ষায় বিভিন্নভাবে বিলের মাঠে কচুরিপানা প্রবেশ করে। পানি সরে যাওয়ার সাথে সাথে এসব কচুরিপানা সরে যায়নি এবছর। ফলে কৃষকের জমিতে আটকা পড়েছে এসব কচুরিপানা। প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে এ সকল কচুরিপানা রয়েছে।

শুধু রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতেই নয়। পাংশা, কালুখালী ও গোয়ালন্দ উপজেলার বিভিন্ন মাঠে বিস্তর এলাকা জুড়ে রয়েছে কচুরিপানা। এসব কচুরিপানা পরিস্কার করে জমিগুলো চাষের উপযোগী করতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এ সকল অঞ্চলের হাজার হাজার কৃষক।

সরেজমিনে বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের হাতিমোহনের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের পর মাঠ শুধু কচুরিপানা। মাঠ থেকে পানি সরে গেলেও রয়ে গেছে কচুরিপনা। এসব কচুরিপানার কারণে জমি থেকে পানি শুকাতে সময় লাগছে। বিভিন্ন কৃষকেরা বিভিন্ন ধরনের ঔষুধ স্প্রে করে কচুরিপানা নষ্ট করার চেষ্টা করছেন। অনেক কৃষক জমি থেকে কচুরিপানা একত্রিত করে স্তুপ করে রেখেছেন। তারপরেও চাষাবাদের জন্য মাঠ প্রস্তুত করতে পারছেনা তারা।

বালিয়াকান্দির জামালপুর ইউনিয়নের কৃষক বিপুল বৈরাগী বার্তা২৪.কমকে বলেন, শুধুমাত্র অব্যস্থাপনার কারণে কৃষকদের এই ভোগান্তি। আগে মাঠে কচুরিপানা আসতো। সেগুলো আবার পানি নামার সাথে সাথে চলে যেতে। এখন খাল দখল করে বাঁধ দিয়ে রেখেছে। তাই কচুরিপানা আটকে থাকে।

আরেক কৃষক কামরুল হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমাদের জামালপুর-বহরপুর, বসন্তপুর-মূলঘর ইউনিয়নের কয়েক হাজার একর জমিতে কচুরিপানা আটকে রয়েছে। এসব কচুরিপানা খাল দিয়ে হড়াই নদী দিয়ে চলে যেত। এখন সব জায়গাতেই দখলদাররা বাঁধ দিয়ে রেখেছেন। কচুরিপানা জমিতে আটকে থাকে। কচুরিপানা পরিস্কার করতে এক একর জমিতে ৩ হাজার টাকা খরচ হয়।

রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক এস এম শহিদ নূর আকবর বার্তা২৪.কমকে বলেন, বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে খাল-নদী দিয়ে কচুরিপানা সরে যাওয়ার কথা। বিষয়গুলো নিয়ে উন্নয়ন সমন্নয় সভায় আলোচনা করবো। খাল আর নদীতে বাঁধ অপরাসনের প্রস্তাব করবো।

এ সম্পর্কিত আরও খবর