ডিবি পরিচয়ে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গ্রেফতার ৬

, জাতীয়

md.nazrul | 2023-12-05 09:11:22

রাজধানীর মতিঝিল থানার অফিস পাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ব্যাংক থেকে বড় অংকের টাকা তুলে বের হওয়া গ্রাহককে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতির প্রস্তুতির সময়ে ছয় ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তরা বিভাগ।

ডিবি বলছে, এই ডাকাত দলটি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি করে আসছিলো। সম্প্রতি ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় ব্যাংকের গ্রাহকের টাকা ডাকাতির ঘটনায় দলটি জড়িত থাকার তথ্য ছিলো। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা পুলিশের উত্তরা বিভাগ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত রোববার (৩ ডিসেম্বর) অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- চাকরিচ্যুত সেনাসদস্য মো. জাহাঙ্গীর আলম (২৭), মো. শরিফুল ইসলাম (৪০), মো. আরিফ (৩৪), মো. আলাউদ্দিন (৪৩), আরিফুল ইসলাম আরিফ (৩৬) ও মো. জসিম (৪৩)। অভিযান টের পেয়ে জাকির হোসেন ওরফে বাবু (৪৩) নামের এক ডাকাত সদস্য পালিয়ে যায়।

এ সময় তাদের কাছ থেকে দুইটি গোয়েন্দা পুলিশের পোশাক (ডিবির জ্যাকেট), এক জোড়া হাত কড়া, একটি সিলভার রংয়ের হায়েস গাড়ি, একটি কালো রংয়ের খেলনা ওয়াকিটকিসহ ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব তথ্য জানান।

অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, ডিবি উত্তরা বিভাগের বিমানবন্দর জোনাল টিমের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিলো একটি ডাকাত দল গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে বের হওয়া এক গ্রাহককে তুলে নিয়ে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ডাকাত দলের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার ডাকাত সদস্যরা গোয়েন্দা পুলিশকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের মতিঝিল শাখা থেকে এক গ্রাহক বড় অংকের টাকা তুলে বের হবেন এমন তথ্যে তারা অপেক্ষা করছেন।

ডিবি প্রধান বলেন, এই চক্রটি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বড় লেনদেন করা ব্যাংকের গ্রহকদের টার্গেট করে। পাশপাশি ব্যাংকের ভেতরে তাদের সোর্স থাকে। তারাও লেনদেনের তথ্য দেয়। তখন তারা ব্যাংক ও মানি এক্সচেঞ্জের সামনে ওঁত পেতে থাকে। একইভাবে তারা শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের সামনে ওঁত পেয়ে ছিলো। এই টাকা তোলার তথ্য তাদের কাছে আগে থেকে ছিলো। গাড়িতে ডিবি লেখা, ডিবি লেখা জ্যাকেট পড়িহীত ছিলো। তখন হাতে নাতে ডিবি উত্তর বিভাগ তাদের হাতে নাতে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার ডাকাত দলের প্রত্যেক সদস্যের নামে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

দেশের বিভিন্ন জেলায় ডাকাতি করলেও ধরা ছোঁয়ার বাইরে ছিলো উল্লেখ করে হারুন বলেন, এই ডাকাত দলটি নাটোরের বড়াই গ্রামে মোটা অংকের টাকা ছিনতাই করেছে কিন্তু এই ঘটনায় কোনো মামলা হয় নি। ময়মনসিংহের ভালুকা এলাকায় ১৬ লাখ টাকা ডাকাতির ঘটনায় মামলা হয়েছে। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ ছিলো কিন্তু গ্রেফতার করতে পারে নি পুলিশ। তারা অনেক স্থানে ডাকাতি করেছে যা আমাদের কাছে স্বীকার করেছে।

এক প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান বলেন, অনেক সময় ডিবির পোশাক দেখতে তাদের কেউ চ্যালেঞ্চ করে না। এছাড়া অনেক সময় দেখা যায় ডাকাতির ঘটনা ঘটলে চুরির মামলা হয়। এটা করা যাবে না। ডাকাতির ঘটনা ঘটলে সেই মামলাই করতে হবে। তাহলে কেউ অপরাধ করে পার পাবে না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর